সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে এমন অনেক লোক রয়েছেন, যাঁরা বিদেশে অধ্যয়ন শেষে বিদেশের শ্রেষ্ঠ ও আধুনিক চিকিত্সা বিদ্যা ও প্রযুক্তি সিনচিয়াংয়ে এনেছেন। তাঁরা সিনচিয়াংয়ে ফিরে আসার পর অনুশীলন করা, নবায়ন আর উদ্ভাবন করায় সিনচিয়াংয়ের চিকিত্সার মান দ্রুতভাবে উন্নতি হয়েছে। এখন তাঁদের মান ও বিশ্বের চিকিত্সার মানের মধ্যে ব্যবধান কমে গেছে।
২০০৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসের একদিন উত্তরপশ্চিম চীনের লিভার ট্র্যানসপ্লান্টেশনের ক্ষেত্রে প্রথম সাফল্যজনক অস্ত্রোপচার সিনচিয়াংয়ের চিকিত্সা ও ভেষজ বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন হাস্পাতালে করা হয়। এই রোগী হচ্ছেন সিনচিয়াংয়ের একটি গ্রামের উইগুর জাতির দুটি শিশু। তাদের অস্ত্রোপচার করা খুবই কঠিন। তবে ব্যাপক সাহায্যকারী লোকের সাহায্যে অবশেষে এই অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। এই দু'টি শিশুর মা মাদাম আইসেমু আইকে আবেগের সঙ্গে বলেছেন,
এর আগে আমি দুটি শিশুর পরিস্থিতি নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন ছিলাম। আমি মনে করি, এখানে অস্ত্রোপচারের মান খুবই ভালো না। এই হাস্পাতালে গেলে ডাক্তার আমাদের আর্থিক সাহায্য দিয়েছেন। আমরা হাস্পাতাল ও পরিচালক ওয়েনকে বিশেষভাবে ধন্যাবাদ জানাই।
পরিচালক ওয়েনের পুরো নাম ওয়েন হাও। তিনি হচ্ছেন সিনচিয়াংয়ের চিকিত্সা ও ভেষজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম আওতাধীন হাস্পাতালের প্রধান। তিনি এবারকার অস্ত্রোপচারের একজন প্রধান শল্যচিকিত্সক। বর্তমানে এই হাস্পাতাল হচ্ছে সিনচিয়াংয়ের বৃহত্তম সার্বিক হাস্পাতাল। এই হাস্পাতালের কয়েকটি চিকিত্সা প্রযুক্তি চীনের শ্রেষ্ঠ সারীতে প্রবেশ করেছে। কিছু কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হয়েছে। বিদেশে অধ্যয়ন শেষে দেশে ফিরে আসার পর তাঁরা হাস্পাতালের সাফল্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
বর্তমানে এই হাস্পাতালে ৪০জন চিকিত্সক রয়েছে। চিকিত্সাবিদ্যায় স্নাতকোত্তর প্রাপ্ত রয়েছেন ১৯০জন। তাঁদের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জাপানে গিয়ে শিক্ষা গ্রহণের পর ফিরে আসা চিকিত্সকের সংখ্যা এক শো। হাস্পাতালের প্রধান ওয়েন হাও তাদের মধ্যে একজন।
৫০ বছর বয়সীর ওয়েন হাও ব্রিটেন ও ফ্রান্সে পড়াশুনা করেছেন। তিনি চিকিত্সাবিদ্যা গবেষণা ও লিভার শল্যচিকিত্সা ক্ষেত্রে চমত্কার সাফল্য অর্জন করেছেন।
তিনি সিনচিয়াংয়ে ফিরে আসার পর তাঁর নেতৃত্বে সিনচিয়াং চিকিত্সা ক্ষেত্রের প্রধান পরীক্ষাগার গড়ে তুলেছেন এবং তা গবেষণার ঘাঁটি ও একটি শ্রেষ্ঠ দলে পরিণত হয়েছে। ওয়েন হাও বলেছেন, সিনচিয়াংয়ের চিকিত্সা ও ভেষজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম আওতাধীন হাস্পাতালে বিদেশের ব্যাপক চীনা প্রতিভা আকর্ষণ করার কারণ তিনটি। প্রথমত , হাস্পাতালে এসব প্রতিভার গুরুত্ব দেয়া। দ্বিতীয়ত, একটি ন্যায্য ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে, যাতে প্রতিভাবানের সাফল্য স্বীকৃতি পায়। তৃতীয়ত, প্রতিভাবানদের জীবন ও তাদের অনুভবকে গুরুত্ব দেয়া।
ওয়েন হাওয়ের উদ্যোগে বর্তমানে সিনচিয়াংয়ের চিকিত্সা ও ভেষজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম আওতাধীন হাস্পাতালের লক্ষ্য হচ্ছে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিখ্যাত ডাক্তারদের প্রশিক্ষণ করা। এর জন্য হাস্পাতালে বিখ্যাত ডাক্তার, বিভিন্ন চিকিত্সাবিদ্যার প্রধানদের নিয়োগ উন্মুক্ত করেছে। হাস্পাতালের বৈদেশিক আদানপ্রদান অব্যাহতভাবে সম্প্রসারিত হয়েছে। হাস্পাতালের আমন্ত্রণে দেশ ও বিদেশের বিখ্যাত বিশেষজ্ঞগণ সর্বশেষ তথ্য আদানপ্রদান ও বিনিময় করেছেন। বর্তমানে হাস্পাতাল ব্রিটেন, ফ্রান্স, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ইত্যাদি দশটি দেশের চিকিত্সাবিদ্যা ইনস্টিটিউট, একাডেমির সঙ্গে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আদানপ্রদানের সম্পর্ক গড়ে তুলেছে।
বিদেশ থেকে ফিরে আসা প্রতিভাবান ব্যক্তিরা এই সুষ্ঠু পরিবেশে কাজ করতে খুব আগ্রহী। তাঁদের অকৃত্রিম প্রচেষ্টায় কিছু শ্রেষ্ঠ গবেষণা প্রকল্প হাস্পাতালে চালু হয়েছে।
সিনচিয়াংয়ের চিকিত্সা ও ভেষজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম আওতাধীন হাস্পাতালে মহাপরিচালক ওয়েন হাওর মতো খুব বেশি প্রতিভাবান রয়েছেন। তাঁরা হান জাতি বা সংখ্যালঘু জাতি। নিজেদের ক্ষেত্রে তাঁরা সাফল্য অর্জন করেছেন। এর পাশা পাশি তাঁরা সিনচিয়াংয়ের বিভিন্ন জাতির লোকের ভালো স্বাস্থ্যের জন্য নিজেদের শ্রেষ্ঠতম অবদান রাখতে ইচ্ছুক।
|