v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-11-16 17:28:47    
বিশ্বের স্বর্গ চিউ জাই কো ও হুয়াং লংয়ে ভ্রমণ

cri

        চিউ জাই কো চীনের সিছুয়ান প্রদেশের পশ্চিমাংশের আবা তিব্বতী জাতি ও ছিয়াং জাতি স্বায়ত্তশাসিত জেলায় অবস্থিত। এ উপত্যকা দেখতে ঠিক ইংরেজী অক্ষর "Y" এর মতো। এর দৈর্ঘ্য চল্লিশ কিলোমিটার। এখানে নয়টি তিব্বতী জাতির গ্রাম আছে বলে এর নাম হয়েছে "চিউ জাই কো" ।

    ইস্রাইল থেকে আসা মিঃ নেরোহেম ইয়াম চীনের বিভিন্ন অঞ্চল ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন। গত কয়েক বছরে তিনি পেইচিং, শাংহাই, চেচিয়াং, শেনশিসহ বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে চীনের রীতিনীতি, প্রথা, সুন্দর নদনদী ও পাহাড় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেছেন। কিন্তু চিউ জাই কো আসার পর এখানকার সৌন্দর্য তাঁকে অবাক করেছে। তিনি বলেছেন, "এটি হচ্ছে চীনের সবচেয়ে সুন্দরতম জায়গা। আমি অন্যান্য অঞ্চলে কখনো এমন সুন্দর পাহাড় , নদী ও প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখি নি। এখানের সবকিছুই যেন অদ্বিতীয়।"

    পানি হচ্ছে চিউ জাই কোর আত্মা। চিউ জাই কো উপত্যকায় বড় ও ছোট মিলিয়ে মোট ১০০টিরও বেশি রঙিন হ্রদ আছে। স্থানীয় তিব্বতীরা সেখানকার হ্রদকে "সাগরের ছেলে" বলে ডাকে।

    হ্রদের পানি খুব পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন। হ্রদের তলায় পাথর, ভাসমান ঘাস, শুকনো ডালপালা সব দেখা যায়। পানির রং পরিবর্তণশীল। কোন কোন জায়গায় নীল রঙের মণির মতো, কোন কোন জায়গায় সবুজ রঙের মণির মতো, মাঝে মাঝে হলুদ রংও হয়।

    জাপান থেকে আসা মিঃ মোরিশিতা সাদামাসা এ হ্রদগুলো দেখে প্রশংসা করে বলেছেন, "আমি জাপানে চিউ জাই কো সংক্রান্ত টেলিভিশন অনুষ্ঠান দেখেছি। কিন্তু এখানে আসার পর আমার মনে হয়, বাস্তব দৃশ্য টেলিভিশনের চেয়েও সুন্দর। জাপানেও এ রকম হ্রদ আছে, কিন্তু চিউ জাই কো সবচেয়ে সুন্দর, সত্যিই আলাদা।"

    চিউ জাই কো'তে ১৭টি জলপ্রপাত আছে। নোরিলাং নামে চীনের সবচেয়ে চওড়া জলপ্রপাত এখানে আছে। ১৯৯২ সালে ইউনেস্কো চিউ জাই কোকে বিশ্বের প্রাকৃতিক উত্তরাধিকার তালিকাভুক্ত করেছে।

    স্থানীয় তিব্বতীরা মনে করেন, চিউ জাই কোর পাহাড়, পানি, বন, পাথর সব দেবতার দান। তিব্বতী মেয়ে ইনামানহোং বলেছেন, "আমরা বিশ্বাস করি পৃথিবীর সব জিনিসের আত্মা আছে। পাহাড়, পানি, গাছ সব দেবতার উপহার। মানবজাতির তাকে রক্ষা করা উচিত। প্রাকৃতিক পরিবেশকে লঙ্ঘন করা যায় না। তিব্বতী জাতির বৃদ্ধবৃদ্ধারা নিজের ছেলেমেয়েকে বলেন, নদীতে কাপড় ধুয়ো না, যাতে নদীর পানি নোংরা না হয়।"

    ইনামানহোং আর তিব্বতী জাতির লোকেরা এখনো চিউ জাই কো'তে বসবাস করেন। তাঁরা আন্তরিক ও অতিথিপরায়ন। পর্যটকরা ভ্রমণের পাশাপাশি তিব্বতীদের বাড়ীতে গিয়ে সুগন্ধ মাখন চা বা পার্বত্য অঞ্চলে উত্পাদিত যব দিয়ে তৈরি মদ খেতে পারেন। তা ছাড়া তিব্বতী জাতির নাচ গান উপভোগ করবেন।

    চিউ জাই কো দেখার পর আমার সঙ্গে গাড়ি করে হুয়াং লং পর্যটন এলাকায় চলে আসুন। হুয়াং লং আর চিউ জাই কো'র দূরত্ব মাত্র ১৩০ কিলোমিটার। ১৯৯২ সালে ইউনেস্কো হুয়াং লং পর্যটন এলাকাকেও বিশ্বের প্রাকৃতিক উত্তরাধিকারের তালিকাভুক্ত করেছে।

    হুয়াং লং এলাকার দেখার দৃশ্য হলো নদী। উপত্যকায় সোনালী ড্র্যাগনের মতো প্রায় ৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য একটি নদী আছে। এই নদীটি প্রাকৃতিক বন আর বরফ পাহাড়ের মধ্য দিয়ে চলতে থাকে। সবচেয়ে উচু জায়গাটিতে প্রায় ৭০০টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ডোবা নিয়ে গঠিত "পাঁচ রং ডোবা" আছে। এটা হচ্ছে হুয়াং লং পর্যটন এলাকার শ্রেষ্ঠ দৃশ্য। কিন্তু পাঁচ রং ডোবার সমুদ্রতলের উচ্চতা ৪০০০ মিটারেরও বেশি। সেজন্য সব পর্যটক এখানে আসতে পারেন না।