চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার "চীনকে জানা---দক্ষিণ আফ্রিকা অভিযান" নামক বড় আকারের সাংস্কৃতিক বিনিময় তত্পরতা ১ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার প্রশাসনিক রাজধানী প্রিটোরিয়ায় শুরু হয়েছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের তথ্য কার্যালয়, দক্ষিণ আফ্রিকার কারুশিল্প ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় চীনা দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে এবারের তত্পরতার আয়োজন করা হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে চীন ও আফ্রিকার পারস্পরিক সমঝোতা গভীর করা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের তথ্য কার্যালয়ের পরিচালক ছাই উ বলেছেন, সাংস্কৃতিক বিনিময় হচ্ছে চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা সহযোগিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং দু'দেশের জনগণের পরস্পরকে জানানোর ফলপ্রসূ উপায়। চীন সরকার আশা করে, আফ্রিকান দেশগুলোর সঙ্গে আরো বেশি সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে শান্তিপুর্ণ উন্নয়ন, অভিন্ন সমৃদ্ধি, সুষম বিশ্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য চিন্তাভাবনা বাস্তবায়ন করা যাবে।
চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের তথ্য কার্যালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা মিঃ লি সিয়াং পিং চীন সরকার দক্ষিণ আফ্রিকায় "চীনকে জানা" অভিযান আয়োজনের কারণ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, "চীন হচ্ছে পৃথিবীতে বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশ। আফ্রিকা হচ্ছে পৃথিবীতে উন্নয়নশীল দেশের সংখ্যার হিসেবে সবচেয়ে বড় মহাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকা হচ্ছে আফ্রিকা মহাদেশে সবচেয়ে উন্নত দেশ। এর সংস্কৃতি বিস্তৃত। দক্ষিণ আফ্রিকা"রামধনু দেশ" বলে পরিচিত। আফ্রিকার একটি বড় দেশ আর এশিয়ার একটি বড় দেশ অর্থাত্ চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ। "
.jpg)
থাং রাজবংশের নাচ
লি সিয়াং পিং আরো বলেছেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় "চীনকে জানা" সাংস্কৃতিক বিনিময় তত্পরতা আয়োজন করা হচ্ছে চীন ও আফ্রিকার ঐতিহ্যিক মৈত্রী আর চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার জনগণের মধ্যকার সমঝোতা বাড়ানোর পদক্ষেপ। এ বছর নয়া চীন আর আফ্রিকান দেশগুলোর কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী। চীন আর দক্ষিণ আফ্রিকার কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৮ম বার্ষিকী। চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামের পেইচিং শীর্ষ সম্মেলন এবং এর তৃতীয় মন্ত্রী পর্যায় সম্মেলন পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত হবে। একই ধরনের ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা এবং অভিন্ন উন্নয়ন কর্তব্যের দরুণ চীন ও আফ্রিকা হাজার মাইল দূরে থাকলেও দু'দেশের মধ্যে প্রাকৃতিক অন্তরঙ্গ অনুভব রয়েছে।
প্রিটোরিয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাস ও সংস্কৃতি জাদুঘরের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট মাগলো এক সাক্ষাত্কারে সাংবাদদাতাকে বলেছেন, সংস্কৃতি বিনিময় দু'দেশের জনগণের পারস্পরিক সমঝোতা বাড়ানোর জন্য সহায়ক হবে। তিনি আশা করেন, চীন-দক্ষিণ আফ্রিকা সংস্কৃতি ক্ষেত্রের সহযোগিতা আরো জোরদার হবে। তিনি বলেছেন, "আমি মনে করি, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দু'পক্ষের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক অব্যাহতভাবে জোরদার হবে। দু'দেশের সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত সংশ্লিষ্ট চুক্তি বাস্তবায়িত হবে।"
জানা গেছে, এক মাস ব্যাপী এবারের "চীনকে জানা---দক্ষিণ আফ্রিকান অভিযান" তত্পরতায় প্রধান অংশের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছে মন্ত্রী পর্যায়ে বক্তৃতা, চীনের রত্নমণি প্রদর্শনী, আধুনিক চীন সংক্রান্ত আলোকচিত্র প্রদর্শনী, চীনের থাং রাজবংশের বিশিষ্ট নাচ গান, শাওলিন কুংফু, চীনের প্রাচীনকালের জাতীয় পোষাক প্রদর্শনী , চীনের চলচ্চিত্র আর টেলিভিশন সপ্তাহ ইত্যাদি । উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দক্ষিণ আফ্রিকার কারুশিল্প ও সংস্কৃতি মন্ত্রী পাল্লো জোডান বলেছেন, "চীনকে জানা---দক্ষিণ আফ্রিকান অভিযান" এর মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকার জনগণ চীনের সংস্কৃতি, কারুশিল্প এবং তত্ত্ববিদ্যাসহ নানা বিষয় আরো ভালোভাবেজানতে পারবেন।
.jpg)
চীনের আলোকচিত্র প্রদর্শনী চীনের রত্নমণি প্রদর্শনী
|