v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-12-02 17:59:42    
চীন আন্তর্জাতিক বেতারের ৬৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী

cri
   ৩ ডিসেম্বর চীন আন্তর্জাতিক বেতারের ৬৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী । ৬৫ বছর আগে উত্তর-পশ্চিম চীনের ইয়েনআন শহরে এক ছোটবেতার কেন্দ্র থেকে সি আর আইয়ের অনুষ্ঠান প্রচার শুরু হয় । ধীরে ধীরে সি আর আইয়ের অনুষ্ঠান আরো বেশি ভাষায় প্রচারিত হয়েছে , পৃথিবীতে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের শ্রোতাবন্ধুর সংখ্যাও ক্রমেই বাড়ছে ।

    গত শতাব্দীর চল্লিশের দশকে চীন জাপানের আক্রমনের শিকার হয়। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বাধীন সশস্ত্র বাহিনী বিশ্ব ফ্যাসিবাদ- বিরোধী যুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তিতে পরিণত হয়। আরো ভালোভাবে চীনের কমিউনিস্টপার্টির জাপ -আক্রমন বিরোধী প্রস্তাব প্রচারের জন্য ১৯৪১ সালের ৩ ডিসেম্বরচীনের কমিউনিষ্ট পার্টি একটি বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে । এই বেতারে বিদেশী ভাষায় অনুষ্ঠান প্রচারের মাধ্যমে দেশবিদেশের পরিস্থিতি প্রচার করা হয় এবং বিশ্বশান্তির জন্য দুঃখদুর্দশায় জর্জরিত চীনা জাতিকে বাঁচানোর আহ্বান জানানো হয় ।

    ১৯৪১ সালের ৩ ডিসেম্বর চীন আন্তর্জাতিক বেতারের জাপানী ভাষার প্রচার শুরু হয় । এই অনুষ্ঠানের শ্রোতা ছিলেন চীনে অবস্থানরত জাপানী সৈনিকরা । অনুষ্ঠানে তাদেরকে যুদ্ধের পরিস্থিতি ও যুদ্ধ বাঁধার কারণ ব্যাখ্যা করা হয় । জাপানী ভাষার অনুষ্ঠানের প্রথম ঘোষিকা হলেন হারা কিয়োশি । তিনি জাপানের একজন যুদ্ধ- বিরোধী যোদ্ধা । তখনকার রেকর্ডিং রুম ছিল ইয়েননান শহরের একটি মাটির গুহায় ।

    সেই সময় প্রতি দিনের অনুষ্ঠান ছিল মাত্র ১৫ মিনিট । সি আর আইয়ের জাপানী বিভাগের প্রবীন কর্মী লু লু ফু বলেছেন , মাটির গুহা থেকে প্রচারিত ঘোষিকা হারি কিইয়োশির আওয়াজ জাপানী বাহিনীকে পরাজিত করার এক হাতিয়ারে পরিণত হয়। লু লু ফু বলেছেন ,ঘোষিকা হারি কিইয়োশি নিজের কণ্ঠে জাপানীদের যুদ্ধের আসল কারণ ব্যাখ্যা করেন । হারি কিউয়োশি একজন জাপানী , তাই তার বক্তব্য জাপানীরা বিশ্বাস করেন । তার অনুষ্ঠান শুনে অনেকের চিন্তাধারার পরিবর্তন হয় । সি আর আইয়ের জাপানী ভাষা বিভাগের বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অনেকে সৈনিক ছিলেন । তাদের মধ্যে কেউ কেউ চীনের কাছে আত্মসমর্পন করে চীনে এসেছেন , কেউ কেউ জাপান থেকে চীনে পালিয়ে এসেছেন । আমার শিক্ষক মিছিয়ুকি ওগি সৈনিক ছিলেন , চীনে আসার পর তিনি আমাদের বিভাগে অনেক বছর কাজ করেছেন ।

