চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে যদি আপনি চায়না ইস্টান এয়ারলাইন্স কোম্পানী বিমানে পেইচিং থেকে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীতে যাতায়াত করেন তাহলে , আপনি অনেক সুন্দর সুন্দর ভারতীয় বিমান বালাকে দেখা যান ।
গত বছর চায়না ইস্টান এয়ারলাইন্স কোম্পানীটি ভারতে ১৬ জন ভারতীয় বিমান বালাকে গ্রহণ করেছে । তারা কি কি প্রতিযোগিতার অনুভব করেছেন , তাদের চীন কেমন লাগছে এবং কি কি মজার গল্প আছে ? এবারে শুনুন আজকের অনুষ্ঠান চীনের বিমান কোম্পানীতে ভারতীয় বিমান বালা ।
ভারতীয় বিমান বালাকে নেয়া হয়েছে চায়না ইস্টান এয়ারলাইন্স কম্পানীর বাণিজ্যিক উন্নয়নের প্রয়োজনে । ২০০২ সালে এই কোম্পানী ভারতে বিমান লাইন চালু করেছে । কয়েক বছর ধরে যাত্রী ও ফ্লাইটের সংখ্যা অনেক বেড়েছে । ভারত ও চীনের খাবার ও ভাষার পার্থক্য আছে বলে যাত্রী ও বিমান বালার মধ্যে যোগাযোগের অসুবিধা হয় । আরো ভালোভাবে ভারতীয় যাত্রীকে পরিসেবা দেয়ার জন্য চায়না ইস্টান এয়ারলাইন্স কোম্পানী ভারতীয় বিমান বালা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ।
বেশ কয়েকবার কঠিন সাক্ষাত্কারের পর ১৬ জন সুন্দরীভারতীয় মেয়েকে চায়না ইস্টান এয়ারলাইন্স কোম্পানীর বিমান বালা হিসেবে নির্ধাচিত করেছে । পরে তাদের সাংহাইয়ে কোম্পানীর সদর দপ্তরে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে ।
সাংহাইয়ে দু'মাসের প্রশিক্ষণের কথা স্মরণ করে সব ভারতীয় বিমান বালারা মনে করে তারা জীবনে এস্মৃতি ভুলে যাবে না । এক জন বিমান বালা বলেন , সবাই জীবনে প্রথমবার সাংহাইয়ে আসেন । আসার আগে তাঁরা সাংহাই সম্বন্ধে অল্প কিছু জানেন , সত্যি সত্যি সাংহাইয়ে দু'মাস থাকার পর তাঁরা মনে থেকে এ আধুনিক এবং বড় শহরকে পছন্দ করে ফেলে । যা ভোলা যায় না ।
প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে বিকাল সাড়ে চারটা পর্যন্ত ভারতীয় মেয়েরা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে লেখাপড়া করেন । তাঁরা ভাষা , আদবকায়দা , কাপড় , বিমান পরিসেবা ইত্যাদি বিষয়ে শিখেন । প্রত্যেক বিষয় শেখার পর পরীক্ষা দিতে হবে , ফলাফল ভালো হলে সার্টিফিকেট পাওয়া যাবে ।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল চীনা ভাষা শেখা । এসব মেয়েরা অক্ষর থেকে শেখেন নি , তাঁরা সোজা বাক্য থেকে চীনা ভাষা শিখেন । মেয়েরা হিন্দী ভাষার উচারণ দিয়ে চীনা ভাষার উচ্চারণ ব্যাখ্যা করেন । মাঝে মাঝে তাঁদের চীনা উচ্চারণ শুনে সবার হাসি পায়। মাঝে মাঝে শিক্ষকও কিছুক্ষণ থেমে মেয়েদের সঙ্গে কিছু হিন্দী ভাষা শিখেন । ক্লাস শেষে মেয়েরা হোটেলের কর্মীর সঙ্গে চীনা ভাষার উচ্চারণ শিখেন । প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সবাই তাদের প্রশংসা করে । ক্লাসে যদি তাদের প্রশ্ন থাকে , তাহলে তাঁরা শিক্ষকে বলবেন । এভাবে তাঁরা তাড়াতাড়ি শিখেছেন ।
