v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-10-17 17:59:01    
প্রাচ্যবিশারদ চি সিয়েন লিন

cri
    সম্প্রতি ৯৫ বছর বয়স্ক চীনের বিখ্যাত অনুবাদক ও শিক্ষাবিদ চি সিয়েন লিন চীনের অনুবাদ পরিষদের অনুবাদ ক্ষেত্রের আজীবন পুরষ্কার পেয়েছেন। এই পুরষ্কারের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের সংস্কৃতির আদানপ্রদান এবং সংস্কৃত ভাষা অনুবাদ করর জন্য চি সিয়েন লিনের অপূর্ব অবদানের স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।

    ১৯১১ সালে চি সিয়েন লিন চীনের শানতুং প্রদেশের একটি দরিদ্র কৃষকের পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯ বছর বয়স্ক চি সিয়েন লিন ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পশ্চাত্যের সংস্কৃতি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। এখানে তিনি সংস্কৃত ভাষা ও বৌদ্ধ সাস্ত্রের সূত্র অনুবাদ শুরু করেন। ১৯৩৫ সালে ২৪ বছর বয়স্ক চি সিয়েন লিন জার্মানীর গোটিনগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিখ্যাত সংস্কৃত ভাষা অধ্যাপক আর্নস্ট ওয়াল্ডসমিথ এবং তোখারোই ভাষার অধ্যাপক এমিল সিগের কাছ থেকে ভাষা শিখতে শুরু করেন। জার্মানীতে দশ বছর ভাষা শেখার অভিজ্ঞতা চি সিয়েন লিনকে প্রাচ্যবিশারদ হবার ক্ষেত্রে সুসংবদ্ধ ভিত্তি তৈরী করে দিয়েছে।

    চীনের তুন হুয়াং তু লু ফান একাডেমি প্রাচীণকালের মধ্য ও প্রাচ্য এশিয়ার সংস্কৃতি ও ভাষা নিয়ে গবেষণা চালানোর সংস্থা। চি সিয়েন লিন এই একাডেমির উদ্যোক্তা এবং বর্তমানের চেয়ারম্যান। একাডেমির মহাসচিব অধ্যাপক ছাই চিয়েন হুং বলেছেন,

    "তোখারোই ভাষা চীনে শুধু দুই তিন জন আয়ত্ত করতে সক্ষম হয়েছে। অধ্যাপক চি সিয়েন লিন অনেক পরিশ্রমের পর এ ক্ষেত্রের একজন পন্ডিত ব্যক্তিতে পরিনত হয়েছেন। প্রাচ্যবিশারদ হিসেবে অধ্যাপক চি প্রাচীণ ভারত এবং চীন-ভারত সংস্কৃতি আদানপ্রদান থেকে শুরু করে চীন ও পাশ্চাত্য দেশগুলোর সংস্কৃতি আদানপ্রদান ক্ষেত্রেও অপূর্ব অবদান  রেখেছেন।"

    ১৯৪১ সালে চি সিয়েন লিন ডক্টরেট ডিগ্রী পেয়েছেন। ১৯৪৫ সালে তিনি চীনে ফিরে এসে পিকিং ইউনিভার্সিটিতে প্রাচ্য ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগ স্থাপন করেছেন। এই বিভাগ থেকে প্রায় ৬০০০ জন পন্ডিত তাদের পড়াশোনা শেষ করে সমাজে পরিসেবা করছেন। এর মধ্যে রয়েছেন ৩০জন বিভিন্ন দেশস্থ চীনের রাষ্ট্রদূত। ৮৫ বছর পর্যন্ত চি সিয়েন লিন ছাত্রদের আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পড়িয়েছেন। তিনি ছাত্রদের শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে খুব বেশি মনোযোগ দিয়ে থাকেন এবং সব সময় ছাত্রদের বিভিন্ন পড়াশোনার সুযোগ যুগিয়ে দিতে থাকেন এতে সবাই তাঁর এই কর্মের জন্য মুগ্ধ এবং অভিভূত।

    চি সিয়েন লিনের অনুবাদের মধ্যে রয়েছে প্রধানতঃ, ভারতের প্রাচীণকালের ভাষা, বৌদ্ধ সাস্ত্রের সূত্র, সংস্কৃত ভাষা, তোখারোই ভাষা এবং ভারতের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ইত্যাদি। তিনি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই চীনা ও ইংরেজী ভাষায় অনুবাদ করে থাকেন। অনুবাদ পরিষদের উপ-পরিচালক কুও সিয়াও ইয়ুং চি সিয়েন লিনকে "অনুবাদ ক্ষেত্রের আজীবন পুরষ্কার"প্রদানের সময় বলেছেন:

    "চি সিয়েন লিন সারা জীবনে শিক্ষাদান ও একাডেমিক গবেষণায় অপূর্ব অবদান রেখেছেন। তিনি চীনা সংস্কৃতি ও প্রাচ্য দেশের সংস্কৃতির উল্লেখযোগ্য দিক সমূহকে তুলে ধরেছেন নিখুঁতভাবে। এবং প্রাচ্য ও পশ্চাত্য দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক আদানপ্রদানের সেতু গড়ে তোলার ব্যাপারে চমত্কার অবদান রেখেছেন। তিনি বুদ্ধিজীবী মহলের জন্য একটি অবিস্মরনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এই পুরষ্কার তাঁর বৈশিষ্টময় পরিকল্পনা, সূক্ষ্মদর্শীতা, গবেষণামূলক মনোভাব এবং পরিশ্রমী মনোবলের পুরোপরি স্বীকৃতি ।

    এখন চি সিয়েন লিন শরীরের অবস্থা ভাল না বলে হাস্পাতালে থাকেন। তিনি সংবাদদাতাকে বলেছেন, চীনের দুই হাজারেও বেশি সময়কালের অনুবাদের ইতিহাস আছে। তা চীনা সংস্কৃতি সমৃদ্ধের একটি কারণ। তিনি বলেছেন:

    "আমাদের সংস্কৃতি ৫ হাজার বছরের সমৃদ্ধ। তা অনুবাদের সঙ্গে জড়িত। অনুবাদ হলো ইতিহাস । তা যেন সংস্কৃতির মধ্যে নতুন রক্ত সঞ্চালন। আমি খুব দুঃখিত যে অনুবাদের কাজে আমি তেমন চমত্কার কিছু হয়তো করতে পারিনি। আরো চেষ্টা চালানো উচিত ছিল। আমার বয়স এখন প্রায় এক'শ বছর। আরো দশ বছর চেষ্টা করলে আমার বিশ্বাস আমি আরো ভাল কিছু কাজ হয়তো করে যেতে পারবো।"