    জাপ- আক্রমন বিরোধী যুদ্ধে চীন বিজয় অর্জন করে । তবে চীনা জনগণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে জীবনযাপন করতে পারেন নি । কোমিংটাংয়ের শাসনাধীনে চীনে দুর্নীতি সমস্যা গুরুতর , দ্রব্যমূল্য দ্রুত বাড়ে , জনগণের জীবন হয় কষ্টকর । চীনের কমিউনিষ্ট পার্টির প্রস্তাব দেশের বিভিন্ন মহলের জনসাধারণের সমর্থন পায় । যুক্তরাষ্ট্র প্রথম দিকে চীনের জাপ-আক্রমণ বিরোধী যুদ্ধকে সমর্থন করেছিল , কিন্তু পরে আবার গৃহযুদ্ধ শুরু করতে কোমিংটানকে সমর্থন করেছে ।

    চীনের অবস্থা প্রচারের জন্য চীন আন্তর্জাতিক বেতার ইংরেজ ভাষার অনুষ্ঠান শুরু করে । প্রথম দিকে ইংরেজী ভাষার অনুষ্ঠানও জাপানী ভাষার মতো হোপেই প্রদেশের একটি পাহাড়ী গ্রামের গুহা থেকে প্রচার করা হয়েছিল ।

    ৮২ বছর বয়সী ওয়েই লিন ইংরেজী ভাষার প্রথম ঘোষিকা । তিনি তখন একজন প্রাণচঞ্চল ছাত্রী ছিলেন । তিনি বলেছেন , আমাদের রেকর্ডিং রুমে সাজসরঞ্জাম খুব সাধারণ । গুহার দরজা পর্যন্ত ছিল না। দরজা হিসেবে ছাগলের লোম দিয়ে তৈরী একটি কম্বল গুহার সামনে টাঙানো ছিল । মাঝেমধ্যেদূরের ছাগলের ডাক ও পশুপালকের গর্জন আমার কথার সঙ্গে সম্প্রচার করা হত । তখন আমাদের কোনো টেপ রেকর্ডার ছিল না , গান পরিবেশনের সময় শিল্পীরা রেকর্ডিং রুমে এসে মাইকের সামনে গান করতেন ।

    জাপানী ভাষার ঘোষিকা হারা কিয়োশির তুলনায় ওয়েই লিনের ভাগ্য অনেক ভালো । সম্প্রচার ক্ষমতা বাড়ানোর কল্যাণে দূরদুরান্তের দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ- পূর্ব এশিয়ার শ্রোতারা তার অনুষ্ঠান শুনতে পেতেন । আবহাওয়া যখন ভালো থাকতো , ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায়ও তার কন্ঠস্বর শোনা যেত । সি আর আইয়ের অনুষ্ঠান সম্প্রচারের ক্ষমতা অনেক বেড়ে যায় ।

    ১৯৪৯ সালের ১ অক্টোবর চীন আন্তর্জাতিক বেতারের অনুষ্ঠানে গোটা পৃথিবীর কাছে চীন গণ প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার খবর প্রচার করা হয়। নয়া চীন প্রতিষ্ঠার পর সি আর আইয়ের আরো দ্রুত প্রসার হয় । চীন আন্তর্জাতিক বেতারে ভাষার সংখ্যা ক্রমেই বাড়ে। সি আর আই বিভিন্ন ভাষার অনুষ্ঠান প্রচারের মাধ্যমে চীনের রাজনীতি ,অর্থনীতি ও সমাজের পরিবর্তনের প্রচার করে । নয়া চীনের প্রতি নিজের ভালোবাসা প্রকাশের জন্য অনেক অল্পবয়সী প্রবাসীচীনা দেশে ফিরে আসেন । মিয়ানমার ভাষা বিভাগের প্রবীণ ঘোষক ওয়াং সান চুন তাদের মধ্যে অন্যতম । তিনি বলেছেন ,

    সব সরাসরি সম্প্রচারিত হয়েছিল। আমি একাই ওখানে খবর পড়লাম। আমার মনে আছে একটি খবর পড়ার জন্যে আমাকে মাত্র দশ মিনিট দেয়া হল।যখন কাঁদতে হয় তখন কাঁদতে হবে এবং যখন হাসতে হয় তখণ হাসতে হবে। মাঝখানে থামতে পরলাম না , পুনরায় পড়তে পরলাম না। সুতরাং রেকডিং রুমে প্রবেশ করার আগে আমাদের মনে মনে প্রায় খবরগুলো মুখস্ত হয়ে গেছে

