চীনে অজস্র বড় বড় হোটেল আছে। বিশেষ করে গত বিশ বছরে অর্থাত চীনে সংস্কার ও উন্মুক্ত নীতি চালু হওয়ার পর, চীনের পযর্টন শিল্পের দ্রুত উন্নতি হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে হোটেলের চাহিদা বেড়েছে। চীনের বড় বড় শহরে অনেক আধুনিক হোটেল নিমার্ন করা হয়েছে। এ সবের মধ্যে রয়েছে বিদেশী পুঁজিবিনিয়োজিত ও যৌথ পুঁজিবিনিয়োজিত হোটেল । জানা গেছে, বতর্মানে রাজধানী পেইচিংয়ে ৪৫টি পাচ তারকা হোটেল আছে। এগুলোর মধ্যে পেইচিং হোটেলের ইতিহাস সবচেয়ে পুরাতন। কোন বিদেশী প্রেসিডেন্ট যখন চীন সফর করেন তখন তিনি সাধারণত পেইচিং হোটেলে থাকেন। চীনের বড় বড় বৃহত্তম শহরেও ২০টিরও বেশী পাচ তারকা শ্রেণীর হোটেল আছে। এগুলো পাচ তারকা শ্রেণীর হোটেলের মধ্যে সাংহাই আন্তজার্তিক হোটেল, চিনচিয়াং হোটেল সবচেয়ে পুরাতন। নয়া চীন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে এ দুটো হোটেল নিমির্ত হয়। গত শতাব্দীর ৩০ দশকে সাংহাই আন্তর্জাতিক হোটেল নির্মিত হয়। তখন এই হোটেলকে ' দূর প্রাচ্যের' প্রথম হোটেল বলে গণ্য করা হত। এই হোটেল মোট ২৪ তলা। গত সত্তর বছরেও বেশী সময়ের মধ্যে এই হোটেল কয়েক বার সংস্কার করা হয়েছে। সাংহাই আন্তজার্তিক হোটেলকে সারা চীনের সবচেয়ে পুরাতন হোটেল বলে গণ্য করা হয়। পেইচিং ও সাংহাই ছাড়া, চীনদেশে আরও অনেক পাচ তারকা শ্রেণীর হোটেল আছে। সুতরাং এ সব হোটেলের মধ্যে কোনটি চীনের সবচেয়ে বড় হোটেল এই প্রশ্নের উত্তর দেয়া সত্যিই কঠিন। প্রত্যেক হোটেলের বৈশিষ্ট্য আছে। তাদের মধ্যে পাথর্ক্য করা একটু কঠিন।
কিশোরগঞ্জ জেলার শ্রোতা আশরাফুল ইসলাম তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনে বসবাসরত সুসলিম জনগোষ্ঠির সংখ্যা কত? চীনের কোন প্রদেশে সবচেয়ে বেশী মুসলিম বসবাস করে? চীনে কত মসজিদ আছে? উত্তরে বলছি, চীনের হুই , উইগুর, কাজাক, উজবেক, তাজিক, তাতার , কিরগিজ, ডোংসিয়াং, সালার, এবং বোনান-এই দশটি সংখ্যালঘু জাতির মধ্যেই ইসলাম ধমার্বলবীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেসী। চীনে পাঁচটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল আছে। এ পাঁচটি অঞ্চলের মধ্যে নিংসিয়া হুই স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ও সিনজিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে অধিকাংশ অধিবাসী হল মুসলমান। পরিসংখ্যা অনুযায়ী, নিংসিয়া হুই স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে মসলিমের সংখ্যা সবচেয়ে বেশী। একটি সূত্রে জানা গেছে , বতর্মানে চীনে ৩৬ লাখেরও বেশী মুসলমান আছে। চীনের সরকার ধমীর্য় স্বাধীনতার নীতি অনুসরণ করে বলে মুসলমানদের যাবতীয় ধমীর্য় কার্যক্রম পালন ও অনুষ্ঠান উদযান সুনিশ্চিত রয়েছে। চীনা মুসলমানেরা অবাধে তাঁদের ধমীর্য় উত্সব ও তাঁদের নিজস্ব আচার-আচরণ ও রীতি-নীতি পালন করতে পারেন।
চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে অনেক মসজিদ আছে। পেইচিং, সাংহাই ইত্যাদি শহরে , গুয়াংডোং, ফুজিয়ান, যেজিয়াং, সেনসী ও শানসী প্রদেশে এবং সিনজিয়াং উইগুর ও নিংসিয়া হুই স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে অনেক নামকরা মসজিদ আছে। পেইচিংয়ের ডোংসি মসজিদ তৈরী হয়েছিল ৫০০ বছর আগে। এই মসজিদ দু বার মেরামত করার ফলে নতুন করে রুপ পেয়েছে। ডোংসি মসজিদের বড় হলঘাটিতে পাঁচ শোরও বেশী লোক এক সঙ্গে নামাজ পড়তে পারে। প্রতি বছর ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার সময়ে চীনের মুসকানরা এবং পেইচিংস্থ পৃথিবীর বিভিন্ন মুসলিম দেশের রাষ্ট্রদূত, অন্যান্য কূটনীতিক, বিশেষজ্ঞ, ও শিক্ষার্থীরা এই মসজিদে সমবেত হয়ে ঈদের নামাজ পড়েন। বলাবাহুল্য এই মসজিদে মুসমানদের নিয়মিত ধমর্কর্ম ও নামাজ স্বাভাবিকভাবেই অনুষ্ঠিত হয়।
|