প্রশিক্ষণে খাবার এর বিষয় তাদের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে । ১৬ জন বিমান বালা প্রায় সাবই নিরামিষভোজী । তবে সাংহাইয়ে এমন রেস্তারা খুব কম । তারা প্রথমে সাংহাইয়ে পৌঁছার পর চায়না ইস্টান এয়ারলাইন্স কোম্পানী তাঁদের জন্য বিশেষভাবে ভারতের খাবার রান্না করেছে , এভাবে খাওয়ায় এ সমস্যার সমাধান হয়েছে ।
ভারতীয় মেয়েদের চোখে চীনারা তাদের জীবন উপভোগ করছেন , খুব আরামদায়ক , এবং অন্যদের কাজে হস্তক্ষেপ করে না । সাংহাইয়ে রাতের বেলায় নিজেই বাইরে যাওয়া খুব নিরাপদ । তা মেয়েদের মনেও গভীর ছাপ ফেলেছে । রোজ মেরী নামক একজন মেয়ে বলেন , সাংহাইয়ে আরামদায়ক এবং নিরাপদ লাগছে । সাংহাইয়ের পাবও খুব মজা । মেরী পাবে গিয়েছেন । তিনি বলেছেন , সেখানে চীনারা এবং বিদেশিরা একসঙ্গে বসে গল্প করে , মদ খায় এবং গান গায় , খুব ভালো লাগে ।
তাঁরা সব তরুণী এবং সুন্দর ও স্মার্ট থাকতে করতে পছন্দ করেন । সাংহাইয়ে কেনাকাটা হল তাঁদের প্রিয় কাজ । প্রথমবার সাংহাইয়ে জিনিস কেনার বিষয়টি তাদের মনে খুব স্মরণীয় হয়ে থাকবে । বাজারে এত বেশি জিনিস আছে , তারা খুব আনন্দিত । কেনাকাটার পর পরস্পরকে দেখে সবার হাতেই অনেক প্যাকেট । কাপড় , পুতুল ইত্যাদি জিনিস সব আছে । দু'মাসের মধ্যে জুতা হল ভারতীয় মেয়েদের সাংহাইয়ে কেনা সবচেয়ে বেশি জিনিস ।
কেনাকাটা সম্বন্ধে মেয়েরা মনে করেন , সাংহাই নয়াদিল্লীর চেয়ে ভালো । বাজার বড় , স্টাইল নতুন এবং বিভিন্ন রকমের জিনিস আছে । যদিও ভাষা আলাদা তবে ক্যালকুলেটরেরমাধ্যমে কেনাকাটা করা যায় । বিশেষ করে কিছু ছোট দ্রব্যের বাজারে মেয়েরা কেনাকাটা করতে খুব পছন্দ করেন । এ ক্ষেত্রে চায়না ইস্টান এয়ারলাইন্স কোম্পানীর প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কর্মীরা মেয়েদেরকে জিনিস কেনা এবং কেনাকাটার তথ্য জানিয়েছে । পরে তাদের অনেক টাকার সাশ্রয় হয়েছে । প্রত্যেকবার সপিং-এর পর মেয়েরা নিজের পছন্দের জিনিস নিয়ে ট্যাক্সি করে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ফিরে যান । ভাষার সমস্যার কারণে তারা সবসময় ট্যাক্সি ড্রাইভারকে একটি কার্ড দেখান , কার্ডে লেখা আছে : সাংহাইয়ে চায়না ইস্টান এয়ারলাইন্স কোম্পানীর হোটেলে যান । এভাবে তাদের হোটেলে যেতে সুবিধা হয়।
|