    ঠিক মিস্টার ওয়াং বলার মতো যদিও সে সময় চীন আন্তর্জাতিক বেতারে মানবশক্তির অভাব ছিল এবং প্রযুক্তির অবস্থাও ভাল ছিল না, তবু তখন কর্মচারীরা কাজে আমেজ উপলদ্ধি করতে পারতেন। ৭৬ বছর বয়স্ক সিনিয়া সংবাদদদাতা সি মাও সেন স্মরণ করে বলেছেন, গত শতাব্দীর ৫০ দশকে যখন আমি চীন আন্তর্জাতিক বেতারের কাজে যোগ দিলাম তখন দু তলার একটি কোনে একটি বড় আকারের রেকডিং সেট রাখা ছিল। বিভাগ সারা দিন পালা করে অনুষ্ঠান তৈরী করতে ব্যস্ত। মাঝে মাঝে রাতের বেলায় বিদ্যুত ছিল না। যখন বিদ্যুত বন্ধ ছিল তখন মোমবাতি জ্বালানো হয়। তখন উদ্যানে একটি বিদ্যুত উত্পাদনকারী যন্ত্র ছিল। এই যন্ত্র বিদ্যুত যুগায়। যখন বিদ্যুত বন্ধ হয় এই যন্ত্রের কাজ শুরু হয়।

    কঠোর পরিবেশ অদ্যম প্রাণশক্তি । এটা ছিল গত শতাব্দীর ৫০ আর ৬০ দশকে চীনের বৈদেশিক প্রচারের ব্রতের অবস্থা। ১৯৬৫ সালে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের প্রচার ভাষা, প্রচার সময় বিশ্বের প্রথম সারিতে উন্নীত হয়েছে। কয়েকটি বড় ম্যাকওয়াটসম্পন্ন বেতার-তরংগ সম্প্রচার কেন্দ্র পর পর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সত্তর দশকের মাঝামাঝি সময় চীন আন্তর্জাতিক বেতারের প্রচারিত ভাষা ৪৩টি । এটা হল বিশ্বের সঙ্গে চীনের যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্র আর সেতু হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত শতাব্দীর সত্তর দশকের শেষ দিকে চীনে বৈদেশিক উন্মুক্ততার যাত্রা শুরু হয়। চীন আন্তর্জাতিক বেতার উন্মুক্ততা ও উন্নয়নের পথ অনুসরণ করে এসেছে। তার প্রভাব দিন দিন সম্প্রসারিত হয়েছে। জর্মানীর ' অনুষ্ঠান শোনানো' পত্রিকায় চীন আন্তর্জাতিক বেতারের জর্মান অনুষ্ঠানকে ' চীন থেকে আসা টাটকা বাতাস' বলে গণ্য করা হয়। চীন আন্তর্জাতিক বেতারকে ' জনগণের জনপ্রিয় বেতার' বলে গণ্য করা হয়। উত্তর আমেরিকার বেতার ক্লাব সমিতি চীন আন্তর্জাতিক বেতারকে' বিশ্বের সবচেয়ে বড় বেতার'হিসেবে নির্বাচন করেছে।

    উন্মুক্ততা চালু করা হলে আরও বেশী বন্ধু দরকার। আরও বাস্তব ও সম্পূর্ণভাবে চীন আর বিশ্ব সম্বন্ধে প্রচার করা এবং দু'পক্ষের মধ্যে যোগাযোগের সেতু স্থাপনের জন্যে ১৯৮০ সাল থেকে পর পর বিদেশে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সংবাদ ব্যুর্রো প্রতিষ্ঠিত হয়। ওয়াংজুযো চীন আন্তর্জাতিক বেতারের একজন সিনিয়ার সম্পাদক। এখন তাঁর বয়স সত্তর। তিনি আন্তর্জাতিক বেতারের বিদেশে নিযুক্ত প্রথম সংবাদদাতাদের মধ্যে একজন। সাক্ষাত্কারে তিনি বলেছেন, এ কথা বলা যায় যে, সংবাদ ব্যুর্রো প্রতিষ্ঠার প্রথম দিন থেকে আমরা অবিলম্বেকাজে ঝাঁপিয়ে পড়ি এবং ঘটনাস্থলে যাই। আমরা বিভিন্ন অসুবিধা অতিক্রম করেছি। আমরা অনেক টাটকা খবর সংগ্রহ করেছি। অনেক উদাহরণ থেকে এই সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। আমি জেনিভায় আফগান শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের প্রচারে অংশ নিয়েছি। চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার বিশ মিনিট পর আমাদের অনুষ্ঠান প্রচারিত হল।

