চীন ১৬ নভেম্বর ঘোষণা করে যে , ১১ ডিসেম্বর থেকে সতর্কতার সঙ্গেতত্ত্বাবধান নীতির ভিত্তিতে বিদেশী ব্যাংকগুলোর কাছে রেনমিনপির পেশাদারী কাজ সার্বিকভাবেউন্মুক্ত করা হবে । বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় অন্তর্ভূক্ত হওয়ার সময় দেয়া প্রতিশ্রুতি এবং সবেমাত্র প্রকাশিত বিদেশী ব্যাংক সম্পর্কিত নিয়মবিধি অনুযায়ী চীনের এই নীতি প্রণিত হয় । তহবিল বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে , নতুন নীতির প্রণয়ন চীনদেশে দেশিবিদেশী ব্যাংকের সুষম প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্যে ইতিবাচক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে ।
২০০১ সালে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় অন্তর্ভূক্ত হওয়ার সময় চীন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে , পরবর্তী ৫ বছরে বিদেশী ব্যাংকের রেনমিনপির পেশাদারী কাজের সীমাবদ্ধতা উঠিয়ে নেয়া হবে । সর্তকতার সঙ্গে তত্ত্বাবধানের ভিত্তিতে বিদেশী ব্যাংক জাতীয় ব্যাংকের সুবিধা পাবে । সে সময় থেকে চীন ধাপেধাপে বিদেশী ব্যাংকের রেনমিনপির পেশাদারী কাজের সীমাবদ্ধতা শিথিল করেছে । এখন বিদেশী ব্যাংক চীনের ২৫টি শহরে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যে রেনমিনপির কাজ চালাতে পারে ।
বিদেশী ব্যাংক সম্পর্কিত নতুন নিয়মবিধি অনুযায়ী ১১ ডিসেম্বর থেকে চীনে তালিকাভূক্ত বিদেশী ব্যাংক , যৌথ অর্থবিনিয়োজিত ব্যাংক এবং চীনে তালিকাভূক্তিহীন বিদেশী ব্যাংকের শাখা সবই চীনে রেনমিনপির কাজ চালাতে পারে । চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের আইনগত ব্যবস্থা বিষয়ক অফিসের উপপরিচালক সুং তাহান বলেছেন , নতুন নিয়মবিধি সার্বিকভাবে উন্মুক্ততা সম্প্রসারিত করার প্রতিশ্রুতি পালন করে বিদেশী ব্যাংকের উপর জারি করা সীমাবদ্ধতা উঠিয়ে নিয়েছে এবং চীনে তালিকাভূক্ত বিদেশী ব্যাংকের কাছে রেনমিনপির কাজ পুরোপুরিভাবে উন্মুক্ত করেছে ।
তিনি বলেছেন , সর্তকমূলক তত্ত্বাবধানের লক্ষ্যে যে বিদেশী ব্যাংক চীনে তালিকাভূক্ত হয়নি তার শাখা সংস্থার উপর চীন কিছু সীমাবদ্ধতা আরোপকরবে । তিনি মনে করেন যে , চীনের এই আচরণ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার প্রাসঙ্গিক নিয়ম লংঘণ করেনি । তিনি বলেছেন , বিদেশী শাখা ব্যাংক মূল ব্যাংকের এক অংশবিশেষ । যদি মূল ব্যাংকের ঝুঁকি বা ব্যয়ের সংকট হয় তাহলে সে দেশে বিদেশী শাখা ব্যাংকের সঞ্চয়কারীরা ক্ষতিপূরণের নিশ্চিয়তাবিধান পাবেন না । তাই যে বিদেশী ব্যাংকচীনে রেনমিনপির কাজ চালাবে তাদের চীনে তালিকাভূক্ত হতে হবে , এটা সর্তকতামূলক তত্ত্বাবধানের এবং চীনের তহবিল ব্যবস্থার নিরাপত্তা ও সঞ্চয়কারীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য প্রয়োজন । এটা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়মের সঙ্গে খাপখায়।
চীন সরকারে নতুন নিয়ম সম্পর্কে এইচএসবিসি , সিটি ব্যাংক সহ বিভিন্ন বিদেশী ব্যাংক শান্তপ্রতিক্রিয়া জানিয়েছে । তারা বলেছে , চীনে তাদের স্বাধীন শাখা সংস্থা তালিকাভূক্ত হবে । হংকংয়ের হাংসেং ব্যাংকেরচীন এলাকার প্রেসিডেন্ট ফু চিচিং আমাদের সংবাদদাতাকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন , যদি চীনে আমাদের শাখা সংস্থা তালিকাভূক্ত করি তাহলে নতুন নিয়ম আমাদের কাজের উপর বেশি প্রভাব ফেলবে না ।
চীনের এই নতুন নিয়ম সম্পর্কে চীনের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন , নতুন নিয়ম চীনে বিদেশী ব্যাংকের জন্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুষম পরিবেশ সৃষ্টি করেছে । পরবর্তীকালে চীনা ব্যাংক ও বিদেশী ব্যাংক আরো বেশি সহযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে । এটা চীনা ব্যাকের উন্নয়ন এবং বিদেশী ব্যাংকের বৈদেশিক বাজার সম্প্রসারণের পক্ষে সহায়ক হবে । কিন্তু কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে , নতুন নিয়মে বিদেশী ব্যাংকের আমানত টাকাপয়সার অনুপাত কে সীমাবদ্ধ করা হয়নি বলে নতুন নিয়ম বিদেশী ব্যাকের আরও বেশি ঋণ ত্বরান্বিত করবে । এটা চীনের অর্থনীতির উন্নয়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
|