v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-11-10 15:30:27    
চীনের হেইলুংচিয়াং প্রদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের দু হাজারেরও বেশি স্নাতক ছাত্র নিজ নিজ দেশের বাড়িতে ফিরে গেছে

cri
    উত্তর-পূর্ব চীনের হেইলুংচিয়াং প্রদেশের " গ্রামে গ্রামে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের পরিকল্পনার" অধীনে প্রথম ছাত্রদের সমাবর্ত্তন অনুষ্ঠান গত ১০ জানুয়ারী প্রাদেশিক রাজধানী হারপিনতে অনুষ্ঠিত হয় । এ পর্যন্ত এ প্রদেশের বিভিন্ন স্থানের গ্রামগুলো থেকে আসা প্রথম কিস্তির ২ হাজার ১৫৭জন গ্রামীন ছাত্র বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে দুবছরব্যাপী লেখাপড়া শেষ করে গ্রামাঞ্চলের অর্থনৈতিক গঠনকাজ ও সামাজিক বিকাশের পরিসেবার জন্যে নিজ নিজ দেশের বাড়িতে ফিরে যাবে । আককের অনুষ্ঠানে এ সম্পর্কে কিছু বলছি আমি শি চিং উ ।

    ২০০৩ সালে হেইলুংচিয়াং প্রদেশের এক জরীপ থেকে দেখা গেছে , এ প্রদেশে গ্রামাঞ্চলের সুযোগ্য ব্যক্তিদের দারুণ অভাব রয়েছে । প্রদেশটির ৯ হাজার ৫১৭টি গ্রামে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষাপ্রাপ্ত একজনও কারিগর নেই বলা চলে ।

    এ অবস্থার প্রেক্ষাপটে গ্রামাঞ্চলের অর্থনৈতিক গঠনকাজ ও সামাজিক বিকাশে প্রয়োজনীয় সুযোগ্য ব্যক্তিদের গড়ে তোলার জন্যে হেইলুংচিয়াং প্রাদেশিক সরকার সারা দেশে সর্বপ্রথমে " গ্রামে গ্রামে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের পরিকল্পনার" সূচনা করে । এ পরিকল্পনা অনুসারে ২০০৪ সাল থেকে হেইলুংচিয়াং প্রদেশে প্রতিবছর বিশেষ পেশার প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় আড়াই উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল থেকে স্নাতক আড়াই হাজার ছাত্রকে ভর্তি করে থাকে যাতে আগামী ৫ বছরের মধ্যে প্রতিটি গ্রামে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের থাকার লক্ষ্য বাস্তবায়িত হয় । এসব ছাত্র বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সময় স্থানীয় জেলা সরকারের সংগে নিজ নিজ গ্রামে ফিরে যাওয়া সম্পর্কে চুক্তি স্বাক্ষর করে । এভাবে তারা গ্রাম থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার পর আবার নিজেদের গ্রামে কাজ করতে ফিরে যায় ।

    হেইলুংচিয়াং প্রদেশের শিক্ষা বিভাগের সংগঠনে এ পরিকল্পনাধীন উত্তর-পূর্ব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় , হেইলুংচিয়াং ১লা আগস্ট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রভৃতি ১০টি কৃষি বিষয়ক বিশ্ববিদ্যালয় সুপরিকল্পিতভাবে বর্তমান গ্রামীন অর্থনীতির জরুরী প্রয়োজনীয় পশুপালন , পশু চিকিত্সা , কৃষি বিদ্যা , পুষ্প-উদ্যান , মত্স চাষ ও কৃষি যন্ত্রপাতি বিভাগ খুলেছে ।

