v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-09-19 21:10:06    
পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর বই

cri
    কিছু দিন আগ চীনের ' ছাও সুয়ে ছিনের ঘুড়ি শিল্প ' নামে একটি বই ২০০৬ সালে পৃথিবীর অন্যতম সবচেয়ে সুন্দর বই বলে নির্বাচিত হয়েছে । জামার্নী সরকারের আর্থিক সাহায্যে আয়োজিত এক বিশ্ব বইপত্র প্রতিযোগিতায় চীনের পাঠানো ' ছাও সুয়ে ছিনের ঘুড়ি শিল্প ' বইটি ৩৪টি দেশের পাঠানো ছ' শরও বেশি বই থেকে নির্বাচিত হয়ে অন্য দেশের ১৩টি বইয়ের সঙ্গে ' পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর বই হিসেবে পুরষ্কার পেয়েছে । এই বইয়ের লেখক ও ম্যানেজিং এডিটর হুয়াং তাও চিং বলেছেন , পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর বই হলো পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রকাশনালয় ও বিশেষজ্ঞদের স্বীকৃত এক আন্তর্জাতিক বই যাচাই প্রতিযোগিতা । পৃথিবী সবচেয়ে সুন্দর বই যাচাইয়ের মানদন্ড প্রধানতঃ বইয়ের বাঁধাই ও সাজসজ্জা আর বইয়ের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক অবদান । চীনের বিখ্যাত সাহিত্যিক ছাও সুয়ে ছিন প্রাচীন উপন্যাস লাল মহলের স্বপ্নের লেখক । তাকে চীনের সংস্কৃতির একজন প্রতিনিধি বলা যায় । তার ঘুড়ি শিল্প সম্পর্কিত বইটি চীনের এক সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার।

    ছাও সুয়ে ছিন শুধু একজন মহান সাহিত্যিক নন , তিনি একজন হস্তশিল্পীও ছিলেন । তিনি সুন্দর সুন্দর ঘুড়ি তৈরী করতে পারতেন এবং ঘুড়ী তৈরী সম্পর্কিত একটি বই লিখেছিলেন । কিন্তু এই বই এখন চীনে পাওয়া যায় না । ৮৩ বছর বয়সী খোং সিয়ান চে অনেক বছর আগে এই বই পড়েছিলেন এবং এই বইয়ের বেশির ভাগ বিষয়বস্তু স্মরণ করে বইটির লেখককে জানিয়েছেন । এই বইতে শতাধিক ঘুড়ির নকশা চিত্রিত করা হয়েছে। বইটির বাঁধাই প্রাচীনকালের পুথিপত্রের কায়দায় তৈরী করা হয়েছে । বইটিতে ঘুড়ির কোনো কোনো ডিজাইন দেখতে যেন বাতাসে উড়ছে । এই সব ডিজাইন বই থেকে কেটে ঘর সাজানো যায় ।

    এই বইয়ের ডিজাইনার চাও চিয়েন ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটের প্রফেসার , এই বইয়ের ডিজাইনের কাজ তিনি দীর্ঘ ছয় মাস করেছেন । তিনি বলেছেন , এই বইয়ের সাজসজ্জার কাজ শুরু হওয়ার আগে আমি ঘুড়ি ওড়াতে গিয়েছি এবং এই অভিজ্ঞতা উপলব্ধির চেষ্টা করেছি। এই বইয়ে প্রাচীন পুথিপত্রের কাগজ ব্যবহার করা হয়েছে। এই ধরনের কাগজের সঙ্গে ঘুড়ির কাগজের অনেক মিল আছে । তাই এই বই অন্য বইয়ের চেয়ে হালকা । চীনে ঘুড়ি তৈরীর ইতিহাস প্রায় এক হাজার বছরের পুরনো । ছাও সুয়ে ছিনের ঘুড়ি পেইচিংয়ের ঘুড়ির স্টাইল প্রতিনিধিত্ব করতে পারে । বতর্মানে ছাও সুয়ে ছিনের ঘুড়ি ইতোমধ্যে পেইচিং শহরের সম্পদ হিসেবে সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ।

    চীন একটি ঐতিহাসিক সভ্যতাসম্পন্ন দেশ । ছাও সুয়ে ছিনের ঘুড়ির মতো চীনে আরো অনেক লোকশিল্প আছে । এই সব লোকশিল্প সমাজের দ্রুত আধুনিকায়ন বাস্তবায়নের সঙ্গে সঙ্গে বিলুপ্তপ্রায় অবস্থায় রয়েছে । কয়েক বছর আগে চীন সরকার চীনা জাতির লোকশিল্প বাচাঁনোর আহ্বান জানিয়েছে।

    ২০০৫ সালে চীনের বিখ্যাত চীনা প্রকাশনালয় তিন শ' বছরের ইতিহাসস্পন্ন সান তুং প্রদেশের ইয়াং চিয়া হুর ব্লক মুদ্রণ ছবি প্রকাশ করেছে । এই বই ছাপার উচ্চ গুনগত মানের জন্য বইটি যুক্তরাষ্ট্রের বই ছাপা পুরষ্কার পেয়েছে । চীনা প্রকাশনালয় চীনের ব্লক মুদ্রণ ছবির ২০ খন্ড প্রকাশের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে ।

    চীনের সি ছুয়ান প্রদেশের রাজধানী ছেন তু শহরের একটি প্রকাশনালয় চীনের রীতিনীতি সংক্রান্ত বইয়ের সেট প্রকাশের দায়িত্ব নিয়েছে । এই বইসেটে মোট ২ হাজার ৭ শ' খন্ড আছে , এতে মোট ১০ কোটি ইউয়ান বিনিয়োগ করা হবে । চীনের মেধাস্বত্ব প্রকাশনালয় চীনের প্রত্যেক জেলার লোককাহিনী সংক্রান্ত বই প্রকাশ করবে । চীনে মোট ২ হাজার ৮ শ'টি জেলা আছে , কাজেই এই বইসেটে ২ হাজার ৮শ'টি খন্ড আছে ।

    চীনের লোকসংস্কৃতি প্রচারে বইপত্র সেতুবন্দের ভুমিকা পালন করে । সাধারণ অধিবাসী যাতে বিভিন্ন স্থানের লোকশিল্প উপলব্ধি ও উপভোগ করতে পারেন , সেজন্য প্রকাশনালয়গুলো বইগুলোর বিষয়বস্তু ও সাজসজ্জা সুন্দর করার চেষ্টা করছে । এ ক্ষেত্রে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর বই ' ছাও সুয়ে ছিনেরঘুড়িশিল্প ' এক দৃষ্টান্ত বলা যায় ।