v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-11-08 19:48:10    
আফগানিস্তানে জাতি সংঘ শান্তি রক্ষী পুলিশ বাহিনীর চীনা লোক

cri
    আফগানিস্তানের যুদ্ধের অবসানের পর ৪ বছর পার হয়ে গেছে । গত ৪ বছরে আফগান সরকার ও জনগণের প্রচেষ্টায় আফগানিস্তানের শান্তি পুনপ্রতিষ্ঠায় বিরাট সাফল্য পাওয়া গেছে । আফগান জনগণ ভুলতে পারেন না যে, এসব সাফল্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন ও সাহায্যের সংগে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত রয়েছে । বিশেষ করে আফগানিস্তানের শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে জাতি সংঘ শান্তি রক্ষী পুলিশ বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে । আজকের অনুষ্ঠানে এ সম্পর্কে কিছু বলছি আমি শি চিং উ ।

    জাতি সংঘ শান্তি রক্ষী পুলিশ বাহিনীতে কর্মরত চীনা পুলিশেরা আফগান জনগণের মনে গভীর রেখাপাত করেছে ।

    এখানকার নিরাপত্তা জোরদার করার জন্যে জাতি সংঘ শান্তি রক্ষীপুলিশ বাহিনী আফগানিস্তানে এসেছে । আমাদের দেশে নিরাপত্তা নিশ্চিত হলেই কেবল পুনর্নির্মাণ সহ বিভিন্ন কাজকর্ম অবাধে চলতে পারবে । আমি বলতে চাই , জাতি সংঘ শান্তি রক্ষী বাহিনীতে কর্মরত চীনা পুলিশেরা সত্যিই চমত্কার । নিসন্দেহে চীনের শান্তি রক্ষী পুলিশেরা অত্যন্ত ইতিবাচক ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে ।

    কাবুলের একজন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে আবদুল হাদি চীনের শান্তি রক্ষী বাহিনীর উচ্চ মূল্যায়ণ করেছেন । সম্প্রতি আমাদের সংবাদদাতা কাবুলে জাতি সংঘ উপদেষ্টার পদে নিযুক্ত চীনা পুলিশ কর্মকর্তা ছিউ ছুং ওয়েনের সংগে দেখা করেছেন ।

    ছিউ ছুং ওয়েনের বয়স ত্রিশের কাছাকাছি । চেহারা লম্বা না হলেও দেখতে মনে হয় তার শক্তি রয়েছে । জাতি সংঘ শান্তি রক্ষী বাহিনীর ইউনিফর্ম পরে তিনি খুব সতেজ রয়েছেন । তিনি আমাদের সংবাদদাতাকে বলেছেন , ২০০৫ সালের মে মাসে জাতি সংঘের অনুরোধে চীনের গণ নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় জাতি সংঘ পুলিশ বাহিনীতে উপদেষ্টা হিসেবে তাঁকে আফগানিস্তানে পাঠায় । তিনি সেখানে এক বছর ধরে কাজ করবেন । ছিউ ছুং ওয়েন এর আগেও জাতি সংঘ পুলিশ হিসেবে কাজ করেছিলেন । তিনি নিজের চোখে যুদ্ধের ধ্বংসাবশেষ ও দারিদ্র্যের দৃশ্য দেখেছেন । তা সত্ত্বেও যুদ্ধোত্তর আফগানিস্তান তাঁকে অবাক করে তুলেছে । তিনি বলেছেন ,

    বিমান থেকে নীচের দিকে তাকালে গোটা আফগানিস্তান প্রায় খালি । যখন বিমানটি কাবুলের আকাশসীমায় প্রবেশ করল , তখন আমি দেখতে পেলাম , কাবুল সম্পূর্ণই একটি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে । কাবুলে আসার পর আমার মনে প্রথম যে ছাপ ছিল , তা হলো মানব জাতি যেন কয়েক শতাব্দি ধরে পেছনের দিকে সরে গেছে ।

    জাতি সংঘ পলিশ বাহিনীর উপদেষ্টা হিসেবে ছিউ ছুং ওয়েনের প্রধান কর্তব্য হচ্ছে আফগানিস্তানের পুলিশের সংস্কার ও পুনর্গঠনে সহায়তা করা । পুনর্নির্মাণের অন্যান্য কাজের মত আফগানিস্তানের পুলিশের পুনর্গঠনের কাজও অত্যন্ত দুরুহ । তিনি বলেছেন ,

    পুলিশের সংস্কারও রাজনৈতিক পুনর্গঠনের এক অংগ । অন্যান্য গঠনকাজের মত এ ক্ষেত্রের সংস্কারও গোড়ার দিক থেকে শুরু করতে হবে । কেন না , কয়েক দশকের যুদ্ধের পর আফগানিস্তানে গোটা আইন ব্যবস্থা ও আইন প্রয়োগকারী ব্যবস্থা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ।