    গ্রামাঞ্চল থেকে আসা এসব ছাত্র লেখাপড়ার এ দুর্লভ সুযোগকে সযত্নে রেখেছেন এবং পড়াশোনার ওপর বিশেষ মনোনিবেশ দিয়েছেন । সুয়াং ইয়া শান শহরের সিন ই গ্রামের কৃষক ছুয়ান চিয়া হুই ১০ বছর আগে দারিদ্র্যের দরুণ লেখাপড়া ছেড়ে দিয়েছিলেন । ২০০৪ সালে তিনি উত্তর-পূর্ব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবহারিক প্রযুক্তি বিদ্যালয়ের পশুপালন ও রোগ নিবারণ বিভাগে ভর্তি হন । তিনি বলেছেন , আগে গরীব বলে আমি স্কুলে লেখাপড়ার সযোগ হারিয়েছিলাম । আমার মত অবস্থগ্রামে আবার দেখা দিক , আমি তা দেখতে চাই না । আমার আদর্শ হচ্ছে গ্রামবাসীদের সম্পন্ন করে তোলা । জানা গেছে , ছুয়ান চিয়া হুই তাঁর গ্রামে একটি শিক্ষাকোর্স চালু করেছেন । তিনি বিনাপয়সায় নিজের শিখে নেয়া জ্ঞান গ্রামবাসীদের শিখে দিতে চান ।

    বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষক ছাত্ররা কৃষক ও বিশেষজ্ঞদের মধ্যে যোগাযোগের সেতু স্থাপন করেছেন । ৩৭ বছর বয়সের উ ফোং সুয়ে প্রথম কিস্তির গ্রামে গ্রামে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের পরিকল্পনার সুবাদে লেখাপড়া করেছেন । তিনি হারপিন শহরের তুং সিং গ্রামের একজন কৃষক ছিলেন । তিনি উত্তর-পূব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবহারিক বিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন । দেশের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পর তিনি জানতে পারলেন , কৃষি উত্পাদনের ব্যাপারে কৃষকদের অনেক সমস্যা সমাধান করতে পারেন না । তিনি যথাসময় এসব সমস্যা ব্যাবহারিক বিদ্যালয়ের কাছে পেশ করলেন । ২০০৫ সালের এপ্রিল মাসে এ বিদ্যালয়ের দশ বারোজন বিশেষজ্ঞ তুং সিং গ্রামে গিয়ে বিনাপয়সায় গ্রামবাসীদের জন্যে কৃষি উত্পাদনের ক্ষেত্রে পরিমর্শমূলক পরিসেবা দিয়েছেন । এটি গ্রামবাসীদের মধ্যে সমাদর পেয়েছে ।

    এ বছর থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত হেইলুংচিয়াং প্রদেশ এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে যথাক্রমে বিভিন্ন স্থানের গ্রামাঞ্চলের জন্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি , শিক্ষা ও চিকিত্সা কর্মীদের সরবরাহ করবে ।

    শি হাই ইয়ান পূর্ব চীনের চে চিয়াং প্রদেশের ইয়ুং হো জেলার হুয়াং চিয়া শে গ্রামে বসবাস করেন । তিন বছর আগে তিনি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল থেকে স্নাতক হন। তার সহপাঠীদের মত তিনিও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাইলেন । তবে তার পরিবারের খারাপ অবস্থার দরুণ তিনি পিছ পা হলেন । তারপর তিনি তিন বছর ধরে চাকরি করেন ।

    ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শি হাই ইয়ান জানতে পারলেন , চে চিয়াং বন ইন্সটিটিউট ছাত্রদের ভর্তি করবে । ইন্সটিটিউট কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের কাছ থেকে সমস্ত ফি মওকুফ করবে । তিনি সংগে সংগে এ ইন্সটিটিউটে ভর্তি হওয়ার জন্যে দরখাস্ত করলেন । তারপর তিনি কাজ করার পাশাপাশি লেখাপড়া শুরু করলেন। তিনি শরতকালে জাতীয় পরীক্ষায় অংশ নিলেন এবং দেড় শ' ছাত্রদের মধ্যে ভালো ফল লাভ করলেন ।

    বাস্তবে শি হাই ইয়ানের মত চে চিয়াং প্রদেশ অনুন্নত অঞ্চলের ৯৪জন তরুণ কৃষক চে চিয়াং বন ইন্সটিটিউটে লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছেন । এসব ছাত্রকে লেখাপড়ার ফির জন্যে মাথা ঘামাতে হবে না । কেন না , স্থানীয় সরকার তাদের যাবতীয় ফি মওকুফ করেছে ।