v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-10-13 17:24:55    
ভারত-ইইউ শীর্ষ সম্মেলন

cri

    সপ্তম ভারত-ইইউ শীর্ষ সম্মেলন ১৩ অক্টোবর ফিনলান্তের রাজধানী হেলসিঙ্কিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জনমত মনে করে, ভারত ও ইইউ দু'বছর আগে কৌশলগত অংশীদারি সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সুতরাং দু'পক্ষ এবারের শীর্ষ সম্মেলনে এই সম্পর্ককে আরো জোরদার করার জন্য সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম নির্ধারণ করা হবে।

 এ বারের শীর্ষ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ইইউর বর্তমান পালাক্রমিক সভাপতি রাষ্ট্র ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাত্তি ভানহানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কসহ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সমস্যা নিয়ে গভীরভাবে আলোচনা করবেন। ইইউ কমিশনের চেয়ারম্যান জোস মানুয়েল বারোসো এবং ইইউর কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা বিষয়ক উর্ধ্বতন প্রতিনিধি জ্যাভিয়ের সোলানাও সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন। সম্মেলনের আলোচ্যবিষয়ের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে সন্ত্রাস দমন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও পুঁজি বিনিয়োগের সম্পর্ক , জ্বালানি সম্পদ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রের সহযোগিতা সম্প্রসারণ করা, বাস্তবভাবে দ্বিপক্ষীয় কৌশলগত অংশীদারি সম্পর্ক জোরদার করা, জাতিসংঘের সংস্কার , ভারতের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হওয়া এবং মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি ইত্যাদি। তা ছাড়া, ভারত এবারের সম্মেলনের মাধ্যমে ভারত-মার্কিন বেসামরিক পারমাণবিক প্রযুক্তির সহযোগিতা চুক্তির প্রতি ইইউর বিভিন্ন সদস্য দেশের সমর্থন অন্বেষণ করবে। এখন যদিও বৃটেন, ফ্রান্স ও জার্মানী পৃথক পৃথকভাবে এই চুক্তির প্রতি তাদের সমর্থন জানিয়েছে, তবু ফিনল্যান্ড, নরওয়ে, সুইডেন পারমাণবিক সরবরাহকারী দেশ গোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে এই ব্যাপারে নিজেদের মতামত প্রকাশ করে নি।

 ভারত ও ইইউর নেতারা ২০০০ সাল থেকে বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের প্রণালী শুরু করেন। ভারত ও ইইউর সম্পর্ক ঐতিহ্যিক বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের ভিত্তিতে বিভিন্ন ক্ষেত্র ছাড়িয়ে গেছে । বিশ্লেষকরা উল্লেখ করেছেন, ভারত ও ইউরোপের সম্পর্কের উন্নয়ন দু'পক্ষের কৌশলগত চাহিদার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।

 প্রথমতঃ, ইইউর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন হচ্ছে ভারতের কূটনৈতিক রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ইইউ বর্তমান বিশ্বের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বৃটেন ও ফ্রান্স উভয়েই জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য দেশ। জার্মানীও একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। সুতরাং ইইউর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করা , বিশেষ করে বৃটেন, ফ্রান্স ও জার্মানীর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন ভারতের বিশ্বের একটি বড় দেশ হওয়ার কৌশলগত স্বার্থের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হওয়া এবং ভারত-মার্কিন বেসামরিক পারমাণবিক প্রযুক্তির সহযোগিতা চুক্তিসহ বিভিন্ন সমস্যায় ভারতের ইইউর সমর্থন দরকার।

 দ্বিতীয়তঃ, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ভারতের অর্থনীতি এখন দ্রুত প্রবৃদ্ধির হার বজায় রাখছে। এর ফলে ভারত ইইউর বিভিন্ন দেশের আকর্ষণীয় নতুন বাজারে পরিণত হয়েছে। ভারতের ইইউর বিপুল পরিমাণ পুঁজি দরকার। ২০০৫ সালে ভারত ও ইইউর দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক মূল্য ৪০ বিলিয়ন ইউরোতে দাঁড়িয়েছে। ভারতের মোট রপ্তানীর পরিমাণের ২৪ শতাংশ ইউরোপের সঙ্গে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ১২ অক্টোবর হেলসিঙ্কিতে ইইউর বিভিন্ন দেশের কোম্পানিগুলো ভারতের বুনিয়াদী ব্যবস্থা নির্মাণের ক্ষেত্রে পুঁজি বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ভারত বিদেশী পুঁজি বিনিয়োগের সকল প্রক্রিয়া সহজ করবে।

 তা ছাড়া, ভারতের জৈব প্রযুক্তি ও তথ্য প্রযুক্তিসহ নানা নতুন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রের সামর্থ্য ধীরে ধীরে সারা বিশ্বে গ্রহণযোগ্য হচ্ছে। ইইউ এই ক্ষেত্রগুলোতেও ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা শুরু করেছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ইইউ আর ভারত "গ্যালিলিও পরিকল্পনা" সংক্রান্ত সহযোগিতামূলক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ভারত এই বেসামরিক উপগ্রহ দূরবর্তী নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনার চতুর্থ সহযোগিতার অংশীদারে পরিণত হয়েছে।

 এবারের শীর্ষ সম্মেলনের আগে ইইউ বলেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইইউ ও ভারতের সম্পর্ক সুষ্ঠুভাবে বিকশিত হয়েছে। ভারত একদিকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রতি দিনই আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, অন্য দিকে তার দ্রুত উন্নত অর্থনীতি ভারত ও ইইউর সম্পর্কের উন্নয়নের জন্য নতুন ভিত্তি স্থাপন করেছে। ১২ অক্টোবর "হিন্দুস্তান" পত্রিকায় প্রকাশিত ইইউ কমিশনের চেয়ারম্যান বারোসোর লেখা একটি প্রবন্ধে বলা হয়েছে, বর্তমান ইইউ ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো দ্রুত উন্নয়নের সন্ধিক্ষণে পৌঁছেছে।