v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-11-13 15:54:18    
তালিবান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পাঁচ বছর পর আফগানিস্তান কেন এখনও যুদ্ধে নিমজ্জিত ?(ছবি)

cri
 

    চলতি বছরের নভেম্বর মাসের ১৩ তারিখে তালিবানদের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পাঁচ বছর পূর্ণহবে। কিন্তু আজ পযর্ন্ত আফগানিস্তানের পুর্নগঠন কাজের তেমন কোন বাস্তবায়ন হয়নি বরং পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে । বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, আফগান জনসাধারণের জীবিকা ও জীবন ধারা ব্যবহত হয়েছে বলে পরিস্থিতির এ অবনতিশীলতার কারন।

    আফগান যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর, কারজায়ি সরকার বিশ্ব সম্প্রদায়ের সহযোগিতায় সংবিধান প্রণয়ন করেছে এবং প্রেসিডেন্ট ও সংসদের নির্বাচন সাফল্যজনকভাবে আয়োজন করতে পেরেছে। যার ফলে আফগানিস্তানের রাজনৈতিক জীবন স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। এর সঙ্গে সঙ্গে আফগানিস্তানের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্যে বিশ্ব সম্প্রদায় কারজায়ি সরকারকে কয়েক বিলিয়ন মার্কিন ডর্লারের আর্থিক সাহায্য দিয়েছে। কিন্তু এ সব সাহায্য সত্বেওব্যাপক আফগান জনসাধারণ বেশী উপকৃত হয়নি। আফগানিস্তানের কোন কোন অঞ্চল এখনও বিশ্বের সবচেয়ে গরীব জায়গা। চার জন আফগান শিশুর মধ্যে এক জন শিশু পাঁচ বছর পযর্ন্তবাঁচতে পারে না। রাজধানী কাবুলের কয়েকটি উচু অট্টালিকা ছাড়া, অধিকাংশ আফগান মানুষ এখনও কাঠ অথবা মাটির তৈরী ঘরে বাস করে। রাজধানী কাবুল ছাড়া, আফগানিস্তানের অন্যান্য অঞ্চলে সহিংস তত্পরতা মাঝে মাঝে দেখা যায়। আফগানিস্তানের দক্ষিণাংশের ক্যাংডাহারে প্রতিদিন বিদ্যুত সরবরাহ মাত্র তিন ঘন্টা। ক্ষুধা , অসহায়তা অধিকাংশ আফগান নাগরীকের এখন সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে।

    তালিবান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ৪৭ লাখ আফগান শরর্ণাথী নতুন আশা নিয়ে ইরান ও পাকিস্তান থেকে স্বদেশে ফিরে এসেছেন। কিন্তু পাঁচ বছর পার হয়ে গেলেও, আফগানিস্তানের সাধারণ মানুষের জীবনে কোন পরিবর্তনের লক্ষণ দেখা দেয়নি। আফগানিস্তানের বতর্মান সরকারের অভ্যন্তরে ভীষণ দুনীর্তি চলছে।

    অন্য দিকে তালিবান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর, যুক্তরাষ্ট্র কেবল আল কায়েদার রেতাকে ধরার জন্য মাথা ঘামিয়েছে । তারা চার দিকে পালিয়ে যাওয়া হাজার হাজার তালিবান জঙ্গীব্যাপারেঅবহেলা করেছে। সুতরাং তালিবানের এ সব অবশিষ্টাংশ আবার পাল্টা আক্রমণের সুযোগ পেয়েছে। গত বছরের শুরু থেকে এ পযর্ন্ত তালিবানের সহিংসতার সংখ্যা ও মাত্রা বেড়েছে। গত মাসে মার্কিনরাজনৈতিক বিষয়ক উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোলাস বানর্স বলেছেন, তালিবানরা আফগান সরকারের উপর কৌশলগত হুঁমকি সৃষ্টি করবে না। কিন্তু পযর্বেক্ষকদের ধারণা ভিন্ন। তারা বলেছেন, প্রথমে তালিবানের সংখ্যা খুব কম ছিল। তারা কেবল পাক-আফগান সীমান্তদখল করত। যখন তারা ক্ষমতাসীন তখন তাদের সামরিক শক্তি ততটা শক্তিশালী ছিল না এবং জনগণের মধ্যে ততটা জনপ্রিয় ছিল না। কিন্তু তারা যুদ্ধ ও দুর্নীতির বিরোধীতা করে আফগান জনগণের জন্যে একটি অপেক্ষাকৃত স্থিতিশীল সামাজিক পরিবেশ যুগিয়ে দিয়েছিল। তাই, যদি আফগান সরকার ভালভাবে জনসাধারণের জীবিকা সমাধান করতে না পারে তাহলে তালিবানের শক্তি সম্ভাবত ধীরে ধীরে বাড়বে।

    উপরন্তু আফগানিস্তানের প্রতি বিশ্ব সম্প্রদায়ের সাহায্যের পদ্ধতিও প্রশ্নসাপেক্ষ। পরিসংখ্যাণ অনুযায়ী, ২০০২ সাল থেকে এ পযর্ন্ত, আফগানিস্তাকে বিশ্ব সম্প্রদায় যে সব অর্থ দিয়েছে এ সব অর্থের মধ্যে ৮২. ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আফগানিস্তানের সামরিক ব্যায়ে ব্যাবহার করা হয়েছে। আফগানিস্তানের দারিদ্রতা রোধ ও উন্নয়ন প্রকল্পে মাত্র ৭. ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার্র দেয়া হয়েছে। সম্ভাবত এ থেকে বুঝা যায় যে, কেন আফগান জনগণের জীবন এখনোউন্নত হয়নি।

    বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, আফিম চাষের ব্যাপারে সরকার যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তা ঠিক কি না প্রশ্নসাপেক্ষ। তালিবান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পাচ বছর পর , আফগানিস্তানের পরিস্থিতি উন্নত না হওয়ার প্রধান কারণ এই যে, কেবল আল কায়েদা এবং তালিবানের উপর আঘাত করা যথেষ্ট নয়, আফগান জনসাধারণের সঙ্গে জড়িত মৌলিক স্বার্থের উপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। নইলে আফগানিস্তানের চঞ্চাল্যময়পরিস্থিতিকবে শেষ হয়ে যাবে বলা বড় কঠিন ব্যাপার।