v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-10-31 15:31:30    
আফ্রিকান শিল্পকর্ম সংগ্রাহক লি সুং শান আর হান রোং

cri
    পেইচিংয়ে "আফ্রিকার ছাপ" নামক একটি আর্ট গ্যালারিতে আফ্রিকান শিল্পকলা ও সংস্কৃতি প্রদর্শিত হয়। গ্যালারির মালিক স্বামী ও স্ত্রী লি সুং শান ও হান রোং দীর্ঘ সময় ধরে তানজানিয়ায় ভ্রমণ করেছেন। মাকোন্ড কাঠ ভাস্কর্য শিল্পকর্ম সংগ্রহ ও গবেষণা তাদের শখ। তারা স্থানীয় অঞ্চলে মাকোন্ড যাদুঘর স্থাপন করেছেন এবং স্থানীয় শিল্পীদের সঙ্গে "তানজানিয়া জাতীয় মাকোন্ড শিল্পকলা পরিষদ" প্রতিষ্ঠা করেছেন।

    "আফ্রিকান ছাপ" গ্যালারি চীনের আফ্রিকান সংস্কৃতি ও শিল্পকলার উপরে আগ্রহী চীনা নাগরিকদের জন্য আফ্রিকাকে জানার একটি সেতু তৈরি করা হয়েছে। হান রোং বলেছেন:

    "আমরা চাই যে চীনের যুবকযুবতীরা আফ্রিকা সম্পর্কে আরো বেশি জানবে। আমরা তাদের গাইড হতে পারি। আশা করি এই গ্যালারি চীনা যুবকদের আফ্রিকান সংস্কৃতি জানার জন্য একটি মঞ্চের ভূমিকা পালন করতে পারে।"

    ৬৫ বছর বয়স্ক লি সুং শান এবং ৬১ বছর বয়স্ক হান রোং দু'জনই বিশ বছরের মধ্যে দশ হাজার মাকোন্ড ভাস্কর্য শিল্পকর্ম সংগ্রহ করেছেন। ২০০৩ সালে তারা ছাং ছুন শহরকে ৫০০টিরও বেশি ভাস্কর্য শিল্প দান করেছেন। ২০০৫ সালে তারা চীনের জাতীয় শিল্পকলা যাদুঘরকে ১৫৭টি মাকোন্ড ভাস্কর্য দান করেছেন।

    আফ্রিকান মাকোন্ড কাঠ ভাস্কর্য সম্পর্কে একটু বলি। দক্ষিণ-পূর্ব তানজানিয়ায় ও উত্তর মোজাম্বিকে প্রবাসী মাকোন্ড জাতি আফ্রিকার দেশসমূহের মধ্যে একটি গুণী জাতি। এই জাতির পুরুষদের ভাস্কর্য করার রীতি আছে। তারা প্রধানত আবলুস কাঠ দিয়ে ভাস্কর্য তৈরী করে। মাকোন্ড ভাস্কর্যের ২০০ বছরের ইতিহাস আছে। তার সরল স্টেল, বৈচিত্র্যময় আকারের মাধ্যমে আফ্রিকা সংস্কৃতির বৈশিষ্ট ফুটে ওঠে।

    তাহলে লি সুং শান, হান রোং কিভাবে মাকোন্ড ভাস্কর্যে নিজেকে নিমগ্ন করেছেন? দু'জনই বিশ্ববিদ্যালয়ে সওয়াহিলি ভাষা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। পরে তারা অনুবাদের কাজে নিযুক্ত হন। দু'জনই অনেকবার তানজানিয়ায় গেছেন। ১৯৮৪ সালে লি সুং মান চীনের জাতীয় শিল্পকলা যাদুঘরে আয়োজিত একটি মাকোন্ড প্রদর্শনীতে গাইড হিসেবে অনুবাদকের কাজ করেছেন। এই প্রদর্শনী চীনের শিল্পকলা মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। লি সুং শান বলেছেন:

   "এ ব্যাপারে আমি খুব মুগ্ধ হয়েছি। তানজানিয়ায় আমি অনেক বছর ধরে কাজ করতাম। তখন থেকে মাকোন্ড ভাস্কর্যে আমার বিশেষ আগ্রহ ছিলো। এখন এর উপরে আমার আগ্রহ আরো জমেছে। আমি মনি করি এই সংস্কৃতি ছেড়ে দেয়া যায় না। সওয়াহিলি শেখায় আফ্রিকান দেশের সঙ্গে এক রকম ভালবাসা তৈরি হয়েছে।"

এরপর থেকে তারা মাকোন্ড ভাস্কর্য সংগ্রহে আরো বেশি মনোযোগ দিয়েছেন। তারা মাকোন্ড বন্ধুদের বাড়িতে গিয়ে তাদের কাছ থেকে প্রতিটি ভাস্কর্যের গল্প শোনেন। হান রোং বলেছেন:

(রি ৩) "মাকোন্ড মানুষের মতে শরীর ছাড়া প্রত্যেক জিনিসের আত্মা আছে। এবং এই আত্মার আকার নির্ধারিত নয়, তার ভিন্ন রূপ আছে। প্রতিটি ভাস্কর্য ভাস্করের তৈরী একটি গল্প। বলা যায়, তারা ভাস্কর্যের মাধ্যমে প্রাচীনকালের কাহিনী সন্তানদের জানায়। তারা ভাস্কর্যের মাধ্যমে ভাষা হিসেবে তাদের সংস্কৃতি প্রকাশ করে।"

১৯৯০ সালে তারা অফিসের চাকরি ছেড়ে দিয়ে তানজানিয়ায় ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসা ছাড়া বাকি সময়ে তারা মাকোন্ড ভাস্কর্য সংগ্রহ করেন। তারা মাকোন্ড প্রবাসীদের পরিবারে গিয়ে তাদের কাছ থেকে গল্প শোনেন। লি সুং শান বলেছেন:

(রি ৫) "এই কাজের শুরু থেকে উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় আমাদের অভিজ্ঞতা খুব সমৃদ্ধ এবং অনেক সাফল্য পেয়েছি। এই কয়েক বছরের মধ্যে মাকোন্ড মাস্টারদের শিল্পকর্ম আমরা সংগ্রহ করেছি। তা আমাদের কাছে অমূল্য ধন। আমরা এগুলো নিয়ে সমাজ ও দেশকে দেবো। কারণ এগুলো শুধু আমাদের ধন নয়, তা সারা মানব জাতির।"