v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-11-03 17:51:12    
উত্তর কোরিয়ার প্রতি দক্ষিণ কোরিয় সরকারের মূল নীতি

cri

    দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট রোহ্ মু হিউন ২ নভেম্বর রাজধানী সিউলে বলেছেন, কোরিয় উপদ্বীপ তথা গোটা উত্তর-পূর্ব এশিয় অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য দক্ষিণ কোরিয়া অব্যাহতভাবে উত্তর কোরিয়ার প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ রাজনীতি অবলম্বন করবে। জনমত মনে করে, রোহ্ মু হিউনের কথা আর উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক পরীক্ষার পর দক্ষিণ কোরিয় সরকারের গৃহিত ব্যবস্থা থেকে বুঝা যায় যে, দক্ষিণ কোরিয় সরকার অব্যাহতভাবে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সংযম নীতি অনুসরণ করবে।

    একই দিন একটি পুঁজি বিনিয়োগ সম্মেলনে রোহ্ মু হিউন বিদেশী পুঁজি বিনিয়োজিত কোম্পানির নেতৃবৃন্দের কাছে জোরালো ভাষায় বলেছেন, কোরিয় উপদ্বীপের শান্তি রক্ষা করা হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয় সরকারের প্রধান রাজনৈতিক লক্ষ্য। দক্ষিণ কোরিয়ার উচিত অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত ও সংযমের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা, দক্ষিণ কোরিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ক তথা গোটা উত্তর-পূর্ব এশিয় অঞ্চলের শান্তি ও অভিন্ন সমৃদ্ধি রক্ষা করা এবং অবশেষে কোরিয় উপদ্বীপের পারমাণবিক সমস্যা সমাধান করা। রোহ্ মু হিউন আরো বলেছেন, দক্ষিণ কোরিয়া কোনভাবেই উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হওয়া সহ্য করতে পারে না। দক্ষিন কোরিয়া যে কোন সংঘর্ষ এড়িয়ে উত্তর কোরিয়াকে তার পারমাণবিক পরিকল্পনা বাতিল করতে বাধ্য করার প্রয়াস চালাবে।

 ৯ অক্টোবর উত্তর কোরিয়া একবার ভূগর্ভে পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়েছে। এরপর দক্ষিণ কোরিয়া কঠোর ভাষায় একটি বিবৃতি প্রকাশ করে এই পরীক্ষার নিন্দা জানিয়েছে এবং সিমেন্ট আর চাউলসহ উত্তর কোরিয়াকে দেয়া ত্রাণ সামগ্রি বন্ধ করেছে । তা ছাড়া জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দক্ষিণ কোরিয় সরকার উত্তর কোরিয়াকে শাস্তি দেয়ার ব্যবস্থা নিয়েছে। এর পাশাপাশি, দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট কিম দাই জোং সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর উত্তর কোরিয়ার প্রতি চালিত সংযম নীতির ওপর সন্দেহ করেছে। সংযম নীতির বিরুদ্ধে অনেকে মনে করেন, দক্ষিণ কোরিয়া পুনর্মিলন, সহযোগিতা এবং সংযম নীতি কার্যকর করে , উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা করে, উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক পরীক্ষা করতে সাহায্য করেছে। বিরাট চাপে দক্ষিণ কোরিয়ার পুনরেকেত্রীকরণ বিষয়ক মন্ত্রী লি চোং শি পদত্যাগ পত্র দাখিল করেছেন।

 উত্তর কোরিয়া ভূগর্ভে পারমাণবিক পরীক্ষা করার পর দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট রোহ্ মু হিউন তাঁর ভাষণে অব্যাহতভাবে সংযম নীতি অনুসরণ করা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন এবং দক্ষিন কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র সম্পর্ক আরো জোরদার করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু কিছু দিনের পর জনসাধারণ রোহ্ মু হিউন সরকারের গৃহিত কিছু ব্যবস্থা থেকে স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করেছে যে, উত্তর কোরিয়ার প্রতি দক্ষিণ কোরিয় সরকারের নীতির কিছু পরিবর্তন করলেও তার সংযম নীতির মূল দিক পরিবর্তিত হয় নি। দক্ষিণ কোরিয়া আর যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র সম্পর্ক জোরদার করার কথা উল্লেখ করলেও যুক্তরাষ্ট্রের দাবিগুলো সব মেনে চলে না।

 আসলে, যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার ওপর অতিরিক্ত চাপ দিয়ে পরিস্থিতি যে উত্তেজনাসংকুল করেছে দক্ষিণ কোরিয়া তা সমর্থন করে না। যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রকল্প বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে । দক্ষিণ কোরিয়া মনে করে, এই প্রকল্পগুলো উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে শাস্তি দেয়া সংক্রান্ত নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তের অধীনে নয়। দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষমতাসীন পার্টি উন্মুক্ত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান কিম চিন তাই সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ার কায়সোং শিল্প উন্নয়ন অঞ্চল সফর করেছেন। এর মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া আর উত্তর কোরিয়ার অর্থনৈতিক সহযোগিতামূলক প্রকল্পের প্রতি তাঁর সমর্থন প্রকাশ করেছেন।

 দক্ষিণ কোরিয় সরকার একাধিকবার যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে নমনীয় মনোভাব নিয়ে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সরাসরি সংলাপ করার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে ছ'পক্ষিয় বৈঠক আবার শুরু হতে পারে। পুনরেকেত্রীকরণ মন্ত্রণালয় দক্ষিণ কোরিয়ার গণতান্ত্রিক শ্রম পার্টির প্রতিনিধি দলকে উত্তর কোরিয়া সফর করার অনুমোদন দিয়েছে, যাতে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সংলাপের পদ্ধতি বজায় রাখা যায়। ১ নভেম্বর রোহ্ মু হিউন সরকারের পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তার নেতৃবৃন্দ পুনর্গঠন করেছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার তথ্য মাধ্যম মনে করে, রোহ্ মু হিউনের মনোনীত পুনরেকেত্রীকরণ মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের প্রধানদের নতুন প্রার্থীরা সবই তার পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা নীতির সঙ্গে সুপরিচিত। ফলে দক্ষিণ কোরিয় সরকার উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সংযম নীতির মূল দিক পরিবর্তিত হবে না।