    চী্ন আন্তর্জাতিক বেতার থেকে ক্রমানুসারে সংবাদদাতাদের বিদেশে পাঠানো হয়। লিও সু ইয়েন ছিলেন জেরুজালেমে নিযুক্ত চীন আন্তর্জাতিক বেতারের একজন স্থায়ী সংবাদদাতা। ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংঘর্ষের সময় তিনি অজস্র খবর পাঠিয়েছেন। তিনি বলেছেন,২০০০ সালের অক্টোবরে গাজা অঞ্চল এবং জর্দান নদীর পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংঘর্ষ ঘটে। আমরা এক জাতীয় পতাকা নিয়ে গাজা অঞ্চলে গেলাম। আমরা স্বচক্ষে একজন ফিলিস্তিণীকে গুলি খেয়ে মাটিতে পড়ে মরে যেতে দেখলাম। রক্ত তার পা থেকে পড়ল। গুলিতে মারা-যাওয়া মানুষ আমাদের থেকে মাত্র কয়েক মিটার দুরে। তখন আমরা বোধ করলাম যে মৃত্যু যেন আমাদের কাছে বেশী দূর ছিল না। হয়তো একদিন এ ঘটনা আমাদের উপরও হতে পারে। বাস্তবে পরর্বতী কয়েক বছরে এ ধরনের ঘটনা বেশ কয়েক বার আমাদের নজরে পড়ল।

    বতর্মানে সারা বিশ্বে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের ২৯টি সংবাদ ব্যুর্রো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

    প্রত্যেক দিন সারা বিশ্বের কাছে চীন আন্তর্জাতিক বেতার ৪৩টি ভাষায় প্রচার করে থাকে। প্রচারের সময় ১১০০ ঘন্টা ছাড়িয়ে গেছে। ভাষার দিক থেকে, প্রচারের সময়ের দিক থেকে এবং শ্রোতাদের চিঠির সংখ্যার দিক থেকে চীন আন্তর্জাতিক বেতার বিশ্বের তিনটি প্রথম সারির বেতারের সারিতে প্রবেশ করেছে।

    ২০০৬ সালে চীন আন্তর্জাতিক বেতার ' চীন-রাশিয়া মৈত্রী ভ্রমণ' তত্পরতার আয়োজন করেছে। এই তত্পরতার ফলে দু'দেশের মধ্যে ব্যাপকভাবে আলোড়নের সৃষ্টি হয়েছে। চীন আন্তর্জাতিক বেতার , রাশিয়ার ইতার তাস সহ দু'দেশের তথ্যমাধ্যমগুলোকে নিয়ে গঠিত একটি যৌথ সাক্ষাত্কার দল ১৩টি জীপ চালিয়ে পেইচিংয়ের তিয়েন আন মেন মহা চত্বর থেকে এক মাসের অধিক সময়ের পর মস্কো পৌঁছেছে। পথে সাক্ষাত্কার দল অজস্র সুন্দর সুন্দর অনুষ্ঠান তৈরী করেছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী লাভরোফ এই তত্পরতার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।

    'চীন-রাশিয়া মৈত্রী ভ্রমণ' একটি নজীরবিহীন কর্মসূচী। ৪০ জনেরও বেশী চীনা সংবাদদাতা ৪০ দিনেরও বেশী সময়ের মধ্যে রাশিয়ার ১৮টি শহর সফর করেছেন। আমার মনে হয় এমন কি অনেক রাশিয়ানও আপনাদের অভিজ্ঞতার প্রশংসা করেছেন। আমরা ' চীন-রাশিয়া মৈত্রী ভ্রমণ' তত্পরতায় অংশ গ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বিশেষ করে এই তত্পরতার আয়োজক---চীন আন্তর্জাতিক বেতারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কারণ আপনারা এই তত্পরতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন কাজের দায়িত্ব বহন করেছেন।

