v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-11-27 18:30:13    
ন্যাটোর ১৯তম শীর্ষ সম্মেলন রিগায় অনুষ্ঠিত হবে

cri
     ন্যাটোর দুদিন ব্যাপী উনিশতম শীর্ষ সম্মেলন ২৮ ও ২৯ নভেম্বর লাটভিয়ার রাজধানী রিগায় অনুষ্ঠিতি হবে । ন্যাটো প্রতিষ্ঠার পর ৫৭ বছরে , বিশেষ করে ২০০৪ সালে ন্যাটোর সম্প্রসারণের পর প্রথমবার সাবেক সোভিয়েন ইউনিয়নের একটি প্রজাতন্ত্রে শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে । তাই এবারের শীর্ষ সম্মেলন বিভিন্ন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ।

    মোটের উপর বলতে গেলে বর্তমান রিগা শীর্ষ সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য বিষয় হবে স্নায়ু যুদ্ধের পর ন্যাটোর রুপান্তর । বিষয়টি ব্যাপক হলেও এতে একটি মূল ও তিনটি প্রধান সমস্যা আছে । এর মধ্যে একটি মূল হলো নিরাপত্তার নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা । প্রধান তিনটি সমস্যা হলো আফগানিস্তানে ন্যাটোর শান্তিরক্ষা অভিযান , ন্যাটোর ব্যবস্থার সংস্কার ও শক্তি বাড়ানো এবং ন্যাটোর সদস্য দেশগুলো ও ন্যাটোর বাইরের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক পরিচালনা করা। শীর্ষ সম্মেলনের আগে ন্যাটোর মহাসচিব জাপ দ্য হোপ শেফার বলেছেন , পরবর্তী কয়েক বছরে ন্যাটো আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পরিবেশের নতুন পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ার চেষ্টা করবে । রিগা শীর্ষ সম্মেলন ন্যাটোর ভবিষ্যত উন্নয়নের ভিত্তি হয়ে দাড়াবে । তবে বিশ্লেষকদের ধারণা , ন্যাটোর অভ্যন্তরীন ও বাইরের দ্বন্দ্বের দরুণ রিগা শীর্ষ সম্মেলন সফল হবে কিনা তা' এখনও বলা মুশ্কিল ।

      আফগানিস্তানের অসুবিধাজনক অবস্থার মোকাবেলা করা বর্তমান ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনের প্রথম সমস্যা । যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা অনুসারে ন্যাটোর নেতৃতাধীন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রন করছে । তবে আফগানিস্তানের দক্ষিণ অঞ্চল ও পূর্ব অঞ্চলে ন্যাটোর সামরিক অভিযানগুলোর ফল ন্যাটোর অনুমানের বাইরে । এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতেবর্তমানে আফগানিস্তানে ন্যাটোর ৩২ হাজার সৈন্য যথেষ্ট নয় । ন্যাটোর নেতারা একাধিকবার সদস্যদেশগুলোকে আফগানিস্তানে আরো বেশি সৈন্য পাঠানোর দাবি জানিয়েছে । কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো দেশ সক্রিয় সাড়া দেয় নি । বর্তমান শীর্ষ সম্মেলনে আফগানিস্তানে শান্তিরক্ষা অভিযান ও পুনর্গঠনে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হবে কিনা কেউ নিশ্চিতভাবে বলতে পারে না ।

    ন্যাটোর ব্যবস্থার সংস্কার ও শক্তি বাড়ানো রিগা শীর্ষ সম্মেলনের দ্বিতীয় কঠিন সমস্যা । নিরাপত্তার বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মোকাবেলার জন্য বর্তমান শীর্ষ সম্মেলনে একটি সার্বিক রাজনৈতিক পথনির্দেশক কাঠামো গৃহিত হবে । সন্ত্রাসদমন , ইন্টারনেটের নিরাপত্তা রক্ষা , প্রাকৃতিক সম্পদ ও জ্বালানী সম্পদ রক্ষান্যাটোর দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত হবে । এই রাজনৈতিক পথনির্দেশক কাঠামোতে পরবর্তী দশ থেকে পনের বছরে ন্যাটোর দায়িত্ব লিপিবদ্ধ করা হবে । বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন , অর্থবরাদ্দ, সিদ্ধান্ত নেয়া এবং সমর সজ্জা ক্ষেত্রের সামঞ্জস্যহীনতার দরুন এই লক্ষ্য হাসিল করা কঠিন হবে । তা ছাড়া , ন্যাটো সম্বন্ধে বিভিন্ন সদস্য দেশের ধারণা একই রকম নয় । ইরাক যুদ্ধ থেকে সৃষ্ট ফ্রান্স ও জার্মানী এবং যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেনের মধ্যে বিরোধ এখনও দূর হয় নি । এ ধরনের অভ্যন্তরীন বিরোধ ন্যাটোর ঐক্যে ক্ষতি করবে ।

     ন্যাটোর সদস্য দেশগুলো ও অন্যান্য দেশের সম্পর্ক পরিচালনাও আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনের একটি কঠিন সমস্যা । এখন ন্যাটোর ২৬টি সদস্য দেশ , ২০টি শান্তিপূর্ণ অংশীদারী দেশ ও ৭টি ভূমধ্য সাগরীয় সংলাপকারী দেশ আছে । এর ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র কিছুদিন আগে ঘোষণা করেছে , প্রেসিডেন্ট বুশ রিগা শীর্ষ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে অষ্ট্রেলিয়া ,জাপান , দক্ষিণ কোরিয়া , সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারী সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করবেন । যদিও ন্যাটোর নেতারা বার বার বলেছেন যে ন্যাটো নতুন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা অংশীদারী সম্পর্ক অন্বেষণ করছে । তবে অংশীদারী দেশের সংখ্যার বৃদ্ধি রাশিয়া , ফ্রান্স ও জার্মানীর বিরোধীতার সম্মুখীন হয়েছে ।

    জনমত এই যে , স্নায়ু যুদ্ধের পর প্রতিষ্ঠিত ন্যাটো নতুন যুগে নিজের ভুমিকা পালন করা সহজ ব্যাপার নয় । তাই রিগা শীর্ষ সম্মেলনের ফল নিয়ে ন্যাটোর নেতৃবৃন্দআশাবাদী নয় ।