v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-11-14 14:03:34    
চীন-আফ্রিকা মৈত্রীর প্রচারিত বিশেষ প্রতিনিধিঃ জু মিং ইং

cri
    যে গান আপনারা শুনছেন, সেই গান হলো কঙ্গোর "ই য়া য়া ও লে ও" নামক একটি গান। এটি একটি বৈশিষ্টময় আফ্রিকান গান, কিন্তু গায়িকা হলেন চীনের একজন বিখ্যাত গায়িকা ও নৃত্য শিল্পী জু মিং ইং। বিংশ শতাব্দীর সত্তর দশক থেকে জু মিং ইং অনেক আফ্রিকান, এশিয় ও লাতিন আমেরিকান গান গেয়েছেন। তার নৃত্যের ভঙ্গিতে গান গাওয়ার শিল্পরূপ অনেক দর্শকেরই খুব পছন্দ।

    ১৯৬৬ সালে জু মিং ইং পেইচিং নৃত্য ইন্সটিটিউটের পড়াশোন শেষ করে চীনের বিখ্যাত নৃত্য সংস্থা "প্রাচ্য গান ও নৃত্য গ্রুপে" যোগ দিয়েছেন। ১৯৭৯ সালের একটি অভিনয় অনুষ্ঠানে জু মিং ইং তার ত্বকে কালো রং মেখে আফ্রিকার বৈশিষ্টময় কাপড় পরে নাচতে নাচতে একটি আফ্রিকান গান গেয়েছেন। তার নৃত্যের সঙ্গে সংগীত পরিবেশনা সারা চীনে খুব জনপ্রিয় হলো। জু মিং ইং বলেছেন:

    "আমার বয়স একটু বেশী হলেও নতুন জ্ঞান অর্জন করতে পারি খুব তাড়াতাড়ি। শেখায় শুধু আগ্রহই যথেষ্ট নয় মনোযোগও দিতে হবে গভীরভাবে। দীর্ঘ দিন ধরে নৃত্য শেখার কারণে আমি সংগীতের বৈশিষ্ট্যগুলো সহজেই ধরতে পারি। পরে আমি বুঝতে পেরেছি দর্শক শ্রোতারা কেন আমার অভিনয় পছন্দ করে, কারণ তারা নাচতে নাচতে গান গাওয়ার শিল্পরূপটাকেই পছন্দ করে।"

    তার সংগীতের অনুরক্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই তাকে উত্সাহ দিয়েছিলেন। চৌ এন লাই তাকে বিদেশী ভাষা শেখারও প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তারা শুধু শিল্পী নন বরং কূটনীতিক। তাদের সংগীত ও অভিনয়ের মাধ্যমে চীনা জনগণ এবং এশিয়া ও আফ্রিকান জনগণের সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান জোরদার হবে। তখনকার "প্রাচ্য গান ও নৃত্য গ্রুপে" কেউ নাচের সঙ্গে গান গাইতে পারতো না। জু মিং ইং মনে করেন যদি তিনি নিজেই বিদেশী ভাষা বলতে পারেন এবং গান গাইতে পারেন তাহলে সুবিধা হবে। সুতরাং তিনি গান গাওয়া ও বিদেশী ভাষা শিখতে শুরু করলেন। আমাদের আন্তর্জাতিক বেতারে আফ্রিকার ভাষা বিভাগ আছে বলে তিনি সব সময় আমাদের বেতারে এসে সওয়াহিলিসহ আফ্রিকার ভাষা শিখতেন।

    এমনিভাবে পাঁচ বছরেই তিনি ২০টি ভাষায় এক'শটিরও বেশি গান গাইতে পেরেছেন। সংগীত ও নৃত্যের জন্য তিনি খুব জনপ্রিয় হয়েছেন। চীন ছাড়াও তিনি বহুবার এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে গিয়ে নৃত্যের সঙ্গে সংগীত পরিবেশন করেছেন।

    বিদেশে অনুষ্ঠান পরিবেশনার সময় তিনি স্থানীয় দর্শকদের আন্তরিক অভিনন্দন পেয়েছেন। মিশরে তিনি স্থানীয় একটি জনপ্রিয় গান "পাইসপুসা" গেয়েছেন। "পাইসপুসা" একটি স্থানীয় মিষ্টির নাম। এবারের পরিবেশনা তার মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। তিনি বলেছেন:

    "মিশরে আমি সংগীত পরিবেশনের পর আর মঞ্চ থেকে নামতে পারি নি। দর্শকরা ৩২ বারের বেশী হাততালি দিয়েছে এবং অনেকেই আমাকে জড়িয়ে ধরেছেন। পরে তারা আমাদের গ্রুপের সবার জন্য একটি টেবিলের চেয়েও বড় পাইসপুসা তৈরী করেছে। তারা আমাদের গ্রুপকে "পাইসপুসা" বলে ডাকে।"

    আফ্রিকার জনগণের কাছ থেকে জু মিং ইং অনেক উত্সাহ পেয়েছেন। তিনি আরো ভালোভাবে আফ্রিকানের নাচ গান শিখতে চান। কিন্তু তখন আফ্রিকায় এধরনের কোন স্কুল ছিলো না। তিনি শুনেছেন যুক্তরাষ্ট্রে আফ্রিকা বিষয়ক একটি স্কুল আছে। তিনি তার আগ্রহ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সংগীত গ্রুপের কাজ ছেড়ে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করতে চলে যান।

    ১৯৮৫ সালে জু মিং ইং যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি শ্রেষ্ঠ সংগীত স্কুলের মধ্যে একটি-বার্কলি কলেজ অব মিউজিকে ভর্তি হলেন। তিনি আফ্রিকার সংগীত, আফ্রিকার সংগীতের ইতিহাস ও মার্কিন সংগীতের ইতিহাস ইত্যাদি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। পড়াশোনার পর আফ্রিকার সংগীত সম্পর্কে জু মিং ইংএর আরো স্পষ্ট ধারণা গড়ে উঠেছে।

    "আমি মনে করি, আফ্রিকা হলো শিল্পকলার একটি উত্স স্থান। আফ্রিকার সংগীত সহজ হলেও বিভিন্ন রকমের সংগীতের সঙ্গে মিলে ভিন্ন রূপে দেখা দেয়। আমি এখন চিন্তা করছি যে কিভাবে আফ্রিকার গান চীনা গানের সঙ্গে সংমিশ্রন করা যায়। যদি এই দুটি শিল্পরূপ সংমিশ্রন করা যায় তাহলে সম্ভবত পৃথিবীর সব চেয়ে জনপ্রিয় গান সৃষ্টি করা সম্ভব হবে।"