১২ নভেম্বর চীনের গণতান্ত্রিক বিপ্লবের মহান অগ্রনী ও মহান দেশপ্রেমিক সান ইয়াত সেনের ১৪০তম জন্মবার্ষিকী । এ উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মারণ অধিবেশনে চীনের প্রেসিডেন্ট হুচিনথাও এক ভাষণ দিয়েছেন । সান ইয়াত সেনের রেখে যাওয়া ব্রত বাস্তবায়নের জন্যে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে চীনা জনগণ অক্লান্তভাবে সংগ্রাম চালিয়ে যে মহা সাফল্য অর্জন করেছেন প্রেসিডেন্ট হু চিনথাও তাঁর ভাষণে তা এবং চীনা জনগণের করণীয় ঐতিহাসিক কর্তব্য সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন । চীনের স্বাধীন তাইওয়ান পন্থীদের অপপ্রয়াসের বিরোধিতা করা এবং মাতৃভূমির একীকরণ রক্ষা করার অভিমত ও দৃঢ়সংকল্পের কথা তিনি গম্ভীরভাবে আবার ঘোষণা করেছেন ।
১৮৬৬ সালের ১২ নভেম্বর চীনের কুয়াংতুঙ প্রদেশে জনাব সান ইয়াত সেনের জন্ম হয় । তাঁর জীবিত কাল এমন এক সময় ছিল , সে সময় চীন সাম্রাজ্যবাদের আক্রমণে আক্রান্ত এবং চীনা জনগণ সামন্ত্রতান্ত্রিক শাসনের অঠান ছিল । যৌবনকালেস্বচোখে চীনা জনগণের দুঃখদুর্দশা দেখে তার দেশ ও জনগণকে বাঁচানোর মহত মনোভাব জাগে । ১৮৯৪ সালে তিনি চীন সমৃদ্ধিকরষ সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন । তার নেতৃত্বে ১৯১১ সালে সিনহাই বিপ্লবের মাধ্যমে ছিং রাজবংশের শাসন উচ্ছেদ হওয়ায় চীনে কয়েক হাজার বছর ধরে স্থায়ী সামন্ততান্ত্রিক শাসনের অবসান হয়েছে । এটা চীনা জনগণ ও চীন জাতির জন্যে সান ইয়াত সেনের এক ঐতিহাসিক তাত্পর্যসম্পন্ন অবদান ।
১২ নভেম্বর তার ১৪০তম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সভায় প্রেসিডেন্ট হুচিনথাও ভাষণে বলেছেন , মাতৃভূমির একীকরণ বাস্তবায়ন করা যেমন চীন জাতির স্বার্থের তেমনি গোটা চীনা জাতির এক অভিন্ন আশা আকাঙ্ক্ষা । তিনি বলেছেন , ---১--- আজ যখন আমরা সান ইয়াত সেনের প্রস্তাব পুনরায় স্মরণ করি তখন আমরা তাঁর মাতৃভূমির একীকরণ রক্ষার গুরুত্বপূর্ণ তাত্পর্য ভাল করে বুঝতে পারি । তাইওয়ান প্রণালীর দুপারের অধিবাসী একই পরিবারের মানুষ । শান্তিপূর্ণ একীকরণ এবং মাতৃভূমিকে সমৃদ্ধকরণ করা তাইওয়ানবাসী সহ চীন জাতির দীর্ঘকালের উন্নয়নের উপকারী । তাই এটা দুপারের এক অভিন্ন লক্ষ্য হওয়া উচিত । আমরা দৃঢ়তার সংগে স্বাধীন তাইওয়ান পন্থীদের ও তাদের তত্পরতার বিরোধিতা করি । আমরা কাউকে যে কোনো পদ্ধতিতে তাইওয়ানকে মাতৃভূমিক কাছ থেকে চ্ছিন্ন করতে কোনোমতেই অনুমোদন করতে দেব না ।
হু চিনথাও বলেছেন , দুপারের চীনাদের এক চীন নীতিতে চীন জাতির মৌলিক স্বার্থ ও দুপারের জনগণের কল্যানের ভিত্তিতে আন্তরিকভাবে পরস্পরকে ব্যবহার করতে হবে ,আন্তরিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ও সহযোগিতা করে দুপারের সম্পর্ককে জোরদার করে মাতৃভূমির শান্তিপূর্ণ একীকরণ ত্বরান্বিত করতে হবে ।
চীনা জাতির স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও জনগণের সুখী জীবনের জন্যে এবং রাষ্ট্রের একীইকরণ বাস্তবায়নের জন্যে সান ইয়াত সেন যে সারা জীবন ধরে যে অক্লান্ত সংগ্রাম করেছেন হু চিনথাও তাঁর ভাষণে গভীরভাবে সে কথা স্মরণ করেছেন ।
১৯২৫ সালে রোগে আক্রান্ত হওয়ায় সান ইয়াত সেন মৃত্যুবরণ করেন । হু চিনথাও বলেছেন , চীনা কমিউনিস্টরা সান ইয়াত সেনের বিপ্লবী কার্যক্রমের দৃঢ়তম সমর্থক , ঘনিষ্ঠতম সহযোগী এবং বিশ্বস্ততম উত্তরাধিকারী । তিনি বলেছেন , সান ইয়াত সেনের মৃত্যুর পর আমরা চীনা কমিউনিস্টরা তার রেখে যাওয়া কাজ নিয়ে সারা দেশের বিভিন্ন জাতির জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে নয়া গণতান্ত্রিক বিপ্লবের বিজয় অর্জন করেছি , জাতির স্বাধীনতা ও গণ মুক্তি বাস্তবায়ন করে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা স্থাপন করেছি, ব্যাপকভাবে সমাজতান্ত্রিক নির্মাণ কাজ চালিয়েছি । বিশেষ করে সংস্কার ও উন্মুক্ততার নীতি চালু হওয়ার পর সর্বজনিত বিরাট সাফল্য অর্জন করেছি । যার ফলে চীনের অবস্থা এখন আকাশ পাতাল পরিবর্তন হয়েছে ।
সভায় চীনের জনগণের রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের চেয়ারম্যান চিয়া ছিংলিনও ভাষণ দিয়েছেন । তিনি বলেছেন , ---৩--- জনগণ ও গোটা বিশ্বের জন্যই কাজ করা সহ সান ইয়াত সেনের নানা নিঃস্বার্থ মনোভাবকে আমাতদের শিখতে হবে এবং তা সম্প্রসারিত করতে হবে । আমরা বিশ্বাস করি যে , দেশবিদেশে বসবাসকারী চীনা সন্তানরা হাতেহাত মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাতৃভূমির একীকরণ বাস্তাবায়ন করবেন । চীন জাতি মানবজাতির শান্তি ও উন্নয়নের জন্যে এক নতুন , মহান ও কল্যাণকর অবদান রাখবেন ।
|