গত কয়েক বছরে চীন ক্রীড়া ক্ষেত্রে অনেক উন্নত হয়েছে। এথেন্স অলিম্পিক গেমসে চীন বিরাট সাফল্য অর্জন করে, ২০০৮ সালে পেইচিংয়ে অলিম্পক গেমস অনুষ্ঠিত হবে। ২৫ জুলাই চীনের জাতীয় ক্রীড়া ব্যুরো চীনের ক্রীড়া ক্ষেত্রে উন্নয়ন সংক্রান্ত পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী চীনের ক্রীড়া ব্যুরো পেইচিংয়ে ২০০৮ সাল অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠানের সুযোগ বাজে লাগিয়ে চীনের গণ ক্রীড়া পরিসেবা উন্নয়ন করবে, যাতে নাগরিকরা ব্যায়াম পরিসেবা উপভোগ করতে পারে। সঙ্গে সঙ্গে পেইচিং অলিম্পিক গেমসের সুযোগ কাজে লাগিয়ে চীনের ক্রীড়া পর্যায় উন্নয়ন করা যায়। শ্রোতা বন্ধুরা এখন শুনুন এ সম্বন্ধে একটি প্রতিবেদন।
২৫ জুলাই চীনের ক্রীড়া ব্যুরোর মহাপরিচালক লিউ ফেং বলেছেন, ভবিষ্যত্ পাঁচ বছরে চীনের ক্রীড়া ক্ষেত্রে লক্ষ্য হবে ২০০৮ সালের অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠানের সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যাপকভাবে গণ ক্রীড়া তত্পরতা চালানো, প্রাথমিকভাবে চীনের বৈশিষ্ট্য গণ ব্যায়ামের ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা, নাগরিকদের ক্রীড়া ও সংস্কৃতিতে তৃপ্ত করা, যাতে জাতীর স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন করা যায়। তিনি বলেন, অব্যাহতভাবে ক্রীড়ার উন্নয়ন করা, চীনের ক্রীড়ার সামর্থ্য জোরদার করা, ২০০৮ সাল অলিম্পিক গেমসসহ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় উত্কৃষ্ট সাফল্য অর্জনের চেষ্টা করা। অব্যাহতভাবে ক্রীড়া সংস্কার জোরদার করা, ব্যাপকভাবে ক্রীড়া উন্নয়ন করা।
লিউ ফেং বলেছেন, পেইচিং অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠানের সঙ্গে সঙ্গে চীন প্রচুর উন্নয়নের সুযোগ পাবে। ভবিষ্যত্ পাঁচ বছরে চীনের ক্রীড়া ক্ষেত্রে উন্নয়নে অলিম্পিক গেমসের ভূমিকা পালন করা উচিত। তিনি বলেছেন,
'পেইচিং অলিম্পিক গেমসের অনুষ্ঠানের সঙ্গে সঙ্গে নাগরিকদের ক্রীড়ার উত্সাহ বাড়বে, ক্রীড়া জ্ঞান জনপ্রিয় করে তোলা হবে। পেইচিং অলিম্পিক গেমসের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গণ ব্যায়ামের উন্নয়ন করা হবে। আমাদের ২০০৮ সাল অলিম্পিক গেমসে অংশ নেয়া ক্রীড়াবিদের সংখ্যা নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করবে। অলিম্পিক গেমসের মাধ্যমে আমরা প্রতিযোগিতার পরিচালক ও বিচারকদের প্রশিক্ষণ দেবো, এটা আমাদের ক্রীড়া সামর্থ্য উন্নয়নের অনুকূল হবে।'
লিউ ফেং বলেছেন, পেইচিং অলিম্পিক গেমসের অনুষ্ঠানে চীনের ক্রীড়া মহল আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি ও অন্য ক্রীড়া সংস্থার সংস্থানের অভিজ্ঞতা নিতে পারবে। এটা চীন ক্রীড়া উন্নয়ন ক্ষেত্রের অনুকূল। এর মাধ্যমে চীনের ক্রীড়া উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা হবে।
নতুন পরিকল্পনায় চীনের গণ ক্রীড়া, প্রতিযোগিতা ক্রীড়া, ক্রীড়া শিল্প ইত্যাদি ক্ষেত্রে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। লিউ ফেং বর্ণনা করেছেন, এর মধ্যে প্রধন বিষয় হল গণ ক্রীড়া ক্ষেত্র, কারণ চীন সরকারের মূল লক্ষ্য হল চীনের নাগরিকদের জন্যে উত্কৃষ্ট গণ ক্রীড়া পরিসেবা নিশ্চিত করা, জাতীর স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটানো। সেজন্যে, ভবিষ্যত্ পাঁচ বছরে চীনের ক্রীড়া ব্যুরো এক দিকে অলিম্পিক গেমসের সুযোগ ব্যবহার করে সকল নাগরিকের ব্যায়ামের পরিবেশ সৃষ্টি করা, অন্য দিকে চীনের বৈশিষ্ট্য গণ ক্রীড়া পরিসেবার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।
চীনের গণ ক্রীড়া পরিসেবা ব্যবস্থায় প্রধানত তিন অংশ আছে। এক, প্রচুর গণ ক্রীড়া ব্যবস্থা নির্মাণ করা, নাগরিকদের জন্যে ব্যায়ামের স্থান ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা। দুই, ব্যাপকভাবে ক্রীড়া ক্লাব, যুবক ক্রীড়া ক্লাবসহ তৃনমূল পর্যায়ে ক্রীড়া গোষ্ঠী প্রতিষ্ঠা করা, যাতে নাগরিকরা ব্যাপকভাবে এতে অংশ নিতে পারেন। তিন, বিষয় ও পদ্ধতি বৈচিত্র্যময় নাগরিক ক্রীড়া তত্পরতা ও প্রতিযোগিতা চালানো। তিনি বলেছেন,