    ছিউ ছুং ওয়েন আমাদের সংবাদদাতাকে বলেন , আফগানিস্তানের শান্তি পুনপ্রতিষ্ঠার জন্যে এক স্থিতিশীল পরিবেশ সৃস্টি করতে হলে পুলিশের সংস্কার জরুরী হয়ে পড়েছে । সুসংগঠিত ও দক্ষ পুলিশ ব্যবস্থা গঠনের জন্যে আফগানিস্তানের পুলিশের বর্তমান অবস্থাকে প্রথমেই অনুধাবন করতে হবে । তিনি সন্ত্রাসমূলক আক্রমণের ঝুঁকি উপেক্ষা করে পূর্ব আফগানিস্তানের ৪টি প্রদেশের আনাচে-কানাচে ঘুরে ঘুরে দেখেছেন । বিপুল প্রাথমিক তথ্য পাওয়ার পর তিনি আফগান সরকার ও জাতি সংঘের কাছে বহু বাস্তবসম্মত প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন এবং বিভিন্ন স্থানের পুলিশ বিভাগের জন্যে বিরাট সংখ্যক পুলিশকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন । ছিউ ছুং ওয়েন প্রমুখ জাতি সংঘ পুলিশ উপদেষ্টাদের সাহায্যে আফগানিস্তানের পুলিশের সংস্কার ও পুনর্নির্মাণের কাজে বিরাট অগ্রগতি হয়েছে । সংস্কারের পর পুনর্গঠিত আফগান পুলিশ বাহিনী আফগানিস্তানের পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে । ছিউ ছুং ওয়েন বলেছেন ,

    জাতি সংঘ ও পুলিশের সংস্কার কাজে শরীক দেশগুলোর পরামর্শ ও সহায়তায় পুলিশের সংস্কারের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পাওয়া গেছে । এখন আফগানিস্তানে পুলিশের সংখ্যা ৫৪ হাজারে দাঁড়িয়েছে । তাদের অনেকে বিভিন্ন মাত্রায় বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়েছেন । তাছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন প্রাদেশিক পর্যায়েরে পুলিশ সংগঠনকে সুসংহত করা হয়েছে ।

    ছিউ ছুং ওয়েন বিশেষভাবে বলেছেন , ২০০৫ সালের সংসদ নির্বাচনে আফগান পুলিশ বাহিনী গুরুত্বপূণ ভূমিকা পালন করেছে ।

    আফগানিস্তানে জাতি সংঘ পুলিশ উপদেষ্টা হিসেবে ছিউ ছুং ওয়েনের কাজ আফগান সরকার ও জাতি সংঘের সংশ্লিষ্ট বিভাগের স্বীকৃতি পেয়েছে । ২০০৫ সালের অক্টোবর মাসে জাতি সংঘ তাঁকে জাতি সংঘ শান্তি পদকে ভুষিত করে ।

    ছিউ ছুং ওয়েনের কাজ আফগান জনগণের সম্মান লাভ করেছে ।তারা মনে করেন যে , তাঁর কাজ চীন-আফগান জনগণের মৈত্রীকে আরো জোরদার করেছে । এতে তিনি বিশেষভাবে আনন্দিত ও গর্বিত । তিনি বলেছেন ,

    আফগানিস্তান হচ্ছে চীনের প্রতিবেশী দেশ । আফগানিস্তানের পুনর্গঠনে সহায়তার জন্যে এখানে জাতি সংঘ শান্তি রক্ষী বাহিনীর মোতায়েন যেমন চীনের স্বার্থের সংগে , তেমনি আফগানিস্তান ও এ অঞ্চলের স্বার্থের সংগে সংগতিপূর্ণ । চীনাদের প্রতি আফগানীরা খুবই বন্ধুভাবাপন্ন । অনেক আফগানী আমাকে দেখলে ডাকতে থাকেন , চীন , পুলিশ । তারা খুবই অতিথিপরায়ণ ।

    সুপ্রতিবেশী দেশ হিসেবে চীন আফগানিস্তানের শান্তিপূর্ণ পুনর্গঠনের কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে । এ ক্ষেত্রে ছিউ ছুং ওয়েন তাঁর নিজের অবদান রেখেছেন । যেমন আফগানিস্তানে চীনা রাষ্ট্রদূত লিউ চিয়ান বলেছেন , আফগানিস্তানের পুনর্গঠনে চীনের সাহায্য আফগান জনগণের স্বীকৃতি লাভ করেছে । তিনি বলেছেন , চীন বহু উপায়ে আফগানিস্তানের পুনর্গঠনের কাজে অংশ নিয়েছে । আফগানিস্তানকে সমর্থন দেয়ার জন্যে আমরা রক্তও দিয়েছি । আফগানিস্তান মনে করে যে , চীনের সাহায্য দীর্ঘকালীন , নিস্বার্থ ও শর্তহীন । তাদের ভাষায় আমরা চীনকে আমাদের প্রতিবেশী হিসেবে পাশে পেয়ে গর্ববোধ করি ।