বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গা জেলার সবুজ বেতার শ্রোতা সংঘের শ্রোতা মো: শাহাদত হোসেন তাঁর চিঠিতে চীনের শাসনতন্ত্র সম্বন্ধে জানতে চেয়েছেন। তিনি জিজ্ঞেস করেছেন, চীনের প্রথম শাসনতন্ত্র কোন বছরে প্রকাশিত হয়? উত্তরে বলছি, গণ প্রজাতন্ত্রী চীনের প্রথম শাসনতন্ত্র ১৯৫৪ সালের ২০শে সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় গণ কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশনে গৃহীত ও প্রকাশিত হয়। এর আগে ১৯৪৯ সালের ২৯শে সেপ্টেম্বর চীনা জনগণের রাজনৈতিক পরার্মশ পরিষদের প্রথম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে গৃহীত " চীনা জনগণের রাজনৈতিক পরার্মশ পরিষদের সাধারণ কমর্সূচী" নয়া চীন প্রতিষ্ঠার পর গোড়ার দিকে অস্থায়ী শাসনতন্ত্রেরভূমিকা নিয়েছিল। এর পর কয়েক বার এই শাসনতন্ত্রেরসংশোধন করা হয়। ১৯৭৫ সালের জানুয়ারী মাসে চতুর্থ জাতীয় গণ কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশনে ১৯৫৪ সালের শাসনতন্ত্রের সংশোধন করা হয় এবং ১৭ই জানুয়ারী গণ প্রজাতন্ত্রী চীনের দ্বিতীয় শাসনতন্ত্র গৃহীত ও প্রকাশিত হয়। ১৯৭৮ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে পঞ্চম জাতীয় গণ কংগ্রেসের অধিবেশনে এবং তারপর ১৯৭৫ সালে শাসনতন্ত্রের সংশোধন করা হয়। ১৯৭৮ সালের ৫ই মার্চ গণ প্রজাতন্ত্রী চীনের তৃতীয় শাসনতন্ত্র গৃহীত ও প্রকাশিত হয়। ১৯৭৯ সালে পঞ্চম জাতীয় গণ কংগ্রেসের দ্বিতীয় অধিবেশনে এই শাসনতন্ত্রের আরো কিছু সংশোধন করা হয়েছে।১৯৮২ সালের ৪ই ডিসেম্বর পঞ্চম জাতীয় কংগ্রেসের পঞ্চম অধিবেশনে , ১৯৮৮ সালের ১২ই এপ্রিল সপ্তম জাতীয় গণ কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশনে, ১৯৯৩ সালের ২৯শে মার্চ অষ্টম জাতীয় গণ কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশনে , ১৯৯৯ সালের ১৫ই মার্চ নবম জাতীয় গণ কংগ্রেসের দ্বিতীয় অধিবেশনে এবং ২০০৪ সালের ১৪ই মার্চ দশম জাতীয় গণ কংগ্রেসের দ্বিতীয় অধিবেশনে গণ প্রজাতন্ত্রী চীনের শাসনতন্ত্রের সংশোধন করা হয়।
চাঁপাই নবাগঞ্জ জেলার শ্রোতা বাদল আলী তাঁর চিঠিতে জিজ্ঞেস করেছেন, চীনের সর্বোচ্চ ক্ষমতা সংস্থা কোনটা? এই প্রশাসন সংস্থার প্রধান কে? উত্তরে বলছি, চীনের জাতীয় গণ কংগ্রেস হচ্ছে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার উচ্চতম সংস্থা এবং আইনের অধিকার কায়র্করী করার ব্যাপারে জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী একমাত্র সংস্থা। প্রদেশের, স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের ও কেন্দ্রশাসিত শহরের গণ কংগ্রেসগুলো ও গণ মুক্তিফৌজ কতৃর্ক নিবার্চিত প্রতিনিধিদের নিয়ে জাতীয় গণ কংগ্রেস গঠিত। গণতান্ত্রীক পরামর্শের মাধ্যমে গোপন ভোটদান পদ্ধতিতে প্রতিনিধিদের নিবার্চন করা হয়। জাতীয় গণ কংগ্রেস পাঁচ বছর মেয়াদের জন্য নিবার্চিত হয়। বিশেষ অবস্থায় এর মেয়াদ বাড়ানো যেতে পারে অথবা নিদির্ষ্ট মসয়ের আগেই পরবর্তী জাতীয় গণ কংগ্রেস অনুষ্ঠিত করা যেতে পারে।
দিনাজপুর জেলার মো: দেলোয়ার হোসেন তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীন দেশের কী কী পণ্য বাংলাদেশে রফতানি হয়? বাংলাদেশ কী কী পণ্য চীনদেশে রপ্তানি করে? উত্তরে বলছি, চীন আর বাংলাদেশ দু'টো প্রতিবেশী দেশ। দু'দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সুদীর্ঘকালের। গত ২০ বছর ধরে দু'দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হওয়া পর দু'দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অব্যাহতভাবে বিকশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দু'পক্ষের মধ্যেকার আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্কও সুষ্ঠু ও স্থিতিশীলভাবে উন্নতি হয়েছে। বতর্মানে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ চীনের তৃতীয় বড় বাণিজ্য দেশে পরিণত হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ থেকে চীন প্রধানত পাট, চা, সামুদ্রিক খাদ্য, রাসায়নিক দ্রব্য ইত্যাদি আমদানি করে । অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকে আরও বেশী পণ্যদ্রব্য চীনের বাজারে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের কাছে চীনের রফতানিকৃত পণ্যদ্রব্য হল, বসায়নজাত দ্রব্য, পরিবারিক বিদ্যুত সামগ্রী , হালকা শিল্পজাত দ্রব্য ইত্যাদি। জানা গেছে, বাংলাদেশের বাজারে প্রচুর চীনের তৈরী জিনিস পাওয়া যায় । তা ছাড়া, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের অনেক শিল্প-প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে অর্থ বিনিয়োগ করতে গিয়েছে। এখন বাংলাদেশ চীনের সবচেয়ে বড় পুঁজিবিনিয়োগকারী দেশে পরিণত হয়েছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস , ভবিষ্যতে দু'দেশের মধ্যে বাণিজ্য আরও জোরদার হবে।
|