v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-09-25 13:56:44    
ইইউ ও রাশিয়ার সম্পর্ক কেন ঘনিষ্ঠ হয়ে আসছে

cri

 ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট জ্যাক শিরাক , জার্মানীর প্রধানমন্ত্রী এন্জেলা মার্কেল ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ২৩ সেপ্টেম্বর ফ্রান্সের উত্তরাংশের শহর কম্পিয়েনে ত্রিপক্ষীয় শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করেছেন। তাঁরা প্রধানতঃ জ্বালানি সম্পদ, ইউরোপ ও রাশিয়ার সম্পর্ক ও মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন।

 বিশ্লেষকরা উল্লেখ করেছেন, এটা হচ্ছে ১৯৯৮ সালের পর রাশিয়া, ফ্রান্স ও জার্মানীর ষষ্ঠতম ত্রিপক্ষীয় শীর্ষ বৈঠক। তা থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে, রাশিয়া, ফ্রান্স ও জার্মানী এই তিনটি দেশের নেতাদের বৈঠক যথাক্রমে এক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তিনটি দেশের সম্পর্ক অর্থাত্ ইউরোপীয় ইউনিয়ন আর রাশিয়ার সম্পর্ক যথাক্রমে ঘনিষ্ঠ হয়ে আসছে।

 এবারের ত্রিপক্ষিয় বৈঠক চলাকালে প্রেসিডেন্ট পুতিন জ্বালানি সম্পদ আর শিল্প ক্ষেত্রে ইউরোপ ও রাশিয়ার সহযোগিতার ব্যাপারে ফ্রান্স ও জার্মানীর সংশয় দূর করেছেন। প্রেসিডেন্ট শিরাকের সঙ্গে বৈঠক করার সময়, পুতিন বলেছেন, বর্তমানে রাশিয়া আর ফ্রান্সের সম্পর্ক ভালো, বিশেষ করে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে দু'পক্ষের সম্পর্ক দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। ফলে রাশিয়া উত্তর মেরুর তেলখনিপূর্ণ অঞ্চলে ফ্রান্সের টোটাল পেট্রোলিয়াম কোম্পানির অনুসন্ধানের অধিকার হঠকারীভাবে বাতিল করবে না। এ ছাড়া, পুতিন আরো বলেছেন, রাশিয়া অব্যাহতভাবে শিল্প ক্ষেত্রে ইউরোপের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক জোরদার করবে এবং যথাসাধ্য ফ্রান্স ও জার্মানী প্রভৃতি ইউরোপীয় সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের জ্বালানি সম্পদের চাহিদা মেটাবে।

 বৈঠকের পর অনুষ্ঠিত যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে তিনটি দেশের শীর্ষ নেতারা ত্রিপক্ষীয়শীর্ষ বৈঠক ব্যবস্থার গভীর মূল্যায়ন করেছেন। শিরাক মনে করেন, এই ব্যবস্থা তিন পক্ষের মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এবং সহযোগিতা গভীর করার জন্য হিতকর। পুতিন মনে করেন, এই ব্যবস্থা রাশিয়া ও ইউরোপের কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্কোন্নয়ন ত্বরান্বিত করার নির্ভরশীল ব্যবস্থায় পরিণত হওয়া উচিত। মার্কেল বলেছেন, স্বয়ংসম্পূর্ণতিনটি দেশের শীর্ষ বৈঠক ব্যবস্থা রাশিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্পর্ক স্থিতিশীল ও গভীরতর করার জন্য অনুকূল।

 বিশ্লেষকরা মনে করেন , ইউরোপীয় ইউনিয়ন আর রাশিয়ার সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণ প্রধানতঃ তিনটি।

 প্রথমতঃ ইউরোপীয় ইউনিয়ন আর রাশিয়ার বাণিজ্যিক সহযোগিতার দ্রুত উন্নয়ন দু'পক্ষের সম্পর্কের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করেছে। ১৯৯৫ সালে ইইউ আর রাশিয়া দু'পক্ষের "অংশীদারিত্বের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক চুক্তির" কাঠামোতে বাণিজ্য ক্ষেত্রের অস্থায়ী চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ২০০৫ সালে রাশিয়া ইইউর তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদারে পরিণত হয়েছে।

 দ্বিতীয়তঃ বহু ধরণের জ্বালানি সম্পদের সরবরাহ পাওয়ার জন্য ফ্রান্স ও জার্মানী নিরন্তরভাবে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক গভীরতর করে আসছে। এখন প্রতি বছর ইইউ রাশিয়া থেকে রপ্তানী করা প্রাকৃতিক গ্যাসের পরিমাণ তার মোট রপ্তানী করা প্রাকৃতিক গ্যাসের পরিমাণের প্রায় ৩০ শতাংশ। মধ্যপ্রাচ্যের দাঙ্গাহাঙ্গামা পরিস্থিতিতে ইইউকে রাশিয়ার দেয়া জ্বালানি সম্পদের গুরুত্ব আরো লক্ষণীয় হয়ে উঠেছে। এই বছরের প্রথম দিকে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রাকৃতিক গ্যাস নিয়ে বিবাদ দেখে ইইউ নিজের জ্বালানি সম্পদের নিরাপত্তার জন্য গভীর উদ্বেগ বোধ করে। এবারের বৈঠকে প্রেসিডেন্ট পুতিন ঘোষণা করেছেন, রাশিয়া জ্বালানি সম্পদ ক্ষেত্রে তার ইউরোপীয় অংশীদারদের কাছে দেয়া প্রতিশ্রুতি পালন করবে। পুতিনের প্রতিশ্রুতি নিঃসন্দেহে ফ্রান্স ও জার্মানীকে সান্ত্বনা দিয়েছে।

 তৃতীয়তঃ ভৌগলিক রাজনীতি বা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা উভয় দিক থেকে বিবেচনা করলে রাশিয়ার ইইউর মতো একটি কৌশলগত অংশীদার লাগবে। ইইউর অর্থনৈতিক আকার বিরাট , উন্নত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অধিকারী এবং রাশিয়ার প্রতিবেশী। রাশিয়ার কূটনীতিতে ইইউর সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক উন্নয়নের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মর্যাদা আছে।

 উপরোক্ত তিনটি কারণে ইইউ আর রাশিয়ার সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়ে আসছে।