২৪ অক্টোবর বৃটেন-চীন বাণিজ্য সমিতি লনডনে চীনের গণ রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের জাতীয় চেয়ারম্যান চিয়া ছিংলিনের সম্মানে এক অভ্যর্থনানুষ্ঠানের আয়োজন করেছে । অভ্যর্থনানুষ্ঠানে চিয়া ছিংলিন "সুষম সমাজ গঠন করার প্রচেষ্টা করুন এবং মিলিতভাবে সুষম বিশ্ব গঠন করুন " শীর্ষক ভাষণে চীনের সুষম সমাজ ও সুষম বিশ্ব গঠন সম্পর্কে নিজের মন্তব্য প্রকাশ করেছে ।
কিছু দিন আগে চীনে সমাজতন্ত্র ও সুষম সমাজ গঠন সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে । চিয়া ছিংলিন ভাষণে ২০২০ সাল নাগাদ চীনের সুষম সমাজ গঠনের লক্ষ্য ও প্রধান কর্তব্য সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন । তিনি বলেছেন, সমাজতন্ত্রের গণতান্ত্রিক আইন ব্যবস্থাআরও উন্নত হয়েছে , আইন অনুযায়ী দেশ শাসন নীতি সার্বিকভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে । শহর ও গ্রামাঞ্চলের উন্নয়নেরব্যবধান বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা ধাপেধাপে কমাতে হয়েছে । উপযুক্ত আয়ের বন্টন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে । জনগণ আগের চাইতে অনেক স্বচ্ছল জীবনযাপন করতে পেরেছেন । কর্মসংস্থান পরিপূর্ণ হয়েছে । শহর ও গ্রামাঞ্চলে নাগরিকদের সামাজিক বীমা ব্যবস্থা গঠন করা হয়েছে । সম্পদ ব্যবহারের হার স্পষ্টভাবে উন্নত হয়েছে । পরিবেশ রক্ষা ভাল হয়েছে ।
সুষম সমাজ গড়ে তোলা এক দীর্ঘ ও দুরূহ কর্তব্য । চিয়া ছিংলিন বলেছেন , উপরোল্লেখিত লক্ষ্য ও কর্তব্য বাস্তবায়ন করার জন্যে চীন নিজের রাষ্ট্রীয় অবস্থা ও যুগের প্রয়োজন অনুযায়ী আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় সার্বিকভাবে বৈজ্ঞানিক উন্নয়নের জ্ঞানবোধ বাস্তবায়ন করবে , সামাজিক উত্পাদন-শক্তি বাড়ানোর মাধ্যমে সুষম সমাজ গড়ে তোলার জন্যে মজবুত বস্তুগত ভিত্তি সৃষ্টি করেছে ।
তিনি বলেছেন, বিশ্বেরস্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যেবিভিন্ন দেশের সুষম সহাবস্থান ও সমন্বয় দরকার । সুষম বিশ্ব গড়ে তোলাকে তরান্বিত করা যেমন চীনের শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের অনিবার্য প্রয়োজন তেমনি চীনের শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণশর্ত । এটা যুগের স্রোত এবং বিভিন্ন দেশের জনগণের মৌলিক স্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ।
তিনি বলেছেন, চীন মনে করে যে , এক সুষম বিশ্ব গড়ে তুলতে চাইলে গণতান্ত্রিক সমতার নীতিতে অটল থেকে সমন্বিত সহযোগিতা বাস্তবায়িত করতে হবে । সুপ্রতিবেশীসুলভ ও পারস্পরিক আস্থায় অটল থেকে অভিন্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থাবাস্তবায়িত করতে হবে । ন্যায়সংগত ও পারস্পরিক উপকারিতার নীতিতে অটল থেকে অভিন্ন উন্নয়ন বাস্তবায়িত করতে হবে । সমঝোতা ও উন্মুক্ততার নীতিতে অটল থেকে সভ্যতার সংলাপ চালাতে হবে ।
চিয়া ছিংলিন বলেছেন যে , চীন সুষম সমাজ গড়ে তোলার চেষ্টা চালাবে । বিদেশে শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথ অনুসরণ করবে । শান্তিপূর্ণ আন্তর্জাতিক পরিবেশের মাধ্যমে নিজেকে উন্নতএবং নিজের উন্নয়নের মাধ্যমে বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতা তরান্বিত করবে । চীন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলে সুষম বিশ্ব গড়ে তোলার চেষ্টা চালাতে ইচ্ছুক ।
ভাষণে চিয়া ছিংলিন চীন-বৃটেন সম্পর্ক ও আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতার দ্রুত উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ।
এক শরও বেশি লোক অভ্যর্থনানুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন । বৃটেন-চীন বাণিজ্য সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান ষ্টিফিনপেরি অভ্যর্থনানুষ্ঠানে ভাষণ দিয়েছেন ।
বৃটেন-চীন বাণিজ্য সমিতি ৪৮ গোষ্ঠি নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । ১৯৯১ সালে গোষ্ঠীটা বৃটেনের বৃটেন-চীন বাণিজ্য সমিতির সঙ্গে একত্রিত হয়ে বৃটেন-চীন বাণিজ্যের ৪৮ গোষ্ঠী। ১৯৯৮ সালে গোষ্ঠীটা বর্তমানের বৃটেন-চীন বাণিজ্য সমিতিতে পরিণত হয়েছে । বৃটেন সরকার বৃটেন-চীন বাণিজ্য সমিতিকে আর্থিক সাহায্য করে এবং পরিচালনা করে ।
|