নারীদের জীবনে গর্ভাবস্থা একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ সময় । গর্ভকালে ভালোভাবে গর্ভবতীদের স্বাস্থ্য বজায় রাখা গর্ভবতী আর তাঁদের বাচ্চাদের জন্য অনেক সহায়ক । আজকের অনুষ্ঠানে আমরা এ বিষয় নিয়ে কয়েকটি টিপস ব্যাখ্যা করবো। গর্ভবতীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা করলে গর্ভবতী ও বাচ্চা উভয়েই সুস্থ থাকবে । যত তাড়াতাড়ি এ কাজ শুরু করবেন ততই ভালো হবে । কারণ গর্ভবতীদের স্বাস্থ্য তাঁদের বাচ্চাদের স্বাস্থ্যের উন্নয়নে সরাসরি প্রভাব ফেলে থাকে । গর্ভবতীরা তাঁদের স্বাস্থ্য সুস্থ রাখতে এবং জোরদার করতে চাইলে, কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবে ।
১. ঘুমানো ও জেগে উঠার সময় সুশৃঙ্খল হতে হবে
গর্ভকালে গর্ভবতীদের সহজভাবেই ক্লান্তি লাগে, এর জন্যে তাঁদের ঘুমানো ও জেগে উঠার সময় সুশৃঙ্খল হতে হবে এবং যথেষ্ঠ ঘুম প্রয়োজন । প্রতিদিন ৮ ,৯ ঘন্টার বেশি ঘুমানো ভালো । কিন্তু অতি দীর্ঘ ঘুম আবার ক্ষতির কারণও হতে পারে । নইলে শিশু জন্মানোকালে কষ্ট হবে ।
২. যুক্তিযুক্ত শরীর চর্চা প্রয়োজন
গর্ভবতীরা যুক্তিযুক্তভাবে তাঁদের শরীর চর্চা করলে শরীরের রক্তসংবহন ত্বরান্বিত করবে এবং শিশুদের ক্রমবৃদ্ধি আর গর্ভবতীদের বাচ্চা জন্মানোতে সহায়ক হবে ।
৩. যথাযথ খাবার খেতে হবে
গর্ভবতীদের খাবার শিশুদের উন্নতির ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে থাকে । এর জন্যে গর্ভবতীদের বেশি প্রোটিন, সবজী ও ফল খাওয়া ভাল এবং যত বেশি সম্ভব নানা ধরণের খাবার খাওয়া ভাল । মনে করুন, হাল্কা খাবার খান, অল্প পরিমাণ লবণযুক্ত খাবার খান । ঠাণ্ডা, কাঁচা, বেশি ঝাল খাবার খাবেন না , যেমন আইসক্রিম, কাঁচামরিচ, রসুণ ইত্যাদি , যাতে গর্ভপাত এড়ানো যায় । তাছাড়া , মদ আর ধুমপান করলে বা গর্ভবতীদের কাছাকাছি ধুমপান করলে সহজভাবেই শিশুদের বিকৃত চেহারা সৃষ্টি হতে পারে । এর জন্যে গর্ভবতীদের স্বামীর এ সময় ধুমপান করা উচিত নয় ।
বৃটেনের গবেষণা কর্মীরা বলেছেন, গর্ভকালে যদি গর্ভবতীদের শরীর যুক্তিযুক্তভাবে ভিটামিন ই গ্রহণ করেন, তাহলে তাঁদের শিশু হাঁপানিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে । যারা গর্ভকালে কম ভিটামিন ই খান সেই সব গর্ভবতীদের শিশুদের হাঁপানিতে আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি ভিটামিন ই খাওয়ার গর্ভবতীদের শিশুদের চেয়ে ৫ গুণ বেশি ।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, বিশেষজ্ঞরা ৫ বছরের মধ্যে ২০০০ জন গর্ভবতী আর তাঁদের শিশুদের ওপর তদন্ত করেছিলেন । পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, ভিটামিন ই শিশুদের ফুসফুসের উন্নতির জন্য সহায়ক ।গর্ভকালের প্রথম চার মাস হল একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় । কারণ শিশুদের স্বাসনালী তাঁদের প্রথম চার মাসের মধ্যে পূর্ণ উন্নতি হয় । বিশেষজ্ঞরা মনে করেন , গর্ভবতীদের এ সময়ে যুক্তিযুক্তভাবে ভিটামিন ই খাওয়া উচিত । জানা গেছে, বৃক্ষের তেল ও বাদামের মধ্যে প্রচন্ড ভিটামিন ই রয়েছে ।
৫.নানা ধরনের রোগ প্রতিরোধ করতে হবে এবং সাবধানে ঔষুধ খেতে হবে ।
গর্ভকালে যদি গর্ভবতীরা রোগে আক্রান্ত হয়, তাহলে ভালভাবে চিকিত্সা করা উচিত । যদি ঔষধ খেতে হয় , তাহলে অবশ্যই ডাক্তরকে জিজ্ঞেস করুন কোন ধরনের ঔষধ শিশুদের কম ক্ষতি করবে । নইলে সহজভাবে শিশুদের বিকৃত চেহারার সৃষ্টি হবে ।
৬. সুখী ও ভালো মন বজায় রাখুন । সবসময় গোসল করে শরীরের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা উচিত ।
আশা করি, প্রত্যেক নারী এসব টিপস মনে রাখবেন এবং ভালভাবে নিজেদের শিশু জন্মাতে নিজেরাই সাহায্য করবেন ।
|