v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-10-11 20:14:11    
পেইচিং ছাওইয়াং পার্ক পাড়া কমিটির প্রথম বিদেশী স্বেচ্ছাসেবক মাইকমেহর্ভার্জ

cri
    মার্কিনী নাগরিক মাইকমেহর্ভার্জ নিজের চীনা নাম "মাই ফেং হুয়া" নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি মনে করেন, তাঁর চীনা নাম খাঁটি চীনার মতো হয়নি। পেইচিংকে তাঁর নিজের বাড়ির মতো মনে হয়। তিনি বলেছেন, আমি চীনকে ভালোবাসি, আমি চীনে থাকতে ইচ্ছুক।

    মাইকমেহর্ভার্জ ইরানে জম্ম গ্রহণ করেন। তিনি একজন মনস্তত্ত্ব স্নাতকোত্তর এবং নিউরসাইকলজি চিকিত্সক। তিনি মার্কিন সাইকিআট্রিক হাস্পাতালে ও মনস্তত্ত্ব-সন্বন্ধীয় ব্যক্তিগত ক্লিনিকে বহু বছর কাজ করেছেন। ১৯৯৫ সালে তিনি চীনের থিয়েনচিন চীনা ঐতিহ্যবাহী চিকিত্সা কলেজে আকুপাংচার শিখেন। ১৯৯৯ সাল থেকে সাত বছর ধরে তিনি পেইচিংয়ে মনস্তত্ত্বিক-চিকিত্সা প্রদান করে আসছেন।

    সম্প্রতি চীনের ছাও ইয়াং পার্ক পাড়া কমিটি মাইকমেহর্ভার্জকে স্বেচ্ছাসেবকের পরিচয়পত্র প্রদান করেছে। তিনি এই অঞ্চলের প্রথম আনুষ্ঠানিক বিদেশী স্বেচ্ছাসেবকে পরিণত হলেন। তিনি পাড়া কমিটির কর্মীদের সঙ্গে পরামর্শ করে স্থির করেন যে, প্রত্যেক সপ্তাহে এই পাড়ার চীনা অধিবাসীদের একবার করে মনস্তাত্ত্বিক অবৈতনিক চিকিত্সা করবেন। যাতে যাদের মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা রয়েছে, সে সব চীনাদের সাহায্য করা যায়।

    সকলের জানা আছে, পেশাগত ক্লিনিকে তাঁর মতো মনস্তত্ত্বিক চিকিত্সকের পরামর্শ নেয়ার জন্য এক ঘন্টায় এক হাজার ইউয়ান খরচ হয়। তবে তিনি তাঁর চীনা প্রতিবেশীদের বিনামূল্যে চিকিত্সা করেন।

    তিনি বলেছেন, আমি চীনাদের সঙ্গে মত বিনিময় খুবই পছন্দ করি। কোকাকোলা , পিজ্জা খেতে আমার আগ্রহ নেই। আমি চীনের খাবার খুবই পছন্দ করি, এগুলো খুবই সুস্বাদ্যু। পেইচিংয়ের সিউশুই বাজার বিদেশীদের জিনিস কেনার একটি স্থান। মাইকমেহর্ভার্জ বলেছেন, কেনার সময়ে আমি পেইচিংয়ের সিতান বিপণী পছন্দ করি। এর পাশা পাশি আমি খাওয়ার সময়ে বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলা পছন্দ করি। এগুলো বলার সময়ে তাঁর চোখে মুখে আনন্দের ছাপ স্পষ্ট।

    চীনের পপ গান মাইকমেহর্ভার্জের খুব পছন্দ। তাঁর মোবাইল ফোনের গান হচ্ছে চীনের গায়ক ছিচিনের একটি সুন্দর গান---আমার চোখের জলকে আমার সঙ্গে রাত কাটতে দেবো না। চীনে সাত বছর থাকার পর তিনি মনে করেন, তিনি একজন খাঁটি চীনা।

    মাইকমেহর্ভার্জ মাঝেমধ্যে পার্কে গিয়ে চীনা অধিবাসীদের সঙ্গে থাইজি-মুষ্টিযুদ্ধ অনুশীলন করেন। তিনি আমাদের বলেছেন, তাঁরা সব সময় সকাল সাড়ে পাঁচটা পার্কে অনুশীলন করেন। কয়েক বার আমার দেরি হয়েছে, আমি পার্কে পৌঁছানোর সময়ে তাদের অনুশীলন শেষ। আমি খুব দুঃখিত হয়েছি।

    মাইকমেহর্ভার্জের অফিসের দেওয়ালে চীনের বিখ্যাত কবি লিপাইয়ের একটি কবিতা লেখা রয়েছে। তিনি বলেছেন, আমি চীনের কবি লিপাইয়ের কবিতা খুবই পছন্দ করি। তাঁর কবিতায় আমি রোম্যান্টিক বোধ করি। লিপাই একজন সুন্দর মেয়ে দেখার সময়ে একটি সুন্দর কবিতা দিয়ে তার সৌন্দয্যের প্রশংসা করতেন। সাইকমেহর্ভার্জ বলেছেন, যদিও আমি হান ভাষা বলতে পারি, তবে আমি চীনের অক্ষর চিনি না। তাই অনেক কবিতা বুঝি না। পরে আমি চীনা ভাষার অক্ষর শিখবো।

    মাইকমেহর্ভার্জ বলেছেন, পেইচিংয়ের জনগণ খুবই অতিথিপরায়ণ। একবার আমি এক ফ্লাইওভারের কাছে পথ হারিয়ে গেলাম। একজন পেইচিং বাসী আধা ঘন্টা ধরে আমার বাড়ি খুঁজে বের করতে সাহায্য করলেন। তারপর আমি জানতে পারি, এই মানুষের বাড়ি ঠিক উল্টো দিকে।

    একবার একজন মুচী তাকে বিমগ্ধ করেছেন। মুচী তাঁর জুতায় মেরামতের পর, মাইকমেহর্ভার্জ হঠাত্ জানালেন যে, তাঁর কাছে টাকা নেই। তখন তিনি মুচীকে বলেলেন, এখন আমার টাকা নেই, বিশ ইউয়ান আমি…" তাঁর কথা শেষ হওয়ার আগেই মুচী বলেন, ঠিক আছে। কোনো সমস্যা নেই। পরে দেন। এই মুচী আমাকে বিশ্বাস করেলেন। কিন্তু এই মুচী দরিদ্র। তিনি খুবই সদয়। আমি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাঁকে টাকা দিয়েছি।

    মাইকমেহর্ভার্জ বলেছেন, আমি চীনের পেইচিং খুব পছন্দ করি, পেইচিং নিয়ে আমার বিশেষ কোনো অনুভুতি নেই। কারণ এখানে আমার বাড়ি। অবশেষে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, বর্তমানে আমি চীনে চিরস্থায়ীভাবে থাকার জন্য কাজ করছি। তিনি মনে করেন, পরে আরো অনেক বিদেশী চীনে আসবেন এবং থাকবেন।