    অতীতে শ্রোতা বন্ধুদের মধ্যে অধিকাংশই সটওয়েভের মাধ্যমে আমাদের অনুষ্ঠান শুনতেন। চলতি বছরের ২৭ ফেব্রয়ারীতে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের প্রথম বিদেশী এফ এম বেতার কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে।

    এটা হল চীনের বৈদেশিক প্রচার ইতিহাসে একটি স্মরণীয় ঘটনা। যার ফলে চীনের বৈদেশিক প্রচারে আত্মনিয়োজিত কয়েক প্রজম্মের কর্মীদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে। এর পর চলতি বছরের ১৯ নভেম্বরে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের দ্বিতীয় এফ এম বেতার লাওসের রাজধানীতে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে।

    লাওস সফররত চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও এবং লাওসের প্রেসিডেন্ট ছোমালি সায়াসন প্রচারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও এফ এম বেতারের মাধ্যমে লাওসের জনগণকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, চীন আর লাওস দু'টো বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী দেশ। দু'দেশের জনগণের মধ্যে গভীর ঐতিহ্যিক মৈত্রী রয়েছে। চীন আন্তর্জাতিক বেতারের এফ এম বেতারের প্রচার দু'দেশের জনগণের পারষ্পরিক সমঝোতা ও মৈত্রী বাড়ানোর জন্যে একটি নতুন সেতু স্থাপন করেছে এবং দু'দেশের জনগণের মৈত্রী বংশক্রমেই বজায় রাখার জন্যে যথোচিত অবদান রেখেছে।

    ঐতিহ্যিক তারহীন বেতার ক্রমান্বয়ে উন্নত করার সঙ্গে সঙ্গে সারা বিশ্বের তথ্যমাধ্যমগুলোর উন্নয়নের প্রবণতার আলোকে চীন আন্তর্জাতিক বেতার সক্রিয়ভাবে ইন্টানেটার প্রচার চালু করেছে। বতর্মানে আপনি যদি চীন আন্তর্জাতিক বেতারের ওয়েভসাইট ---CRI Online খুলেন তাহলে আপনি সঙ্গে সঙ্গে সর্বশেষ অনুষ্ঠান শুনতে পাবেন। এর সঙ্গে সঙ্গে আপনি চীন আন্তর্জাতিক বেতারের ওয়েবসাইটের বহু ভাষী ওয়েবসাইটে স্থাপিত সংবাদ, ক্রীড়াও জীবন সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চীন সম্পর্কীত নানা ধরনের তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন।

    ৬৫ বছর বয়স্ক চীন আন্তর্জাতিক বেতারের দৃষ্টি এখন আরও বিশাল, সামর্থ্য আরও সম্পূর্ণ হয়েছে। ভবিষ্যত প্রসঙ্গে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের মহা পরিচালক ওয়াং গেন নিন বলেছেন, শ্রোতাদের জন্যে আরও ভালভাবে সেবা করার জন্যে আরও বেশী ও আরও উত্কৃষ্টতমউন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি করার প্রচেষ্টা চালানো উচিত। তিনি বলেছেন, চীন আন্তর্জাতিক বেতারের ভবিষ্যত উন্নয়নের লক্ষ্য হল একক তারহীন বেতার থেকে তারহীন , আন লাইন বেতার এবং বহু তথ্যমাধ্যমগুলোকে নিয়ে গঠিত একটি বহুমুখী আধুনিক তথ্যমাধ্যমে বিকশিত হবে । বেতার, ইন্টারনেট আর টেলিভিশন সহ নানা ধরনের তথ্যমাধ্যমের মাধ্যমে সার্বিকভাবে বিদেশী শ্রোতাদের চীনকে জানার চাহিদা পুরন করা হবে। বিশ্বের সঙ্গে চীনের আদান-প্রদানের একটি জানালা হিসেবে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের দায়িত্বহল, এক দিকে বিদেশী শ্রোতাদের কাযর্করভাবে চীনকে জানতে সাহায্য করা, অন্য দিকে চীনের জনসাধারণকে আরও ভালভাবে বিশ্বকে জানার সুযোগ দেয়া।