v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-10-24 17:38:59    
ভারতীয় সাহিত্য গবেষণা করা এক সুখী কাজ

cri
    ১৯ থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত চীনের বিখ্যাত পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় ভারতীয় সাহিত্য সেমিনার আয়োজন করে। আপনারা যে হাততালির শব্দ শুনেছেন, তা এই সেমিনারে অংশগ্রহণকারীদের দেয়া। চলতি বছর হচ্ছে "চীন-ভারত মৈত্রী বর্ষ"। চীনের ভারতীয় সাহিত্য সেমিনারের উদ্যোগে, পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশী ভাষা ইনস্টিটিউট এবং ভারত গবেষণা কেন্দ্র যৌথভাবে "চীনের ভারতীয় সাহিত্য সেমিনারের ১১তম বার্ষিক সম্মেলন" মহাসমারোহে আয়োজন করে। পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে চীনের ভারতীয় সাহিত্য গবেষণা ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞ ও পন্ডিতরা মিলিত হয়ে সেমিনারে নিজ নিজ গবেষণার ফলাফল নিয়ে ব্যাপকভাবে আলোচনা করেছেন।

    চীনের ভারতীয় সাহিত্য সেমিনার ১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর আগে দশ বার বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং চীনের ভারতীয় সাহিত্য গবেষণা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এবারের সেমিনারে অংশগ্রহণকারী বিশেষজ্ঞ ও পন্ডিতদের সংখ্যা ছিল সবচেয়ে বেশি এবং দাখিল করা গবেষণা রিপোর্টের সংখ্যাও ছিল সর্বাঠিক। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনের ভারতীয় গবেষণা সেমিনারের চেয়ারম্যান হুয়া পাও শাং বলেছেন,

    "এখন চীন ও ভারতের উভয়ই অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হয়েছে। দু'দেশের আন্তর্জাতিক মর্যাদা বেড়ে যাওয়ায় পৃথিবীতে চীনা ভাষা শেখার ব্যাপক আগ্রহ দেখা দিয়েছে। এর পাশাপাশি ভারতের আধুনিক সাহিত্যও আন্তর্জাতিক প্রকাশনালয় ও বিদগ্ধ সমাজের কাছে গুরুত্ব পেয়েছে। প্রাচ্যের এই দুটি প্রাচীন সভ্যতার দেশের নতুন শতাব্দীতে নিজের শক্তি দেখানো উচিত। আমরা ভারতীয় সংস্কৃতি ও সাহিত্যের ওপর আমাদের গবেষণা আরো জোরদার করা উচিত, যাতে ভারতীয় সাহিত্য গবেষণার ক্ষেত্রে চীনের প্রাধান্য লক্ষ্য করা যায়।"

    চীনের ভারতীয় সাহিত্য গবেষণা ক্ষেত্রে প্রতি বছর নতুন সাফল্য অর্জিত হয়। এবছরের সবচেয়ে আনন্দদায়ক সাফল্য হচ্ছে ভারতের দুটি মহাকাব্যের অন্যতম "মহাভারত" এর চীনা ভাষা সংস্করণ চীনে প্রকাশিত হয়েছে। "মহাভারত" এর চীনা ভাষা সংস্করণ ৫০ লাখ শব্দ, ছয়টি পুস্তক অন্তর্ভুক্ত। পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারত বিষয়ক কেন্দ্রের উপ-পরিচালক চিয়াং চিং কুই "মহাভারত" এর অনুবাদ ও সমন্বয় সাধন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানিয়েছেন,

    "প্রায় ৩০ বছর ধরে বিশ জনেরও বেশি পন্ডিত "মহাভারত" এর অনুবাদ কাজের সঙ্গে জড়িত। কেউ কেউ এই কাজ শেষ হওয়ার আগে মারা গেছেন। তা ছাড়া, আরো অনেক পন্ডিত নানা প্রয়োজনীয় সমর্থন করেছেন। সত্যি কথা প্রায় ৩০ বছর সময় দিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম মহাকাব্যকে চীনা ভাষায় রূপান্তর করা একটি অত্যন্ত মহান দুঃসাহসিক কাজ।"

    তা ছাড়া, সেমিনারে অংশগ্রহণকারী পন্ডিতরা ভারতের আধুনিক ও প্রাচীন সাহিত্য, ভারতের বহু বিখ্যাত লেখক আর তাঁদের লেখা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও গবেষণা করেছেন। সেমিনারে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক পাই খাই ইউয়ান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্য গবেষণা ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞ হিসেবে ঠাকুরের প্রবন্ধ সম্বন্ধে আলোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন,

    "রবীন্দ্রনাথ তাঁর দর্শন প্রবন্ধে দৃশ্যের সঙ্গে মানুষের অনুভূতি যোগ দেন। যেমন "ঋতুতে" ছয়টি ঋতুকে ভারতের চারটি সামাজিক শ্রেণীর ব্যক্তি আর কিশোরকিশোরী, যুবকযুবতী এবং বৃদ্ধবৃদ্ধার সঙ্গে তুলনা করলেন। এর মাধ্যমে প্রাণবন্তভাবে সুগভীর প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করলেন। পাঠকদের মনে অমোছনীয় ছাপ ফেলেছে। রবীন্দ্রনাথ তাঁর রাজনৈতিক ভাষ্যে নানা উপমা-উত্প্রক্ষার মাধ্যমে নিজের সূক্ষ্মদর্শী মতামত ব্যক্ত করেন।"

    চীনের ভারতীয় সাহিত্য গবেষণা সেমিনারের চেয়ারম্যান হুয়া পাও শাং বলেছেন,

    "ভারতের প্রাচীন ও আধুনিক সাহিত সম্পদ সমৃদ্ধ। যে কোন পন্ডিতের কাছে ভারতীয় সাহিত্য গবেষণা আনন্দের ব্যাপার। এতে চীন ও ভারতের মানসিক বুদ্ধি উপলব্ধি করা যায় এবং নিঃসন্দেহে এই সেমিনার বিশ্বের সভ্যতা বিনির্মানের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে।"