v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-09-19 22:11:19    
গাও ছুয়েন শু ও তার চলচ্চিত্র "তুং চিং শেন ফান"("টোকিও বিচার")

cri
    ঐতিহ্যিক ঘটনা অনুযায়ী তৈরী করা চলচ্চিত্র "তুং চিং শেন ফান" অর্থাত "টোকিও বিচার" চলতি বছরের পয়লা সেপ্টেম্বর চীনের বিভিন্ন অঞ্চলের সিনেমা হলে প্রদর্শিত হয়। এই ছবি বিশেষজ্ঞদের স্বীকৃতি পেয়েছে।

    "টোকিও বিচার" ১৯৪৬ সালের দ্বিতীয় বিশ্ব মহাযুদ্ধের পর ১১টি দেশ নিয়ে গঠিত দূর-প্রাচ্য আন্তর্জাতিক সামরিক আদালতে ২৮জন জাপানী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়া দেখানো হয়েছে। ছবিতে চীনের জার্জ মেই রু আও, অভিসংশক শিয়াং জে জুয়েন ও নি জেং আও অন্য দেশের চাপে ৭জন জাপানী যুদ্ধাপরাধীকে যথাযোগ্য শাস্তি দিয়েছে। এই ঘটনার বাস্তব গল্প ছাড়াও ছবিতে একটি জাপানী পরিবারের যুদ্ধের যন্ত্রণা ও সহিংস অভিজ্ঞতার বর্ণনা করা হয়েছে। এই ছবিটি যুদ্ধে দু'পক্ষের বিপরীত হওয়ার গল্প চমত্কারভাবে সাজানো হয়েছে। ছবিটি খুবই আকর্ষণীয় ও চিত্তাকর্ষক। কিন্তু শুটিং করার সময় গাও ছুয়েন শু ও তার সহকর্মী অত্যন্ত সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন। এর মধ্যে সবচেয়ে কঠিন ব্যাপার ছিলো তাদের একটি পুরোপুরি বিচারের রেকর্ড সংগ্রহ করা। গাও ছুয়েন শু বলেছেন:

    "ঐতিহ্যিক রেকর্ড খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন। চীনে এমন দলিলপত্র খুব কম। আমরা অনেক চেষ্টার পরে পুরো ঘটনার সত্যতা খুঁজে বের করেছি। এর মধ্যে জাপানের কয়েকটি বই কাজে লেগেছে।"

    গাও ছুয়েন শু বলেছেন, শুটিংয়ের সময় সত্যতাই প্রথম, আকর্ষণীয়তা দ্বিতীয়। সত্য ঘটনা ছবিতে দেখানোর জন্য ছবিতে গাও ছুয়েন শু হালকা সবুজ রং ব্যবহার করেছেন। এই ছবির সবচেয়ে বড় সাফল্য হলো কিছু প্রধান অভিনেতাদের চিত্র পরিচ্ছন্নভাবে তুলে ধরা হয়। তারা হলো বিভিন্ন দেশের ১১জন বিচারক এবং ২৮জন যুদ্ধাপরাধী। এই ছবির ৮৫ শতাংশ কথাবার্তা ইংরেজি, ১০শতাংশ জাপানী এবং ৫ শতাংশ চীনা ভাষায়। কেউ কেউ ছবিটিকে চীনা পরিচালকের "বিদেশী সিনেমা" বলে থাকে। অভিনেতারা চীনের মুলভূভাগ, তাইওয়ান, হংকং, যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানের। অভিনেতাদের অভিনয়ের ব্যাপারে গাও ছুয়েন শু বলেছেন:

    "অভিনেতারা তো অভিনয় করে। আমার চোখে কোনো তারকা নেই। তাদের আগের সফলতা ভুলে নতুন ভূমিকায় মনোযোগ দেয়া উচিত। একজন পরিচালক হিসেবে অভিনেতাদের শূন্য থেকে নতুন ভূমিকা সৃষ্টি করার কথা জানাই।"

    এখন চল্লিশ বছর বয়স্ক গাও ছুয়েন শু বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবাদিকতা নিয়ে পড়লেন। তিনি একজন অভিজ্ঞ সাংবাদিক ছিলেন। তাই পরিচালক হওয়ার পর তিনি ডোকিউমেনট্রি তৈরী করতে পছন্দ করেন। "টোকিও বিচার"এর আগে তিনি একজন জনপ্রিয় ধারাবাহিক টিভি নাটকের পরিচালক ছিলেন। তার একটি পুরোনো ছবি "চিন ওয়ান তো", অর্থাত স্বর্ণ মটর, এ ছবিতে তিনি সাধারণ মানুষকে বেছে নিয়ে তাদের অভিনয় করিয়েছেন। পরে তিনি "তেরটি মামলা" ধারাবাহিক টিভি নাটকের শুটিং করেছেন। তা টিভি নাটকের ক্ষেত্রে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে।

    তিনি আরেকটি পুলিশ বিষয়ক টিভি নাটক করেছেন, এর নাম "পরাজিত"। তাও বড় সফল হয়েছে। তাকে এই বিষয়ক টিভি নাটকের দৃষ্টান্ত ব্যক্তিত্ব বলা যায়।

    গাও ছুয়েন শু'র ছবি সাধারণত বক্স অফিস হিট হয় এবং খুবই লাভজনক বলা যায়। তাই সব সময় তিনি সহজেই পুঁজি পান। কিন্তু "টোকিউ বিচার" শুটিংয়ের সময় একজন পুঁজি-বিনিয়োগকারী তার বরাদ্দ সরিয়ে নিয়েছে বলে শুটিংয়ের সময় কিছুটা অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছিলেন। তিনি এই ছবির স্বত্ব বন্ধক রেখে ৫ মিলিয়ন ইউয়ান পেয়েছেন। অবশেষে ছবিটি ঠিকভাবে নির্মিত হয়েছে। এই নিয়ে গাও ছুয়েন শু বলেছেন:

    "আমার মতে চলচ্চিত্রের চেয়ে টিভি নাটক করা আরো কঠিন। ভালো ছবি করা কোনো ব্যাপার নয়। ভালো টিভি নাটক করতে পারলে চমত্কারিত্ব দেখানো যায়। টিভি নাটকে দীর্ঘ সময় লাগে, বরাদ্দ বেশি। দর্শকদের ভালো না লাগলে তারা অন্য অনুষ্ঠান দেখবে।"

    গাও ছুয়েন শু বলেছেন, তিনি অভিজ্ঞতাকে উপভোগ করা তার জীবনের প্রথম দায়িত্ব মনে করেন। পরিচালক হিসেবে এ অভিজ্ঞতা ছবি ও নাটকের মাধ্যমে প্রকাশ করা প্রথম দায়িত্বের অংশ। এটাই তার জীবনের নীতি এবং পরম পাওয়া।