v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-09-19 15:56:17    
উন্নয়নশীল দেশ আই এম এফ-এ আরো বেশি ভোটদানের অধিকার পেয়েছে

cri

 আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের ১৮৪টি সদস্য দেশ ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে সিঙ্গাপুরে ভোটদানের মাধ্যমে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, মেক্সিকো এবং তুরস্ককে আরো বেশি ভোটদানের অধিকার দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবারের সংস্কার এই সংস্থার সদস্য এশিয় এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর আরো বেশি ভূমিকা পালন করার জন্য অনুকূল হবে।

 জানা গেছে, ৯০.৬ শতাংশ সদস্য সংস্কারের সমর্থন ভোট দিয়েছে। আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলে চীনের ভোটদানের অধিকার পূর্বের ২.৯৮ শতাংশ থেকে বেড়ে বর্তমানে ৩.৭২ শতাংশে হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া, মেক্সিকো এবং তুরস্কের ভোটদানের অধিকারও যথাক্রমে ১.৩৫, ১.৪৫ এবং ০.৫৫ শতাংশে দাড়িয়েছে। এটা হচ্ছে গত ৬০ বছরে এই সংস্থার বৃহত্তম সংস্কার।

 আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল অর্থাত্ আই এম এফ হচ্ছে একটি আন্তর্জাতিক অর্থ সংস্থা। ১৯৪৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর এই সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘকাল ধরে এই সংস্থার অধিকাংশ ভোটদানের অধিকার উন্নত দেশগুলোর হাতে ছিলো। যেমন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, জাপান ও ক্যানাডার হাতে ৬৩ শতাংশ ভোটদানের অধিকার ছিলো। ফলে আই এম এফ এর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদির সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে এসব দেশ নিরঙ্কুশ প্রাধান্য বিস্তার করে। কিন্তু গোটা বিশ্বের জি ডি পির ২৫ শতাংশের অধিকারী এশিয়ার ভোটদানের অধিকার মাত্র ১০ শতাংশ। গত বছর চীনের জি ডি পির মোট মূল্য বিশ্বের চতুর্থ স্থানে রয়েছে। এটা বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডের মোট জি ডি পির দ্বিগুণের সমান। কিন্তু বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডের ভোটদানের অধিকার চীনের চেয়ে বেশি।

 এ থেকে বুঝা যায়, এই সংস্থার ভোটদান অধিকারের কোটায় বর্তমান আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক অবস্থা যুক্তিযুক্তভাবে প্রতিফলিত হতে পারে না। আই এম এফ সিঙ্গাপুর অধিবেশনে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, মেক্সিকো এবং তুরস্ক এই চারটি দেশের ভোটদানের অধিকার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। নিঃসন্দেহে পরিস্থিতি বিবেচনা করার পর নেয়া একটি উপযুক্ত সিদ্ধান্ত।

 প্রথমতঃ, এই সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, প্রত্যেক সদস্য অতিরিক্ত ক্রেডিট এবং মাঝারী মেয়াদী ঋণের পরিকল্পনা অনুযায়ী এই সংস্থার কাছে তার কোটার ৩০০ শতাংশের বেশি ধার নিতে পারে না। আরো বেশি কোটা পাওয়া মানে এই সংস্থা থেকে আরো বেশি ঋণ পাওয়া । দ্বিতীয়তঃ, এই দেশগুলো আরো বেশি ভোটদান অধিকার পাওয়ার পর, এই এম এফ সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় তারা আরো বেশি প্রভাব ফেলতে পারবে। আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের সারা বিশ্বের ভারসাম্য উন্নয়ন, আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং দারিদ্র্য বিমোচন প্রভৃতি সমস্যা সমাধানের পথে উন্নয়নশীল দেশগুলো নিজ ভোটদানের অধিকার কাজে লাগাতে পারে। যেমন ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশকে সাহায্য দেয়ার সময় বিশেষ অতিরিক্ত ধারা বা শর্ত যোগ করতে চাইলে , উন্নয়নশীল দেশগুলো নিজেদের ভোটদানের অধিকার দিয়ে তা কিছু মাত্রায় হ্রাস করতে পারে। যাতে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের উদ্দেশ্য আরো ভালোভাবে কার্যকর করা যায়।

 চীনের কথা ধরা যাক। চীন এখনো উন্নয়নশীল দেশ। অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের সঙ্গে নানা অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে। চীনের ভোটদানের অধিকার এবং অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের ভোটদান অধিকার মিলে এই সংস্থা আরো বিরাট ভূমিকা পালন করতে পারবে। চীন নিজের বাড়ানো ভোটদানের অধিকার কাজে লাগিয়ে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে উন্নত দেশ আর উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার প্রচেষ্টা চালাতে পারে।

 অবশ্যই আই এম এফ এর সংস্কার যথার্থ নয়। উন্নত দেশ বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র এই সংস্থায় এখনো নিরঙ্কুশ প্রাধান্য বিস্তার করে আছে। ফলে সংস্কার অব্যাহতভাবে চালানো দরকার। উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রবল আহ্বানে আই এম এফ এ ধরনের পরিকল্পনাও প্রণয়ন করেছে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, সংস্কার দু'বছর চলবে। প্রথমে, চীনসহ চারটি দেশকে আরো বেশি ভোটদানের অধিকার দেয়া হবে। দ্বিতীয়তঃ, আই এম এফ ও বিশ্ব ব্যাঙ্কের ২০০৭ সালের বার্ষিক সম্মেলন আয়োজনের আগে এই সংস্থার নির্বাহী বোর্ড ভোটদানের অধিকার সংক্রান্ত এক নতুন নিয়ম প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে মতৈক্য পৌঁছবে। যাতে সকল সদস্য দেশগুলো এই সংস্থায় যথাযথ ভোটদানের অধিকার আছে কিনা তা নিয়ে পর্যালোচনা করা যায়। জনমত আশা করে, ভোটদানের অধিকার ব্যাপারে আই এম এফ এর সংস্কারের পদক্ষেপ আরো দ্রুত কার্যকর হবে, যাতে পরিবর্তনশীল আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে যথা সম্ভব খাপ খেতে পারে।