'আমাদের তিনটি পর্যায় গুরুত্বপূর্ণ যে, নাগরিকদের ব্যায়ামের স্থান নির্মাণ করা, নাগরিকদের ক্রীড়া সংস্থা প্রতিষ্ঠা করা, নাগরিকের ক্রীড়া তত্পরতা চালানো।'
তিনি বর্ণনা করেছেন, নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, চীনের ক্রীড়া পরিসেবার ব্যবস্থা ২০১০ সালে প্রাথমিকভাবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।
তিনি আরো বলেছেন, ২০০৮ সাল অলিম্পিক গেমসের স্বাগতিক হিসেবে চীনা খেলোয়াড়দের উচিত প্রতিযোগিতায় উত্কৃষ্ট সাফল্য অর্জন করা। পেইচিং অলিম্পিক গেমসে চীনা খেলোয়াড়দের উচিত আরো বেশি পদক ও আরো বেশি পরিকল্পনার মাধ্যমে ফাইনালে প্রবেশ চেষ্টা করা। সঙ্গে সঙ্গে চীনের অলিম্পিক সাংগঠনিক কমিটি অলিম্পিক গেমসের সংগঠনিক কাজ ভালভাবে করার সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের পরিচালোনার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করবে।
Ok, এতক্ষণ শুনলেন চীন অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ক্রীড়া ক্ষেত্রের উন্নয়ন সম্বন্ধে একটি প্রতিবেদন। এখন আমি আপনাদের কাছে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির চেয়ারম্যান জ্যাকেস রোগ সম্বন্ধে কিছু বলব।
জ্যাকেস রোগ ১৯৪২ সালের ২ মে ব্রাফেলসের কেন্টে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন মেডিক্যাল ডক্টর ছিলেন। তিনি ব্রাসেলস মুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া মেডিক্যাল শিক্ষক ছিলেন। একজন ইয়াছটিং(yachting) খেলোয়ার হিসেবে তিনি ১৯৬৮ সাল মেক্সিকো অলিম্পিক গেমস, ১৯৭২ সাল মিউনিখ অলিম্পিক গেমস ও ১৯৭৬ সাল মন্ট্রিল অলিম্পিক গেমসে অংশ নেন। তিনি একটিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, দুইটিতে বিশ্ব রানার্স-আপ ও ১৬টি ব্রাসেলস ১৬টিতে চ্যাম্পিয়ন অর্জন করেন। একজন রাগবি খেলোয়াড় হিসেবে তিনি ব্রাসেলস চ্যাম্পিয়ন হন এবং ১০বার ব্রাসেলস জাতীয় রাগবি দলে প্রবেশ করেন। অবসরের পর তিনি ব্রুসেল্সের ঘেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিক্যাল লেখাপড়া করেন, ডক্টর ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৮০ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্র মস্কো অলিম্পিক গেমস বিরোধীতা করার সমর্থন করে ব্রুসেল্স প্রতিনিধি দল নেতৃত্বাধীন মস্কো অলিম্পিক গেমসে অংশ নেন। ১৯৯০ সালে তিনি ইউরোপীয় দেশগুলোর অলিম্পিক কমিটির চেয়ারম্যান হন। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তিনি ব্রুসেল্স অলিম্পিক ও ফেডারেল অলিস্পিক চেয়ারম্যান হন। তিনি ১৯৭৬ সালে ইন্সব্রুক শীতকালীন অলিম্পিক গেমস, ১৯৮৮ সাল কালগারি শীতকালীন অলিম্পিক গেমস, ১৯৮০ সাল মস্কো অলিম্পিক গেমস, ১৯৮৪ সালে লসত্র্যাঞ্জেলস অলিম্পিক গেমস ও ১৯৮৮ সাল অলিম্পিক সংগঠনিক কমিটির দায়িত্ববান ব্যক্তি ছিলেন। ১৯৯০ সালে তিনি আন্তর্জাতিক অলিম্পক কমিটির অলিম্পিক গেমস কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৯১ সাল তিনি আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৯২ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তিনি গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক গেমসের পরিকল্পনা কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৯২ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত তিনি ২০০০ সাল ২৭তম সিডনি অলিম্পিক গেমসের ওষুধ কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৯৪ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত তিনি সিডনি অলিম্পিক গেমসের সমঝোতা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৯৫ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির সমঝোতা কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০০১ সালের জুলাই মাসে তিনি আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির চেয়ারম্যানের পদে নিযুক্ত হন, সঙ্গে সঙ্গে সমঝোতা কমিটির চেয়ারম্যান পদ ত্যাগ করেন।
তিনি নেথারল্যান্ড, ফ্রান্সী, ব্রিটিশ, স্পেন, জার্মানী ও ব্রুসেল্সের বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষা বুঝেন, তিনি এজন ভাষার বিশেষজ্ঞ হন।
|