গত ১৫ জুন মাসে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার সদস্য দেশগুলোর ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা আগে সাংহাই পাঁচ দেশ ব্যবস্থা নামে পরিচিত ছিলো। গত শতাব্দীর ৮০ দশকের শেষ দিকে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটির এক পক্ষে ছিল চীন এবং অন্য পক্ষ ছিল রাশিয়া, কাজাখস্তান, কির্গিজিস্তান, তাজিকিস্তান। এই সংস্থার লক্ষ্য হল সীমান্ত অঞ্চলে আস্থা ও নিরস্ত্রীকরণ সংক্রান্ত আলোচনার প্রক্রিয়া জোরদার করা।
২০০১ সালের ১৪ জুন সাংহাই পাঁচ দেশ ব্যবস্থার সদস্য দেশগুলোর নেতৃবৃন্দরা উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাংহাইয়ে বৈঠক করেন। তাঁরা যৌথ বিবৃতি স্বাক্ষর করেন যে, উজবেকিস্তান এই ব্যবস্থায় যোগ দিবে। তারপর, ছয়টি দেশের নেতৃবৃন্দরা মিলিতভাবে 'সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা প্রতিষ্ঠানের ঘোষণা' প্রকাশ করেন। এ পর্যন্ত সাংহাই পাঁচ দেশ ব্যবস্থার ভিত্তিতে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়।
সাংহাই সহযোগিতার প্রধান লক্ষ্য ও দায়িত্ব হল: সদস্য দেশগুলোর পরস্পরের আস্থা ও প্রতিবেশী মৈত্রী জোরদার করা। আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা সুরক্ষা ও জোরদার করা, মিলিতভাবে সন্ত্রাসবাদ, বিছিন্নতা, চরমপন্থী, মাদকদ্রব্যের পাচার, অবৈধ্য অস্ত্র বিক্রী ও অন্যান্য আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমন করা। আর্থ-বাণিজ্য ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতা করা ইত্যাদি। সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা জোট নিরপেক্ষ, অন্য দেশ ও সংস্থার মুখাপেক্ষী না হওয়া ও বিশ্বের কাছে উন্মুক্ত হওয়ার নীতিতে অবিচল থাকে। সাংহাই সহযোগিতার লক্ষ্য ও নীতি হল যে, 'পরস্পরের আস্থা, কল্যান, সমতা, আলাপ-আলোচনা, বহুপক্ষীয় সংস্কৃতি সম্মান করা ও যৌথ উন্নয়নে সহযোগিতা করা'।
বর্তমানে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থায় দেশের নেতৃবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী সম্মেলনের ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের নেতৃবৃন্দ পরিষদ হল সর্বোচ্চ নেতৃস্থানীয় সংস্থা। প্রতি বছরে একবার নেতৃবৃন্দ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সচিবালয় ও আঞ্চলিক সন্ত্রাসী দমন সংস্থা হল সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার দু'টি স্থায়ী সংস্থা। সচিবালয় পেইচিংয়ে অবস্থিত। বর্তমান মহাসচিব চীনের চাং দেকুয়াং। সন্ত্রাসী দমন সংস্থা উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দে অবস্থিত।
বর্তমানে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা রাজনীতি, নিরাপত্তা, অর্থনীতি ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের সহযোগিতা জোরদার করছে।
মঙ্গোলিয়া, পাকিস্তান, ইরাক ও ভারত সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার পর্যবেক্ষক হয়েছে।
|