স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহের কমনওয়েলথের প্রজাতন্ত্রগুলোর শীর্ষ সম্মেলন ২৮ নভেম্বর বেলারুসের রাজধানী মিনস্কে শেষ হয়েছে। এবার শীর্ষ সম্মেলনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ফলাফল এই যে, সম্মেলনে অংশ গ্রহণকারীদেশসমূহ আগামী বছরের পয়লা জুনের আগে এই গোষ্ঠির সংস্কার কর্মসূচী প্রণয়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তা ছাড়া সংস্কার বিষয়ক একটি বিশেষ কর্ম গ্রুপও প্রতিষ্ঠিত হবে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহের কমনওয়েলথের প্রজাতন্ত্রগুলোর মধ্যে ঘনঘন বিরোধ দেখা দিয়েছে বলে স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহের কমনওয়েলথের প্রজাতন্ত্রগুলোর সংস্কার অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে।
বতর্মানে স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহের কমনওয়েলথের প্রজাতন্ত্রগুলোতে মোট ১২টি সদস্য দেশ আছে। এ ১২টি দেশ হল: আজারবাইজান, আর্মেনিয়া, বেলারুস, জর্জিয়া, কিরগিজিস্তান, মলডাভিয়া, কাজাখস্তান, রাশিয়া, উজবেকিস্তান, ইউক্রেন, তাজিকিস্তান আর তুর্কমেনিস্তান। তুর্কমেনিস্তান ছাড়া বাকী ১১টি দেশের প্রেসিডেন্ট এই শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। তুর্কমেনিস্তানের উপ প্রধান মন্ত্রী এবার শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। এবারের শীর্ষ সম্মেলনে ' মিলিতভাবে অবৈধ অভিবাসী রোধ বিবৃতি ' , স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহের কমনওয়েলথের প্রজাতন্ত্রগুলোর সন্ত্রাস দমন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সম্পর্কীত চুক্তি ' সহ দলিলপত্র গৃহীত হয়েছে।
শীর্ষ সম্মেলনে অংশ গ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের নেতাদের মধ্যে এই গোষ্ঠির গড়িমসি দুরীকরণ আর এই গোষ্ঠির ন ভবিষ্যতউন্নয়নসংক্রান্ত রির্পোট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই গোষ্ঠির বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত একটি উচ্চ পদস্থ গ্রুপ এই রির্পোট লিখেছে। রির্পোটে স্বাধীন রাস্ট্রসমূহের কমনওয়েলথের প্রজাতন্ত্রের সম্মুখীন সমস্যামালা বিশ্লেষণ করা হয়েছে । তবে এই রির্পোটের বিস্তারিত বিষয়বস্তু এখন পযর্ন্ত প্রকাশিত হয়নি।
এবার শীর্ষ সম্মেলনের চেয়ারম্যান, কাজখস্তানের প্রেসিডেন্ট নুরসুলটান নাজারবায়েফ সম্মেলন শেষ হওয়ার পর একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহের কমনওয়েলথের প্রজাতন্ত্রগুলোর একায়ন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিরাট সুপ্ত শক্তি রয়েছে। সম্মেলনে অংশ গ্রহণকারীরা মনে করেন, এই গোষ্ঠির কাযর্করীতা বাড়াতে হবে, একায়নের প্রক্রিয়া অব্যাহতভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তিনি প্রত্যয় করে বলেছেন, সম্মেলনে অনুমোদিত বিভিন্ন সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহের কমনওয়েলথের প্রজাতন্ত্রের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর ক্ষেত্রেঅনুকূল। সম্মেলনের স্বাগতিক দেশ বেলা রুসের প্রেসিডেন্ট লুকাসেনকো বলেছেন, যদিও স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহের কমনওয়েলথের প্রজাতন্ত্রগুলোর মধ্যে অনেক সমস্যা বিদ্যমান, তবে অর্থনীতি ও সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে এই গোষ্ঠি অনেক সাফল্য অর্জন করেছে। এ দিকটিকে মোটেই অবহেলা করা যায় না। তিনি মনে করেন, ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক মঞ্চে স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহের কমনওয়েলথের প্রজাতন্ত্রগুলোর মর্যাদা জোরদার করতে হবে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউক্রেন, জর্জিয়া, কির্গিজিস্তান সহ স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহের কমনওয়েলথের প্রজাতন্ত্রগুলোতে পর পর তথাকথিত রঙ্গিন বিপ্লব ঘটার ফলে বিশ্লেষকরা মনে করেন, বতর্মানে এই গোষ্ঠি সত্যিই সত্যিই অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে।
এই পটভূমিতে স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহের কমনওয়েলথের প্রজাতন্ত্রগুলোর সংস্কার করার দাবিদার। সংস্কারের একমাত্র পথ হল এই গোষ্ঠির ঐক্য জোরদার করা । এ জন্য অনেক বিশেষজ্ঞ সক্রিয়ভাবে প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন। যেমন ধরুন , তাঁরা এই গোষ্ঠির মধ্যে একই কর আদারের সুবিধামূলক নীতি প্রণয়ন করার প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন। বিভিন্ন সদস্য রাষ্ট্র সচেতন হয়েছে যে সংস্কার স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহের কমনওয়েলথের প্রজাতন্ত্রগুলোর জরুরী ব্যাপারে পরিণত হয়েছে।
|