v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-10-02 19:25:52    
সিনচিয়াংয়ে চীনা ভাষা ও আঞ্চলিক ভাষা শিক্ষার প্রবর্তন

cri
    সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল বহু জাতির মিলন কেন্দ্র ছিল। উইগুর, কাজাখ, মঙ্গোলিয়া ইত্যাদি সংখ্যালঘু জাতির পৃথক পৃথক ভাষা ও অক্ষর রয়েছে। এর আগে সিনচিয়াংয়ের বহু জায়গায় হান জাতির শিশু ও সংখ্যালঘু জাতির শিশুরা ভিন্ন ভিন্ন স্কুলে পড়াশুনা করতো। ফলে সংখ্যালঘু জাতির ব্যাপক ছাত্রছাত্রীরা হান ভাষা অর্থাত্ স্ট্যান্ডার্ড চীনা ভাষা বুঝতে পারে নি।

    গত দু'বছরে সিনচিয়াংয়ে স্ট্যান্ডার্ড চীনা ভাষা ও স্থানীয় আঞ্চলিক ভাষা সংক্রান্ত শিক্ষা নীতি চালু হয়েছে। হান জাতি এবং সংখ্যালঘু জাতির শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা একই স্কুলে যায়। সংখ্যালঘু জাতির শিক্ষকরা হান ভাষা ও সংখ্যালঘু জাতির ভাষা দিয়ে শিক্ষা দেন। সংখ্যালঘু জাতির ছাত্রছাত্রীদের নিজের জাতীয় ভাষা ও অক্ষর শেখা ছাড়া, হান ভাষা শিখতে হয়।

    উরুমচি শহরের ১৬তম প্রাথমিক স্কুল একটি সংখ্যালঘু জাতি স্কুল। শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রী হচ্ছে সংখ্যালঘু জাতি। দুটি ভাষা শিক্ষার নীতি কার্যকরীর পর হান জাতির শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রী স্কুলে এসেছে। আস্তে আস্তে দু'জাতির ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। দু'জাতির ছাত্রছাত্রী নিজেদের ভালভাবে বুঝে উঠেছে। তারা ঘনিষ্ঠ বন্ধু পরিণত হয়।

     যেমন এই প্রাথমিক স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র রেন ডান ইয়াং সব সময় সংখ্যালঘু জাতির ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে মত বিনিময় করে। ফলে সংখ্যালঘু জাতির জাতীয় প্রথা বুঝতে সক্ষম হয়েছে। এর পাশা পাশি সে উইগুর ভাষার কিছু বুঝতে পারে। বর্তমানে সে উইগুর ভাষার মাধ্যমে সংখ্যালঘু জাতি ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে সাবলিলভাবে আলোচনা করে। সে বলেছে, উইগুর জাতি ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে পড়াশুনা করে, কেবল আমাদের মৈত্রী উন্নত হচ্ছে তা নয়, বরং আমি তাদের ভাষা শিখেছি। আমরা অভিন্ন ভাষার মাধ্যমে পারস্পরিক সাহায্য করার ফলে কোন বিষয়ে মতভেদ হবার সম্ভাবনা কম। আমার এবং সংখ্যালঘু জাতি ছাত্রছাত্রীদের মত বিনিময়ের কারণে তাদের সঙ্গে আমার গভীর সম্পর্ক হয়েছে। আমি মনে করি, আমি উইগুর ভাষা বুঝতে পারি , ফলে বন্ধুদের উইগুর জাতির প্রথা আরো ভালোভাবে ব্যাখ্যা করতে পারি।

    সিনচিয়াং উরুমচি শহরের পঞ্চম মাধ্যমিক স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী আজিরেকুলি একজন উইগুর মেয়ে। এর আগে তার হান ভাষা ভালো ছিল না। দু'টি ভাষা শিক্ষা বাস্তবায়িত হবার এক বছর পর তার মৌলিক ভাষা দ্রুতভাবে উন্নীত হয়েছে। হান ভাষা সংক্রান্ত প্রতি পরীক্ষায় শীরোপা অর্জন করেছে। সে বলেছে, বর্তমানে আমার মৌলিক ভাষা দ্রুতভাবে উন্নত হচ্ছে। হান জাতির ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আদানপ্রদান করার সময় আমার অসুবিধা নেই। এর পাশা পাশি আমি হান জাতির অনেক ছেলেমেয়ের ভাল বন্ধু হয়েছি।

    সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের শিক্ষা বিভাগের উপপরিচালক মা ওয়েন হুয়া বলেছেন, দু'বছরের দুটি ভাষায় শিক্ষায় ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। সংখ্যালঘু জাতির হান ভাষা শিখা হচ্ছে সমাজের চাহিদা। তারা হান ভাষা ভালোভাবে শিখছে, তারপর চীনের উন্নত অঞ্চলে ভালো চাকরি পাওয়ার সুযোগ পেতে পারে। সংখ্যালঘু জাতি খুবই সুন্দর হান ভাষা বলতে পারেন, ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করা বা কর্মজীবনের সাফল্য অর্জনের ক্ষেত্রে আরো বেশি সুবিধা পেতে পারে। দুটি ভাষা জানার লোক আরো বেশি সুযোগ পেতে পারে।

    সিনচিয়াংয়ের সংখ্যালঘু জাতি ছাত্রছাত্রীদের হান ভাষার মান যথাশীঘ্রই উন্নত করার জন্য কতকগুলো ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তাছাড়া কেন্দ্রীয় সরকার ও চীনের অন্যান্য প্রদেশ সিনচিয়াংয়ের সংখ্যালঘু জাতির শিক্ষায় ব্যাপক সাহায্য দিয়েছে।

    ২০০০ সাল থেকে চীনের ২৪টি সংখ্যালঘু জাতির ছাত্রছাত্রীদের জন্য মাধ্যমিক স্কুলের ক্লাস চালু হয়েছে। প্রত্যেক বছরে সিনচিয়াংয়ের সংখ্যালঘু জাতির এক হাজারেরও বেশি ছাত্রছাত্রী বিভিন্ন স্তরের এই ক্লাসে প্রশিক্ষণ পেয়েছে। এসব ছাত্রছাত্রী উন্নত নগরে চার বছরের পড়াশুনার মাধ্যমে সার্বিক গুণাবলী উন্নীত করেছে। অনেক ছাত্রছাত্রী চীনের শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে সিনচিয়াংয়ে "হান ভাষা ভালো শিখার পর সারা দেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে, ইংরেজী ভালো শিখার পর বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে পারে" এই কথা সিনচিয়াংয়ের বিভিন্ন জাতির মুখে মুখে হয়।