১৯৫৫ সালের ১১ নভেম্বর ভূটানের রাজা জিগমে সিংয়ে ওয়াংচুক জন্ম গ্রহণ করেন। ১২ বছর বয়স তিনি ব্রিটেনে গিয়ে লেখাপড়া শুরু করেন। ১৯৭২ সালের ২৪ জুলাই, তত্কালীন রাজা মারা যান। ওয়াংচুক উত্তরাধিকারীরূপে রাজা হন। ফলে তিনি ভূটানের চতুর্থ বংশানুক্রমিক রাজা ও স্থল বাহিনীর প্রধান হন তিনি সর্বোচ্চ আইনী অধিকার ভোগ করেন।
রাজা হবার পর তিনি নিজের উদ্যোগে অর্থনীতির উন্নয়ন করা এবং ভূটানের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা বজায় রাখার উপর জোর দেন। তিনি বলেছেন, আমাদের কাজ হচ্ছে অর্থনীতিতে আত্মনির্ভরশীল হওয়া। তার সৃষ্ট 'ভূটান রূপ' ও উপস্থাপিত 'জাতীয় সুখের মোট মূল্য' অর্থাত জি এন সি তত্ত্ব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচ্চ মনোযোগ আকর্ষণ করে। যাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপানসহ বিভিন্ন দেশের গবেষণা সংস্থা ও বিশেষজ্ঞদের কাছে আগ্রহের বিষয় পরিনত হয় এই অর্থনৈতিক তত্ত্ব। ২০০২ সালের অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া মার্কিন মনস্তত্ত্বের অধ্যাপক কালমান কয়েকজন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নিয়ে জি এন সি'র ওপর গবেষণা চালানোর চেষ্টা করছেন।
ভূটানের প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে রাজা ওয়াংচুক অনেক গুরুত্ব দেন। সরকারের নীতি অনুযায়ী, প্রত্যেক বছর প্রতিটি নাগরিককে কমপক্ষে ১০টি গাছ লাগাতে হবে। ভূটানে প্রাচীন বনের ঘনত্বের হার এশিয়া অঞ্চলের প্রথম। দেশটি ২০০৫ সালে জাতিসংঘ পরিবেশ সংরক্ষণ কার্যক্রমের 'পৃথিবীর গার্ড' পুরস্কার পেয়েছে।
২০০৫ সালের ডিসেম্বরে রাজা ওয়াংচুক ২০০৮ সালে পদ ত্যাগ করার কথা ঘোষণা করেছেন। তারপর তার ২৫ বছর বয়সী বড় ছেলে রাজা হবেন। সে সময় ভূটানে ১'শ বছরের ওয়াংচুক বংশের কেন্দ্রীয় শাসন শেষ হবে এবং প্রথমবার গণতান্ত্রিক নির্বাচনে সরকার গঠন করা হবে।
রাজা ওয়াংচুক খুবই সুদর্শন। মানুষ তাঁকে 'বিশ্বের সবচেয়ে সুদর্শন রাজা' বলে অভিহত করে। বাস্কেটবল খেলা তাঁর সখ। তাঁর চারজন সুন্দরী স্ত্রী আছে। এরা পরস্পর বোন। চারজন রাণী পাঁচজন রাজপুত্র ও পাঁচজন রাজকন্যা লালন-পালন করেন। এদের মধ্যে বড় দুই রাজকন্যা মার্কিন স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছেন।
রাজার তৃতীয় রাণীর ছেলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর ভূটানে ফিরে এসেছেন। তাঁর বাবার মতো, তিনি খুব দয়ালু এবং সাধারণ মানুষকে ভালবাসেন। তাছাড়া, তিনিও বাস্কেটবল খেলতে খুবই পছন্দ করেন।
|