পৃথিবীর আশিটিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে তাইওয়ান প্রণালীর দুই পারের একত্রিকরণ সংক্রান্তবেসরকারী সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । এই সব সংগঠন প্রণালীর দুই তীরের সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য সক্রিয় প্রচেষ্টা চালাচ্ছে । এ মাসের ২৬ ও ২৭ তারিখ বিদেশের এই সব সংগঠন এবং হংকং ও ম্যাকাওয়ের সংগঠনের মোট ১৩০জন প্রতিনিধি চীনের মূলভূভাগে এসে তিন গিরিখাতের একটি জাহাজে জড়ো হয়ে চীনের পুনরেকত্রিকরণ তরান্বিত সম্বন্ধেপরস্পরের অভিজ্ঞতাবিনিময় করেছেন।
আশি বছর বয়সী হুয়াং ছি চি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন শহরের চীনের পুনরেকত্রিকরণ তরান্বিত সমিতির চেয়ারম্যান । গত ত্রিশ বছরে তিনি মাতৃভূমির শান্তিপূর্ণ একত্রিকরণ বাস্তবায়নের জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়েছেন । গত শতাব্দীর আশির দশকেই তিনি একটি দেশে দুই সমাজ ব্যবস্থা সম্বন্ধে নিজের মত প্রকাশ করেছেন । তিনি বলেছেন , একদেশে দুই সমাজ ব্যবস্থা ঠিক যেন এক পরিবারে স্বামী ও স্ত্রী । তারা বাবা মার ব্যবস্থাপনায় বিয়ে করেছেন। তাদের মধ্যে মতবিরোধ হয়ত খুব বেশি , তবে তারা একটি বাসায় থাকতে থাকতে বিনিময়ের মাধ্যমে পারস্পরিক সমঝোতা গড়ে তোলেন । দশ মাস অথবা দশ বছর পর তাদের একটি বাচ্চাও হতে পারে ।
এই দুজন ব্যক্তি ঠিক যেন মূলভূভাগ ও তাইওয়ান । জনগণের স্বার্থের জন্য তারা এক দেশে দুই সমাজ ব্যবস্থার নীতি গ্রহণ করেছেন । এক দেশে দুই সমাজ ব্যবস্থার নীতি কার্যকরীর পর পৃথিবীতে একটি একত্রিত শক্তিশালী চীনের জন্ম হবে ।
২০০০ সাল থেকে প্রণালীর দুই পারের জনগণ ও প্রবাসী চীনা ও বিদেশী চীনারা স্বাধীন তাইওয়ান প্রয়াসীদের বিরোধীতা করে অনেক কর্মসূচী নিয়েছেন । গোটা পৃথিবীর ৮০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে ১৭০টিরও বেশি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে প্রণালীর দুই পারের সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করছেন ।
চিলির চীনের একত্রিকরণ উন্নয়ন সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান ওয়াং উয়ে চিয়াং বলেছেন , প্রবাসী- চীনাদের সংগঠনগুলো চীনের একটি দেশপ্রেমিক শক্তি । এই সব সংগঠন চীনের পুনরেকত্রিকরণ বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে । ২০০০ সাল থেকে গোটা পৃথিবীর প্রবাসী চীনা ও বিদেশী চীনারা বার্লিন , ওয়াশিংটন , টোকিও , মস্কো ও ভিয়েনায় চীনের একত্রিকরণ সম্মেলন অনুষ্ঠান করেছেন । এ বছরের সম্মেলন আগামী ১৩ ডিসেম্বর থেকে চীনের ম্যাকাওয়ে অনুষ্ঠিত হবে । ম্যাকাওয়ে চীনের একত্রিকরণ সমিতির চেয়ারম্যান লিউ ই লিয়ান বলেছেন , ম্যাকাওয়ে সাফল্যের সঙ্গে এক দেশে দুই সমাজ ব্যবস্থার নীতি কার্যকরী করা হয়েছে । কাজেই ম্যাকাওয়ে এই সম্মেলন অনুষ্ঠানের বিশেষ তাত্পর্য আছে । এই সম্মেলনে অংশ নেয়ার পর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের প্রবাসী চীনা ও বিদেশী চীনারা ম্যাকাওয়ের মাতৃভূমির কোলে ফিরে আসার পর আর এক দেশে দুই ব্যবস্থা কার্যকরীর পর ম্যাকাওয়ের বাস্তব অবস্থা স্বচোখে দেখতে পাবেন । ম্যাকাও প্রণালীর দুই পারের মধ্যে যোগাযোগ ও উন্নয়নের সেতু হিসেবে ভুমিকা নিতে পারে ।
এই সম্মেলনে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রবাসী চীনা ও বিদেশী চীনার প্রতিনিধি এবং তাইওয়ান , হংকং ও ম্যাকাওয়ের পন্ডিতরা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা প্রণালীর দুই পারের সফর বিনিময় , আর্থ-বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং মূলভূভাগ ও তাইওয়ানের সম্পর্কোন্নয়নের বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করবেন ।
|