
আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদের চীনের কন্ঠ শিল্পী পাংলং-এর কয়েকটি গান শোনাবো এবং তাঁর সম্পর্কে কিছু কথা বলবো।
পাংলং উত্তর-পূর্ব চীনে জন্ম গ্রহণ করেন এবং সেখানে বড়ো হয়ে ওঠেন। জন্মগতভাবেই খুব ভালো তার কন্ঠ শৈল্পী। ২০ বছর বয়সে তিনি নিজের শহর ত্যাগ করে সংগীতের সাধনায় নেমেছেন। ঘুরেছেন বহু স্থান তিনি পরিবেশনদলের সঙ্গে বিভিন্ন শহরে গিয়ে সংগীত পরিবেশন করেন এবং বিভিন্ন বারে গান গেয়েছেন। বহু বছর পর তিনি সংগীতের ক্ষেত্রে সাফল্য পেয়েছেন এবং অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। ২০০০ সালে পেইচিং থেকে তিনি প্রথম একক অ্যালবাম 'জীবনের তিনটি পদক্ষেপ' প্রকাশ করেন। যদিও এই অ্যালবামের সব গান সংগীত ক্ষেত্রেরদৃষ্টি আকর্ষণে তেমন সফল হয়নি। তবুও প্রধান গান 'বুরো হয়ে গেছে' ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছে। এবং তার নাম প্রথমবার সংগীত ক্ষেত্রে বিশেষ সম্মান অর্জন করেছে। এখন আপনারা যে গান শুনচ্ছেন, তার নাম 'বুরো হয়েছে'।
২০০৪ সালে একজন কন্ঠ শিল্পী হিসেবে শ্রেষ্ঠ শিল্পীর সম্মান নিয়ে পাংলং চীনের বিখ্যাত চলচ্চিত্রাভিনেতা লিউ সিয়াওছিং-এর সৃষ্ট টিভিনাটক '২
৮১টি চিঠি' র গীতিনাট্যের টাইটেল সঙ্গীত ও অন্য দুটো গান গেয়েছেন। টিভিনাটকটি জনপ্রিয় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে 'দুটো প্রজাপতি' এই গানটি খুবই জনপ্রিয় হয়। ট্যাক্সি, দোকান এমনকি হোটেল প্রায় সব জায়গায় 'দুটো প্রজাপতি' গানটি প্রচারিত হতে থাকে। বিভিন্ন ওয়েব-সাইটে ও শ্রেষ্ঠ জনপ্রিয় সংগীতের তালিকায় গানটি প্রথম স্থান দখল করে। এক সময় তিনি কেন্দ্রীয় শিল্পী ব্যক্তিত্বে পরিনত হয়েছেন।

আপনারা এখন যে গান শুনচ্ছেন তার নাম 'দুটো প্রজাপতি'। গানের কথা এমন হলোঃ হে প্রিয়, তুমি আস্তে আস্তে উড়ে যাও। তোমার সামনে হুলবি গোলা সাবধান থেকো। প্রিয়, তুমি মুখ খুলো। বাতাস আর ফুলের সুগন্ধ তোমাকেসহ চারদিক প্লাবিত করবে। হে আমার প্রিয়, তুমি আমার সঙ্গে উড়ে চলো। বন বনান্তর পাড়ি দিয়ে জলস্রোতে ভেসে ভেসে চলো হারিয়ে যাই। হে প্রিয়, এসো নাচি হৃদয়ের মন্দির খুলে। ভালোবাসার বসন্ত কখনই অন্ধকার হয়না। চলোনা আমরা এক সাথে উড়ে যাই। চিরদিন এক সাথে থাকি দু'জনে দুজনের হয়ে।
'দুটো প্রজাপতি' এই কথাটিই মমতাপূর্ণ, সুন্দর ও আবেগ। পাংলংয়ের গান গাওয়ার কন্ঠ যেন সুললিত । যা পাংলংয়ের সংগীত পরিবেশনার ক্ষেত্রে এনেছে এক সম্ভাবনাময় দিন।
২০০৪ সালের শেষ নাগাদ, পাংলং তার দ্বিতীয় অ্যালবাম 'দুটো প্রজাপতি' প্রকাশ করেছেন। অ্যালবামে 'দুটো প্রজাপতি', 'হৃদয়হীন বিশ্বাসঘাতক' এবং 'বাসা উত্তর-পূর্বে রয়েছে'সহ বেশ কয়েকটি গান রয়েছে। এখন শুনুন 'হৃদয়হীন বিশ্বাসঘাতক' গানটি।
গানের অর্থ এমন হলোঃ তুমি আমাকে ছেড়ে দূরে চলে গেছো। আমার চোখের জল কে দেখতে পারে? তুমি কেন আমাকে বিশ্বাসঘাতক করেছো? তুমি বলো আমি রোমান্টিক কিন্তু বুঝতে পারি না। তুমি বলো, আমদের মধ্যে ভালোবাসা আর থাকবে না। আমি আশা করি, তোমার আগে ভুলে যাবো না। এই বিশ্বে তোমাকে ছাড়া আমি কি কিছুই করতে পারবো?

২০০৫ সালে পাংলং তৃতীয় অ্যালবাম 'তুমি আমার গোলাপ' প্রকাশ করেছেন। এটা হচ্ছে পাংলং সৃষ্ট সবচেয়ে বেশী গানের অ্যালবাম। গান বাছাই করা, রেকর্ড করার প্রক্রিয়াও পাংলং নিজেই করেছেন। তাছাড়া, অ্যালবামের প্রায় অর্ধেক গানের সৃষ্টা তিনি। বর্তমান অ্যালবামের প্রধান গান 'তুমি আমার গোলাপ', 'লম্বা চুল' ও 'আমি গান গাইতে চাই' এ সব গান, চীনের বিভিন্ন বেতারের জনপ্রিয় সংগীতের তালিকার শীর্ষ স্থানে রয়েছে।
নতুন অ্যালবামে, পাংলং সহজ, সুন্দর ও সাধারণ স্টাইলে গান পরিবেশনে অবিচল ছিলেন। অ্যালবাম তৈরীতে তার অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হয়েছে। চিরসত্য যে, গানের জন্যে হৃদয়ের অনুভূতি আর ভালোবাসা অনেক বেশী প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানের শেষ প্রান্তে এসে, আমরা এক সঙ্গে পাংলংয়ের 'তুমি আমার গোলাপ' গানটি শুনবো। গানের কথা এমনঃ একটি ফুল ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই আর একটি ফুল ঝরে পড়েছে। সারা পাহাড়ের ফুলের মধ্যে, শুধু তুমিই আমার প্রিয়। গোলাপের মতোই তোমাকে ভালোবাসি। সারা পাহাড়ের ফুলের মধ্যে শুধু তুমিই তো আমার আদুরে। তুমিই আমার গোলাপ। তুমি আমার হৃদয়। তুমিই আমার ভালোবাসা এবং আমার অস্তিত্ব। যতই ঝড়, বাতাস ও বৃষ্টি আসুকনা কেন, আমি শুধু তোমাকেই ভালোবাসি।

প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, এতক্ষণ আমি আপনাদের জন্য পাংলংয়ের কয়েকটি গান শোনালাম এবং এর তার কথা এবং তার গানের ব্যখ্যা করলাম। আজকের অনুষ্ঠান এখানে শেষ হল, আমাদের সঙ্গে থেকে গানগুলো শোনার জন্য ধন্যবাদ, আগামী সপ্তাহে আবার কথা হবে।
|