তৃতীয় চীন-আসিয়ান মেলা এবং বাণিজ্য ও পুঁজিবিনিয়োগ শীর্ষসম্মেলন ৩১ আক্টোবর দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের কুয়াংশি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের রাজধানী নাননিংয়ে শুরু হয়েছে । চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেছেন , চীন এবং আসিয়ানের আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্কের সার্বিক উন্নয়ন দু'পক্ষের জন্যই ইতিবাচক অর্থনৈতিক দিক বয়ে এনেছে । এটা দু'পক্ষের সম্পর্ক উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি ও শক্তিশালী পরিচালিকা শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে । শীর্ষসম্মেলনে অংশগ্রহণকারী আসিয়ানের দেশগুলোর নেতৃবৃন্দও চীন-আসিয়ান আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নের গভীর মূল্যায়ন করেছেন এবং দ্বিপাক্ষিক আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নের ভবিষ্যতের ওপর আশাবাদী ।
তৃতীয় চীন-আসিয়ান মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দেয়ার সময় চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও চীন ও আসিয়ানের যৌথ উদ্যোগে এই মেলা আয়োজনের তাত্পর্যের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ।
চীন ও আসিয়ানের দশটি দেশের সরকারের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত চীন-আসিয়ান মেলায় সহযোগিতা গভীর করার ব্যাপারে উভয় পক্ষের আন্তরিক শুভকামনা ফুটে উঠেছে , পারস্পরিক উপকারিতা ও উভয়ের বিজয় আর সহযোগিতা ও উন্নয়নের সম্ভাবনা গড়ে তোলা হয়েছে এবং বাণিজ্য , পুঁজিবিনিয়োগ ও পর্যটন ক্ষেত্রে দু'পক্ষের সহযোগিতা ত্বরান্বিত করা হয়েছে ।
প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও বলেছেন , চীন ও আসিয়ানের মধ্যে সংলাপ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরবর্তী ১৫ বছরে আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্ক দ্রুত প্রসারিত হয়েছে , ২০০৫ সালের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক মূল্য ১৫ গুণ বেড়ে ১৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে । তিনি আরো বলেছেন , আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে দু'পক্ষের ব্যাপক অন্তর্নিহিত শক্তি রয়েছে । ২০১০ সালে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক মূল্য যাতে ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যায় , সেজন্য উভয় পক্ষের উচিত সম্মিলিতভাবে প্রচেষ্টা চালানো । যাতে দু'পক্ষের আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা একটি নতুন পর্যায়ে উন্নীত হয় ।
আসিয়ানের বর্তমান চেয়ারম্যান ফিলিপাইনের গ্লোরীয়া ম্যাকানাগান আরোভো আসিয়ানের পক্ষ থেকে মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিয়েছেন । আসিয়ান ও চীন এই মেলার সাহায্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো জোরদার করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন ।
চীন ও আসিয়ানের মধ্যেকার সম্পর্ক আসিয়ানের দেশগুলোর জন্য অনুকূল । চীনের সঙ্গে আসিয়ানের বাণিজ্য অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে । চীনে আসিয়ানের পুঁজিবিনিয়োগ দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে । তিনি আশা করেন , আসিয়ানে চীনের পুঁজিবিনিয়োগও বৃদ্ধি পাবে ।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী , বর্তমানে চীন ও আসিয়ান পরস্পরের চতুর্থ বৃহত্ বাণিজ্যিক অংশীদারে পরিণত হয়েছে । এবছরের প্রথমার্ধে চীনে আসিয়ানের পুঁজিবিনিয়োগ ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে । আসিয়ানে চীনের শিল্প প্রতিষ্ঠানের পুঁজিবিনিয়োগেও দ্রুত বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা দিয়েছে । আরো বেশি চীনের শিল্প প্রতিষ্ঠান আসিয়ানের দেশগুলোকে পুঁজিবিনিয়োগের প্রধান স্থান বলে মনে করছে । আসিয়ান চীনের বৈদেশিক প্রকল্পের প্রধান বাজারে হয়ে দাঁড়িয়েছে ।
তার পর অনুষ্ঠিত তৃতীয় চীন-আসিয়ান বাণিজ্য ও পুঁজিবিনিয়োগ শীর্ষসম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও ভাষণ দেয়ার সময় বলেছেন , চীন ও আসিয়ানের জনসংখ্যা১.৮ বিলিয়ন । দু'পক্ষের বাজার ব্যাপকভাবে বিস্তৃত ।
উভয় পক্ষের উচিত আরো সুবিধাজনক বাণিজ্যিক ব্যবস্থা সৃষ্টি করা , দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা এবং ঐতিহ্যিক দ্রব্যের বাণিজ্য সুসংবদ্ধ করার ভিত্তিতে ইলেকট্রোনিক্স দ্রব্য ও হাইটেক পণ্যদ্রব্যের আমদানি ও রফতানি করা । আসিয়ানের সঙ্গে বাণিজ্যে চীনের ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও চীন আসিয়ানের কাছে কাজার উন্মুক্ত করতে এবং অব্যাহতভাবে আসিয়ানের কাছ থেকে আমদানি বাড়াতে চায় ।
|