v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-11-17 19:20:58    
ভিয়েতনাম

cri

                                                   ভিয়েতনামের জাতীয় পতাকা

 ভিয়েতনাম সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র মধ্য-দক্ষিণ উপদ্বীপের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত। ভিয়েতনামের উত্তর দিকে চীন, পশ্চিম দিক লাওস ও কাম্পুচিয়ার সঙ্গে সংলগ্ন। পূর্ব আর দক্ষিণ দিকে হচ্ছে দক্ষিণ সাগর। সমুদ্রসীমা সীমা ৩২৬০ কিলোমিটারের বেশি। ভিয়েতনামের আয়তন ৩ লাখ ২০ হাজার বর্গকিলোমিটার।

 ভিয়েতনাম একটি বহু জাতিক দেশ, মোট ৫৪টি জাতি আছে। জনসংখ্যা ৮ কোটি ৪০ লাখের বেশি। এর মধ্যে চিং জাতির লোকসংখ্যা সবচেয়ে বেশি, প্রায় মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮৬ শতাংশ।

ফ্রান্সের প্রতিরোধ স্মৃতি সৌধ

 ১৮৮৪ সাল থেকে ভিয়েতনাম ফ্রান্সের উপনিবেশ ছিলো। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধকালে জাপান দেশটি দখল করে নেয়। ১৯৪৫ সালের আগস্ট মাসে ভিয়েতনাম "আগস্ট বিপ্লবের" মাধ্যমে জাপানের কাছ থেকে মুক্ত হয়। এই বছরের ২ সেপ্টেম্বর প্রেসিডেন্ট হো চিন মিন ভিয়েতনামের স্বাধীনতা এবং ভিয়েতনাম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। এরপর ফ্রান্স আবার ভিয়েতনামে অগ্রাসন চালায়। নয় বছর স্থায়ী ফ্রান্স বিরোধী যুদ্ধ করার পর ১৯৫৪ সালের মে মাসে ফ্রান্স বাধ্য হয়ে ইন্দোচীনের শান্তি পুনরুদ্ধার সংক্রান্ত জেনেভা চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চল মুক্তি পায়। ১৯৬১ সালে প্রেসিডেন্ট হো চি মিনের নেতৃত্বে ভিয়েতনামের জনগণ দক্ষিণ ভিয়েতনাম মুক্ত করা এবং স্বদেশ পুনরেকেত্রীকরণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করে । ১৯৭৫ সালের মে মাসে, দক্ষিণ ভিয়েতনাম পুরোপুরি মুক্ত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয় হয়। ১৯৭৬ সালের জুলাই মাসে ভিয়েতনামের দক্ষিণাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের পুনরেকেত্রীকরণ বাস্তবায়িত হয়। দেশটির নাম দেয়া হয় ভিয়েতনাম সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র ।

 ভিয়েতনাম একটি সমাজতান্ত্রিক উন্নয়নশীল দেশ। ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টি ১৯৮৬ সাল থেকে অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচী চালু করে। ১৯৯৬ সালে ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির অষ্টম অধিবেশনে জোরালোভাবে দেশের শিল্পায়ন ও আধুনিকায়ন ত্বরান্বিত করার প্রস্তাব করে। ২০০১ সালে ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির নবম অধিবেশনে সমাজতান্ত্রিক বাজার অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ২০০৬ সালের এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির দশম অধিবেশনে গত ২০ বছরের সংস্কারের অভিজ্ঞতা সারসংকলন করে পরবর্তীকালে উন্নয়নের দিক ও লক্ষ্য প্রণীত হয়।

                                                   হু চিন মিং শহরের একটি ভবন

     সংস্কারের কারণে ভিয়েতনামের রাজনীতি ও সমাজে স্থিতিশীলতা এসেছে এবং অর্থনীতির বিরাট প্রাণশক্তি জেগে উঠেছে। দেশটির আন্তর্জাতিক মর্যাদা দিনে দিনে বাড়ছে। গত ১৫ বছর ধরে ভিয়েতনামের বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ৭.৫ শতাংশ। গত বছর ছিল ৮.৪ শতাংশ । এ বছর ৮.২ শতাংশ হতে পারে। ভিয়েতনাম হচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দ্রুত গতি সম্পন্ন দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। ৭ নভেম্বর বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা ভিয়েতনামকে ১৫০তম সদস্য হিসেবে গ্রহণ করেছে।

 চীন ও ভিয়েতনামের পাহাড় ও নদনদী সংলগ্ন। দু'দেশের জনগণের সুদীর্ঘকালের ঐতিহ্যিক মৈত্রী আছে। ১৯৫০ সালের ১৮ জানুয়ারী চীন ও ভিয়েতনামের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। অর্ধ শতাব্দী সময় ধরে দু'দেশের কয়েক প্রজন্মের নেতৃবৃন্দের সযত্নে চীন ও ভিয়েতনামের মৈত্রী অব্যাহতভাবে সুসংবদ্ধ ও উন্নতি হয়েছে। নতুন শতাব্দীতে প্রবেশের পর "দীর্ঘকালীন স্থিতিশীল, ভবিষ্যতমুখি, সুপ্রতিবেশীসুলভ ও সার্বিক সহযোগিতার" মূলনীতি এবং "ভালো প্রতিবেশী, ভালো বন্ধু, ভালো কমরেড, ভালো অংশীদার" ভিত্তিতে চীন ও ভিয়েতনামের ঐতিহ্যিক মৈত্রী আরো গভীরতর হয়েছে। দু'দেশ পরস্পরকে বিশ্বাস, সমর্থন, সার্বিকভাবে সহযোগিতা, পারস্পরিক উপকারিতা, উভয়ের জন্য কল্যাণকর এবং মিলিতভাবে উন্নয়ন করে আসছে।

 চীন ও ভিয়েতনামের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রের সহযোগিতা নিরন্তরভাবে গভীরতর হচ্ছে। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক মূল্য বার বার নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করছে। গত দু'বছরে চীন ভিয়েতনামের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদারে পরিনত হয়েছে। ২০০৫ সালে চীন ও ভিয়েতনামের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক মূল্য ছিল ৮০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি। এ বছর ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছানোর লক্ষ্য বাস্তবায়িত হবে।