v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-10-24 17:50:14    
মধ্য-প্রাচ্যে শান্তির অন্বেষায় আশাবাদী শিল্পী ফেং শাও সিয়ে

cri
    "মধ্য-প্রাচ্যের শান্তির পায়রা শীর্ষক-ফেং শাও সিয়ের একটি তৈলচিত্র প্রদর্শনী" সম্প্রতি চীনের শিল্পকলা জাদুঘরে প্রদর্শিত হয়েছে। এবারের প্রদর্শনীতে প্রধানত মধ্য-প্রাচ্যের সাম্প্রতিক বিষয়গুলোকে তুলে ধরা হয়েছে।

    প্রদর্শনীতে ১৮টি ২.৫ মিটার দৈর্ঘ্য ২ মিটার প্রস্থের তৈলচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে। গ্যালারীতে ঢুকে প্রথমেই "মধ্য-প্রাচ্যের পায়রাকে" দেখা যায়। চিত্রে একটি সাদা পায়রা আঘাতে রক্তাক্ত। সে তার ঠোঁট দিয়ে শরীরে বাঁধা দড়ি খুলে ফেলার চেষ্টা করছে। ধোয়ার পটভূমিতে অস্পষ্টভাবে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের পতাকা দেখা যায়। "শান্তি'র গান" চিত্রে হত্যাকান্ডের পরে মারা যাওয়া ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী আইজাক রবিনের পরিধেয় বস্ত্রের ভেতরে "শান্তি'র গানের" কাগজ বড় করে ফুটে ওঠেছে। কাগজে রক্ত ছড়িয়ে রয়েছে। কয়েকটি পাখির পালক আকাশ থেকে পড়ছে। শিল্পীর অন্য একটি চিত্রে ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের এতিমদের যন্ত্রণাগুলো যেন তাদের চোখের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। আত্মঘাতী বোমা তৈরীকারী নারীরা ছবিতে দেখতে কিন্তু খুব সুন্দর। ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী আরিয়েল শ্যারণের পেছনের দিকে তাকানো চিত্র, ফিলিস্তিনের সাবেক নেতা ইয়াসীর আরাফাতের ক্ষোভের সঙ্গে ভাষণ দেয়া, শেখ আহমেদ ইসমাইল ইয়াসিনকে বোমা বিস্ফোরণ স্থলে হুইল-চেয়ারে এবং কালো মেঘের নিচে বিছিন্ন কিছু দেয়াল ইত্যাদি শিল্পকর্ম। ছবিগুলো মানুষের হৃদয়কে আকৃষ্ট করেছে।

    চীনের বিখ্যাত শিল্পকলা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ, চীনের "শিল্পকলা" ম্যাগাজিনের প্রধান সম্পাদক ওয়াং জুং বলেছেন:

    "ফেং শাও সিয়ে'র তৈলচিত্র প্রদর্শনীতে চীনা শিল্পীদের মধ্য-প্রাচ্যে শান্তি স্থাপনের আশাআকঙ্খার কথা প্রকাশ পেয়েছে। প্রদর্শনীটি খুবই দৃষ্টিনন্দন হয়েছে। সব শিল্পকর্মেই একটি আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রতিভাত হয়েছে। যা চীনের শিল্পীদের মধ্যে খুব কম দেখা যায়। এতে বুঝা যায় শিল্পী মানব জাতীর ভবিষ্যতকে নিজের ভবিষ্যতের মতই দায়িত্বের সঙ্গে তুলে ধরেছেন রঙ এবং রেখার মাধ্যমে। এমন মানবিক তৈলচিত্রে শিল্পীর দক্ষতাপূর্ণ কারুকাজ প্রদর্শনীকে আকর্ষণীয় করেছে।"

    ফেং শাও সিয়ে দুই বছর ধরে প্রদর্শনীর এই ছবিগুলো এঁকেছেন। কেন মধ্য-প্রাচ্য বিষয় বেছে নিয়েছেন এ প্রসঙ্গে শিল্পী চলেছেন:

    "আমি বিশ্বের সব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারের উপর সর্বদাই দৃষ্টি রাখি। পড়াশোনার সময় আমার বিষয় শুধু অয়েল পেন্টিং করা নয়। রাজনৈতিক বিষয় নিয়েও কাজ করার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আমি ছবি সৃষ্টি করি। আমি মনে করি একজন শিল্পী হিসেবে আমার কিছু সামাজিক দায়িত্ব পালন করা উচিত।"

    ফেং শাও সিয়ে ১৯৬৪ সালে দক্ষিণ চীনের কুয়াং তুং প্রদেশের একটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছবি আঁকা পছন্দ করতেন। ১৯৮৩ সালে তিনি কুয়াং তুং মৃত্শিল্প স্কুলে ভর্তি। কিন্তু তিনি মৃত্শিল্প পছন্দ করেন না, নিজে নিজেই তৈলচিত্র আঁকতে শুরু করলেন। পড়াশোনা শেষে তিনি ফোশান সংস্কৃতি যাদুঘরে চাকরি পান। ২০০৪ সালে তিনি ফোশান শহরের সংস্কৃতি ব্যুরোর উপ-পরিচালক হন। কাজ করার পাশাপাশি তিনি শিল্পকর্ম সৃষ্টির চেষ্টা ছেড়ে দেন নি। নিজের অভিজ্ঞতা ও চিন্তাভাবনাকে নিয়ে নিয়মিত ছবি এঁকে যান। ২০০৩ সালে তার "চীনের সংস্কৃতি ক্ষেত্রের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ" শীর্ষক একটি প্রদর্শনী চীনের শিল্পকলা যাদুঘরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রদর্শনীতে বর্তমান সমাজের কিছু সমস্যাকে নিখুঁতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

    ২০০৪ সালে তিনি তার সৃষ্টির প্রধান বিষয়কে মধ্য-প্রাচ্য সমস্যার উপর নিবদ্ধ করেন। এ বিষয়ে আরো বেশি তথ্য সংগ্রহের জন্য তিনি দু'বছর ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। এ কাজ করতে কিন্তু তিনি খুব স্বাচ্ছন্দ বোধ করেছেন। তিনি বলেছেন:

    "আমার লক্ষ্য হলো মধ্য-প্রাচ্য সমস্যা নৈর্ব্যক্তিকভাবে দর্শকদের কাছে উপস্থাপন করা। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য গোটা সমস্যার প্রক্রিয়া সার্বিকভাবে সবারই জানা উচিত। ভালভাবে বিষয়টিকে বোঝার পর তিনি তার এই শিল্পকর্ম সৃষ্টিতে অনুপ্রানিত হন। নইলে এ তৈলচিত্রগুলো তেমন আকর্ষণীয় ও হৃদয়গ্রাহী হতো না।"

    ফেং শাও সিয়ে ইচ্ছা করেই চীনের তৈলচিত্রকলার ঐতিহ্যিক পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন। তিনি মনে করেন এভাবেই একজন চীনা শিল্পী হিসেবে মধ্য-প্রাচ্য সমস্যায় তার বিশেষ চিন্তাভাবনাগুলোকে প্রকাশ করা যায় মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে চিন্তা করেই।