v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-09-25 09:04:39    
" কাজের পাশা পাশি লেখাপড়া করা" হচ্ছে চীনের পেশাগত শিক্ষা ক্ষেত্রের নতুন রূপ

cri
    চীনের বিভিন্ন স্থানে বর্তমানে একটি নতুন ধরণের পেশাগত শিক্ষা রূপ লাভ করছে । এটি " কাজের পাশা পাশি লেখাপড়া করা"-এর মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের প্রযুক্তিগত লেখাপড়ার সময় কোম্পানিতে কাজ করার সুযোগ দেয়া । এই পদ্ধতিতে প্রশিক্ষিত স্নাতকদের নিজেদের যোগ্যতা বেড়ে যায় এবং সামগ্রিক গুণগত মানও ভাল হয় । যা শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যে খুবই সহায়ক । " কাজের পাশা পাশি লেখাপড়া করা" হচ্ছে তাক্তিক লেখাপড়ার সঙ্গে প্রযুক্তিগত কাজ করার পেশাগত শিক্ষার রূপ। চীনের মধ্যাঞ্চলের হুনান প্রদেশে মোট ৩৮টি শহর ও জেলার পেশাগত বিদ্যালয় এই " কাজের পাশা পাশি লেখাপড়া করার " পদ্ধতি পালন করছে । এসব বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের শখ অনুযায়ী হোটেল প্রসাশন এবং ছাঁচ তৈরী করা সহ বিভিন্ন বিষয়ে লেখাপড়া করে। তিনবছরব্যাপী লেখাপড়ার এই কোর্সের অর্ধেক সময় বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার পর , ছাত্রছাত্রীরা বাকী অর্ধেক বছর শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কাজ করে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ গ্রহণ করতে পারে। তিনবছরের লেখাপড়া ও কাজ করার পর, তারা পেশাগত ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত যোগ্যতাসম্পন্ন এই সার্টিফিকেট পারে এবং সংশ্লিষ্ট শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কাজ করতে পারবে ।

    হুনান প্রদেশের প্রযুক্তি শিক্ষার পেশাগত কলেজের প্রধান ইয়াং তুংলিয়াং বলেছেন, বর্তমানে এই কলেজ পাঁচটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে " কাজের পাশা পাশি লেখাপড়া করার " বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

    " আমরা শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর চাহিদা অনুযায়ী ছাত্রছাত্রীদের জন্যে প্রশিক্ষণ পরিকল্পনার ব্যবস্থা নিয়েছি , তাই বলেছে যে, ছাত্রছাত্রীরা লেখাপড়া শেষ করার আগেই কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছে। আগামী বছর আমরা প্রায় ২ হাজারেরও বেশি ছাত্রছাত্রীদের তালিকাভূক্ত করবো।"

    এই " কাজের পাশা পাশি লেখাপড়া করার " প্রশিক্ষণ-প্রাপ্ত স্নাতক ছাত্রছাত্রীদের যোগ্যতা বেশ উন্নত এবং সামগ্রিক গুণগত মানও ভাল। তাই শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যে খুবই সহায়ক । হুনান প্রদেশের ছাংসা শহরের একটি " চিন নিউচিও ওয়াং" নামক খাবার প্রতিষ্ঠান হুনান প্রদেশের প্রযুক্তি পেশাগত কলেজের সঙ্গে কর্মসংস্থানের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই কোম্পানির প্রধান ছাই ইয়ান বলেছেন যে, এই নতুন শিক্ষা পদ্ধতির উপর তার পুরোপুরি সমর্থন রয়েছে । এবং ছাত্রছাত্রীদের প্রশিক্ষণ কাজের মাধ্যমে শিক্ষা প্রদানের প্রচেষ্টা চালাতে ইচ্ছুক।

    " আমরা জণশক্তিসম্পদ পক্ষের বিশেষ শিক্ষক বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে প্রতিটি ছাত্রছাত্রীকে প্রশিক্ষণ দেবো। এইভাবে ছাত্রছাত্রীরা আমাদের কোম্পানিতে ভালভাবে কাজ করতে পারবে ।"

    চীনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কুয়াংতুং প্রদেশের ফেংখাই জেলায় ৯টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থানীয় পেশাগত কলেজের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। যাতে " কাজের পাশা পাশি লেখাপড়া করা" এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যায়। ফেংখাই জেলার মাধ্যমিক পেশাগত বিদ্যালয়ের প্রধান ছেন হুয়ানচাও বলেছেন যে, এই বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা অর্ধেক বছর লেখাপড়া করে আর অর্ধেক বছর লেখাপড়ার পাশা পাশি কাজ করে। ছাত্রছাত্রীরা কাজের মাধ্যমে অর্জিত টাকা দিয়ে বিদ্যালয়ের খরচ চালাতে পারে।

    চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কেলামাই পেশাগত প্রযুক্তিগত কলেজের হোটেল প্রসাশন হচ্ছে এই কলেজের " কাজের পাশা পাশি লেখাপড়া করা" প্রশিক্ষণ পদ্ধতির প্রথমবারের মত পরিক্ষার বিষয়। এই কলেজ শিক্ষাক্ষেত্রের পরিকল্পনা অনুযায়ী ছাত্রছাত্রীকে স্থানীয় হোটেলে কাজ করার বিষয়টি বাস্তবায়ন করেছে। এবং প্রতিমাসে প্রত্যেক ছাত্রছাত্রী প্রায় ৩০০ ইউয়ান অর্জন করতে পারে। এই অর্ধেক বছরের কাজ করার পর, ছাত্রছাত্রীরা আবার কলেজের ক্লাসে ফিরে যায়।

    আরো জানা গেছে, " কাজের পাশা পাশি লেখাপড়া করা" এই পদ্ধতি নিয়ে অনেক পেশাগত বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা লেখাপড়া শেষ হবার আগেই কাজের সম্পর্কে সবকিছুই জানতে পারে। এ ধরণের ছাত্রছাত্রীরা তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ খুবই সহজেই পেয়ে যায়। কুয়াংতুং প্রদেশের ফেংখাই জেলার মাধ্যমিক পেশাগত বিদ্যালয়ের ছাত্র ইয়ানহুই সংবাদদাতার কাছে বলেছে যে, এই বিদ্যালয়ের কর্মসংস্থানের অবস্থা সাধারণ উচ্চ পর্যায়ের বিদ্যালয়ের কর্মসংস্থানের অবস্থার চেয়ে আরো বেশী ভাল।

    " এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা সহজভাবে কাজ পারে না, আমরা এই বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার পাশা পাশি কাজ করি বলেই আমাদের ভবিষ্যত্ কর্মসংস্থানের সুযোগ বেশি ভাল।"

    আরো জানা গেছে, " কাজের পাশা পাশি লেখাপড়া করা" এই ধরণের শিক্ষা উন্নতদেশগুলোর ১০০ বছরের ইতিহাস আছে। জর্মানীতে ছাত্রছাত্রীরা প্রত্যেক সপ্তাহে তিন দিন কাজ করে এবং দুই দিন তাত্তিক বিষয়ে লেখাপড়া করে। প্রায় ৬০ শতাংশ ছাত্রছাত্রীরা এই ধরণের শিক্ষা রূপ গ্রহণ করে থাকে ।