অনিদ্রা হচ্ছে বিভিন্ন লোকের একটি সাধারণ সমস্যা । সংশ্লিষ্ট পরিসংখ্যানে জানা গেছে, সারা পৃথিবীতে ১০ শতাংশ লোক অনিদ্রার সমস্যায় ভূগে থাকেন । ট বিশেষজ্ঞরা বলেন, অনিদ্রা স্নায়ুবিদ্যার এক প্রধান রোগে পরিণত হয়েছে । অনিদ্রা রোগীরা প্রধানত কম্পিউটার, প্রশাসন ও সংবাদমাধ্যমের কাজ করেন । তাঁদের উসৃঙ্খল জীবন কাটানো এবং বিরাট চাপের সম্মুখীন হওয়ার কারণে সহজে অনিদ্রা রোগে আক্রান্ত হন ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মনে করে ,অনিদ্রা হচ্ছে এক ধরনের রোগ যে মানুষ ভালোভাবে ঘুমুতে পারে না এবং কিছুটা ঘুম হলেও ঘুম থেকে উঠার পর অস্বত্তিকর মনে হয় । প্রত্যেক সপ্তাহে কমপক্ষে ৩ বার অনিদ্রা হয় এবং এক মাসেরও বেশি এ অবস্থা চলতে থাকে । অঘুম সাধারণ মানুষের জীবনে বিরূপ প্রভাব ফেলে ,কিন্তু এতে স্বাস্থ্যেরবেশি ক্ষতি হয় না । যুক্তরাষ্ট্রের ঘুম সমিতির চেয়ারম্যান ডক্টর থোমান রোথ তাঁর রিপোর্টে বলেছেন, গবেষণা থেকে জানা গেছে, দীর্ঘকাল ধরে অনিদ্রা চলতে থাকলে লোকেরা সহজে বিষন্নতায় আক্রান্ত হয়ে যাবে । একটি জরীপে দেখা গেছে যে, ৪০ বছর ধরে কয়েকজন অনিদ্রা রোগী এবং কয়েকজন স্বাভাবিকভাবে ঘুমানো মানুষের মধ্যে অনিদ্রা ক্রান্ত রোগীদের বিষন্নতা রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার স্বাভাবিকভাবে ঘুমানো লোকজনের চেয়ে তিন গুণ বেশি ।
এখন আমরা ঘুমানোর সময়ে কয়েকটি ভুল পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করবো।
১. বেডে চিন্তা-ভাবনা করা
শয়নকক্ষ শুধু ঘুমানোর জন্যে এ কক্ষে অন্যান্য কাজ করা ভালো নয় । ঘুমানোর ১৫ মিনিট আগে আপনারা কাগজে আপনাদের উদ্বেগের কথা ও সমাধানের উপায় লিখুন , যাতে ক্লান্তির পর ভালভাবে ঘুমানো যায় ।
২. সংখ্যা হিসাব করা
অনেক লোক মনে করেন ঘুমানোর সময় সংখ্যা হিসাব করা ঘুমের জন্য সহায়ক, কিন্তু তা একটি ভুল উপায় । সংখ্যা হিসাব করার সময় মানুষের মাথা উত্তেজিত হয়ে থাকে, ফলে স্বাভাবিক ঘুম হয় না ।
৩. ঘুমতে না পারলেও বেডে শুয়ে থাকা
বিছানায় শুয়ে থাকার সঙ্গে ঘুমানোর সম্পর্ক রয়েছে । যদি আপনার ঘুমানোর সময় খুব কম হয় , তাহলে দীর্ঘ সময় বিছানায় শুয়ে থাকবেন না । ঘুম ভাঙ্গার পর বিছানা ছেড়ে দিন । যদি ক্লান্ত লাগে তাহলে আবার বিছানায় ফিরে গিয়ে ঘুমাবেন ।
৪.সবসময় ঘুমের বড়ি খাওয়া
একটি নতুন পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, অনিদ্রা রোগীদের মধ্যে শুধু ৬ শতাংশ তাঁদের অনিদ্রার জন্য হাসপাতালে চিকিত্সা নেয় । ৭০ শতাংশ লোক অনিদ্রাকে এক ধরনের রোগ মনে করলেও কখনো চিকিত্সা করে না । অনেকে নিজে নিজেই ঘুমের বড়ি কিনে খান । কিন্তু সবসময় ঘুমের বড়ি খাওয়া শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকর । ঘুমের সময় যাদের শ্বাস-প্রশ্বাসে বাধা থাকে এমন কারোরই ঘুমের বড়ি খাওয়া ঠিক নয় । ওষুধ খেলে কেন্দ্রীয় স্নায়ু ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ ঠিক থাকে না । তা ছাড়া, বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ঘুমের বড়ি অনিদ্রা চিকিত্সা করার পাশা পাশি যদি দীর্ঘকাল ধরে খেতে থাকে তাহলে লোকেরা সহজভাবে ওষুধের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকবে । অনিদ্রা রোগীদের ডাক্তরের নির্দেশ অনুযায়ী ঘুমের বড়ি খাওয়া উচিত । নিজস্বভাবে ঔষধের দোকানে গিয়ে ঘুমের বড়ি কিনে খেলে বা বিরাট পরিমাণের ঘুমের বড়ি খেলে , সহজভাবে মাথাধরা ও হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে যাবে । এ জন্য দীর্ঘকাল ধরে ঘুমের বড়ি না খাওয়াই ভালো ।
|