v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-10-30 18:54:36    
"নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে গণবিধ্বংসী অস্ত্রের বিস্তার রোধের উদ্যোগ গ্রহণ সংক্রান্ত প্রস্তাব" এর দক্ষিণ কোরিয়ার অবস্থান

cri

    "নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে গণবিধ্বংসী অস্ত্রের বিস্তার রোধের উদ্যোগ গ্রহণ সংক্রান্ত প্রস্তাব" অনুযায়ী, ৩০ ও ৩১ অক্টোবর বাহরাইনের উপকূলবর্তী অঞ্চলে এক সামরিক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। মহড়ায় দক্ষিণ কোরিয় সরকার তিন জনের একটি পর্যবেক্ষক গ্রুপ পাঠিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, দক্ষিণ কোরিয় সরকারের এ সিদ্ধান্ত থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে, "নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে বিস্তার রোধ সংক্রান্ত প্রস্তাবে" অংশ নেয়ার ব্যাপারে দক্ষিণ কোরিয়া বর্তমানে জটিল অবস্থায় পড়েছে।

 ২০০৩ সালের মে মাসের শেষ দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ "নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে বিস্তার রোধ সংক্রান্ত প্রস্তাব" উত্থাপন করেন। এর প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে তথ্য বিনিময়, অস্ত্রের বিনিময়কে রোধ করা এবং সন্ধান করাসহ নানা ব্যবস্থার মাধ্যমে গণবিধ্বংসী অস্ত্র আর সংশ্লিষ্ট স্পর্শকাতর পণ্যদ্রব্যের আদান-প্রদান বন্ধ করা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র বারবার দক্ষিণ কোরিয়াকে এ প্রস্তাবে যোগদানের অনুরোধ জানিয়ে আসছে, কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়া সমুদ্রে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সংঘর্ষ হতে পারে ভেবে এবং জাতীয় পুনর্মিলন ও সহযোগিতার প্রয়াস লঙ্ঘিত হতে পারে এই ভয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রস্তাবে অংশ নেয়ার বিষয়টিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। দক্ষিণ কোরিয়া কেবল পর্যবেক্ষক হিসেবে এর আংশিক প্রকল্পে অংশ নিতে রাজি হয়েছে।

 কিন্তু ৯ অক্টোবর উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক পরীক্ষা এবং ১৪ অক্টোবর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ উত্তর কোরিয়া সংক্রান্ত ১৭১৮ নং সিদ্ধান্ত অনুমোদনের পর দক্ষিণ কোরিয়া সরকার "নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে বিস্তার রোধ সংক্রান্ত প্রস্তাবের" ব্যাপারে প্রবল চাপের সম্মুখীন হয়েছে।

 প্রথমতঃ, তার মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্রের চাপ। মার্কিন পক্ষ বলেছে, উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক পরীক্ষা সংক্রান্ত জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ১৭১৮ নং সিদ্ধান্ত আর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে গণবিধ্বংসী অস্ত্রের বিস্তার রোধের ব্যাপারে ঐক্যমতী হতে হবে। দক্ষিণ কোরিয়ার এই প্রস্তবের প্রতি আরো বিরাট ভূমিকা পালন করা এবং সমুদ্রে উত্তর কোরিয়ার জাহাজগুলোকে বাধা দিয়ে অনুসন্ধান চালানো উচিত।

 দ্বিতীয়তঃ দক্ষিণ কোরিয়ার অভ্যন্তরীণ চাপ। এখন দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন মহল "বিস্তার রোধের এই প্রস্তাবে" অংশ নেবে কিনা এ ব্যাপারে তুমুল বিতর্ক চলছে। দক্ষিণ কোরিয়ার বৃহত্তম বিরোধী পার্টি ---গ্রান্ড জাতীয় পার্টি সরকারকে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি মেটানোর দাবি জানিয়েছে। তবে আইন আর কূটনৈতিক মহলের বহু লোক মনে করেন, নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তের তুলনায় "নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে বিস্তার রোধ সংক্রান্ত প্রস্তাবের" বৈধতার ব্যাপারে এখনো সন্দেহ রয়েছে। তাঁরা জোর দিয়ে বলেছেন, নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তে কেবল জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোকে প্রয়োজনের সময় উত্তর কোরিয়ার জাহাজগুলোকে পরীক্ষা করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যাতে গণবিধ্বংসী অস্ত্রের বিস্তার রোধ করা যায়।

 তৃতীয়তঃ, উত্তর কোরিয়ার প্রবল চাপ। উত্তর কোরিয়ার স্বদেশের শান্তিপূর্ণ পুনরেকত্রীকরণ কমিটির মুখপাত্র ২৫ অক্টোবর পিয়ং ইয়ংয়ে সতর্ক করে বলেছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার উচিত হবে না, যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর কোরিয়াকে শাস্তি দেয়ার অবরোধ নীতি অনুসরণ করা। নাহলে দু'দেশের সম্পর্ক সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাবে এবং এর জন্য "উল্লেখযোগ্য খেসারত" দিতে হবে।

 উপরোক্ত তিনটি চাপের কারণে দক্ষিণ কোরিয় সরকারকে বাধ্য হয়ে সযত্নে সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধ উপেক্ষা করতে পারে না, এর পাশাপাশি সে আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রস্তাবে অংশ নেয়ার পর তার গুরুতর ফলাফলের দিকগুলোকেও বিবেচনা করতে হবে। কারণ যদি দক্ষিণ কোরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রস্তাবে অংশ নেয়। তাহলে খুব সম্ভব উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে তার সামরিক সংঘর্ষের সুত্রপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। অবশেষে দক্ষিণ কোরিয় সরকার সীমিতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের "নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে গণবিধ্বংসী অস্ত্রের বিস্তার রোধের উদ্যোগ গ্রহণ সংক্রান্ত প্রস্তাবে" অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, এবারের মহড়ায় তাদের পর্যবেক্ষক পাঠানো দক্ষিণ কোরিয়ার বিশেষ ভূমিকা বাড়ানোর কোন ইঙ্গিত নয়। গত আগস্ট মাসে সরকার পর্যবেক্ষক পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, অর্থাত্ ৯ অক্টোবরের উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক পরীক্ষার সঙ্গে এর কোন সম্পর্ক নেই।