v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-11-23 18:03:33    
পারমাণবিক সমস্যায় ইরানের নতুন প্রক্রিয়া

cri

    ইরানের পরমাণু সমস্যা সর্বদাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একটি কেন্দ্রবিন্দু । সম্প্রতি ইরান কূটনৈতিক ক্ষেত্রে আরো কয়েকটি লক্ষ্যণীয় কর্মসূচী নিয়েছে।

 ইরানের কর্মসূচীর মধ্যে প্রথমেই আন্তর্জাতিক আণবিক জ্বালানী সংস্থার কাছে তার পারমাণবিক রিঅ্যাক্টর প্রতিষ্ঠার জন্য প্রযুক্তিগত সাহায্য দেয়ার আনুষ্ঠানিক আবেদন জানানো হয়েছে। জানা গেছে, এই সংস্থার পরিষদ কেবল ইরানের লাইট ওয়াটার রি-অ্যাক্টরের জন্য প্রযুক্তিগত সমর্থন দিতে রাজি। তবে সহজেই সামরিক প্রয়োগে রূপান্তর করা যায় এমন প্রযুক্তিগত সমর্থন আরাক ভারী ওয়াটার রি-অ্যাক্টরের জন্য দেবে না। আসলে এমন ফলাফলের বিষয়টি আগেই ইরানের কল্পনায় ছিল। কিন্তু জানা থাকলেও ইরান কেন এ ধরনের আবেদন করেছে? বিশ্লেষকরা মনে করেন, এটা খুব সম্ভবত ইরানের কূটনৈতিক কৌশলের অংশ।

 সবাই জানেন, ইরান বরাবরই জোরালো ভাষায় উল্লেখ্য করে যে, তার পারমাণবিক পরিকল্পনা পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ লক্ষ্যের জন্য। এর মধ্যে কোন পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পরিকল্পনা নেই। যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি প্রয়োগের ওজুহাতে পারমাণবিক অস্ত্র উন্নয়নের অভিযোগ করেছে। ইরান মনে করে, সেটা কেবল যুক্তরাষ্ট্র নিজের স্বার্থ বিবেচনা করার পর দেয়া অকারণ অপবাদ । ফলে ইরান একাধিকবার ঘোষণা করেছে যে, পারমাণবিক পরিকল্পনা উন্নয়ন করা হচ্ছে "পারমাণবিক অস্ত্র অবিস্তার চুক্তি" অনুযায়ী তাকে দেয়া অপরিহার্য অধিকার এবং যা পুরোপুরি বৈধ। এবার ইরান সরাসরি আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার কাছে প্রযুক্তিগত সাহায্যদান সংক্রান্ত আবেদন জানানোর মাধ্যমে নিজের পারমাণবিক পরিকল্পনাকে আরেকবার তুলে ধরেছে।

 এ ক্ষেত্রে ইরানের তথ্য মাধ্যমগুলোও সরকারকে সহযোগিতা করেছে। ইরানের জাতীয় বেতারের দায়িত্বশীল ব্যক্তি ২০ নভেম্বর বলেছেন, এ বেতার ইরানের প্রেসিডেন্ট ও মার্কিন প্রেসিডেন্টের মধ্যে বিতর্ক অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচারের সুবিধা পেতে চায়। তা থেকে এ বছরের মে মাসে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমেদিনেজাদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বুশকে দেয়া চিঠির কথা আমাদের মনে পড়ে। আসলে তিনি বুশকে কি লিখেছেন , সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। তিনি বুশের সঙ্গে মুখোমুখি বিতর্কের করার সম্ভাবনা আছে কিনা, তাও গুরুত্বপূর্ণ নয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে তিনি সক্রিয়ভাবে জবাব দিতে শুরু করেছেন এবং সকল আন্তর্জাতিক বিপদ মোকাবেলার ক্ষেত্রে অত্যন্ত শান্ত ও বিজয় অর্জনের মনোভাব প্রদর্শন করছেন।

 ইরানের দ্বিতীয় কূটনৈতিক তত্পরতা হচ্ছে ১৮ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমেদিনেজাদ এশিয় সংসদের শান্তি সমিতির অধিবেশনে অংশগ্রহণকারী উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ গণ সভার স্পীকার চোয় থায় বোকের বৈঠক করার সময় উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক অস্ত্র সংক্রান্ত তত্পরতা বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছেন এবং কোরিয় উপদ্বীপে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের সমর্থন করেছেন। জনমত মনে করে, আহমেদিনেজাদ এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে দুটি অবস্থানকেই প্রমান করতে চেয়েছেন। একটা হচ্ছে পারমাণবিক সমস্যায় ইরান আর উত্তর কোরিয়ার মধ্যে কোন সহযোগিতা নেই। আরেকটা হচ্ছে ইরানের পারমাণবিক তত্পরতার উদ্দেশ্য হচ্ছে শান্তিপূর্ণরূপে পারমাণবিক শক্তি প্রয়োগ করা। এ ক্ষেত্রে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে মিল নেই।

 ইরানের তৃতীয় কর্মসূচী হচ্ছে ইরাককে কাজে লাগানো , যাতে পারমাণবিক সমস্যায় যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে চাপ দিতে না পারে । ইরানের দৃষ্টিতে ইরাক সমস্যা হচ্ছে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের একটি জটিল সমস্যা। মধ্যবর্তী নির্বাচনে মার্কিন রিপাবলিকান পার্টির ব্যর্থতার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে জনসাধারণ বুশ সরকারের ইরাক নীতির ওপর অসন্তুষ্ট । ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতৃত্বে জাতীয় সংসদের চাপে এই নীতি সুবিন্যস্ত করার সম্ভাবনা আছে। অন্য দিকে, কিছু দিন আগে বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ইরাকের নিরাপত্তা সমস্যা সমাধানে ইরান ও সিরিয়ার অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। এ সব কাজ দেখে বুঝা যায়, ইরান কোন সুযোগের সম্মুখীন হচ্ছে। খবরে জানা গেছে, ইরান ইরাকের প্রেসিডেন্ট ও সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট যথাশীঘ্র তেহরানে গিয়ে ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করার আমন্ত্রণ জানিয়েছে। তাঁরা ইরাকের নিরাপত্তা পরিস্থিতি উন্নয়ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন। ইরান ইরাকের নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে নিজের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব শক্তির দ্বারা প্রত্যক্ষভাবে পারমাণবিক সমস্যায় নিজের মর্যাদা জোরদার করতে চায়।

 ইরানের পারমাণবিক সমস্যার ভবিষ্যত সম্ভাবনা আরো পরিবর্তনশীল হয়েছে।