v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-09-15 14:27:45    
মধ্যপ্রাচ্য দেশগুলোর মতে ইরাক যুদ্ধ হচ্ছে একটি বিপর্যয়

cri
    জাতি সংঘ মহাসচিব কফি আনান গত বুধবার বলেছেন , মধ্যপ্রাচ্যের অধিকাংশ নেতারা মনে করেন যে, ইরাক যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলর জন্যে বিপর্যয় ডেকে এনেছে ।১৪ সেপ্টেম্বর মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলোর বেতার , টেলিভিশন প্রভৃতি গণ মাধ্যম পর পর এই সম্পর্কে খবর দিয়েছে এবং আনানের বক্তব্যের পক্ষে মত প্রকাশ করেছে ।

     আনান গত বুধবার নিউইয়র্কে বলেছেন , তিনি তার সাম্প্রতিক মধ্যপ্রাচ্য সফরের সময় জানতে পেরেছেন , মধ্যপ্রাচ্যের অধিকাংশ দেশের নেতারা মনে করেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের বাধানো ইরাক যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের জন্যে একটি সত্যিকার দুর্যোগ এনে দিয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রকেও এক বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছে । আনান বলেছেন , মার্কিন বাহিনীর উচিত উপযুক্ত সময় ইরাক থেকে সরে যাওয়া । তবে মার্কিন বাহিনীর প্রত্যাহারের দরুণ সেখানে আরো ব্যাপক দাংগাহাংগামা ও আরো বেশি সহিংস ঘটনা সংঘটিত হওয়া উচিত হবে না ।

    মধ্যপ্রাচ্যের জনমত আনানের বক্তব্যের পক্ষে মত প্রকাশের পাশাপাশি বলেছে , ইরাক যুদ্ধ এই অঞ্চলের পরিস্থিতিতে অনেক অস্থিতিশীল উপাদান এনে দিয়েছে এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোর সামাজিক স্থিতিশীলতার ওপর কিছু প্রভাব বিস্তার করেছে ।

    প্রথমতইরাক যুদ্ধ এই অঞ্চলের মার্কিন-বিরোধী মনোভাবকে তীব্রতর করেছে , আরব জাতীয়তাবাদের উত্তাল জোয়ার বয়ে এনেছে , উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিস্তার উত্সাহিত করেছে এবং মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের নিরাপত্তা ও সামাজিক স্থিতিশীলতাকে বিপন্ন করে তুলেছে । যুক্তরাষ্ট্র দীঘদিন ধরে ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংঘর্ষে ইসরাইলের পক্ষে দাঁড়িয়ে এসেছে । এমনিতে আরব জাতি যুক্তরাষ্ট্রের এই আচরণের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছে । বুশ সরকার বানানো অজুহাতে ইরাকের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছে , তা এই অঞ্চলের জনগণের অসন্তোষকে আরো তীব্রতর করে তুলেছে । তাদের মতে আরব দেশগুলোর তেল সম্পদ লুণ্ঠন এবং ইসরাইলের নিরাপত্তা সুসংহত করার জন্যে বুশ এই আগ্রাসী যুদ্ধ বাধিয়েছেন । ইরাক যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আরব অঞ্চলের উগ্রপন্থীরা অহরহ আল কায়দায় যোগ দিচ্ছে । তাই ইরাক যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যের সহিংস তত্পরতা বেড়েই চলেছে । এটা এই অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের সামাজিক স্থিতিশীলতা তথা সেই দেশগুলোর সুসংবদ্ধতা দারুণভাবে বিপন্ন করে তুলেছে ।

    দ্বিতীয়ত ইরাক যুদ্ধ এই অঞ্চলের শক্তিগুলোর অনুপাতের পরিবর্তন ঘটিয়েছে , মধ্যপ্রাচ্যে নতুন অস্থিতিশীল উপাদান এবং নতুন ধর্মীয় সংঘাত ও জাতীয় দ্বন্দ্ব দেখা দেয়ার সম্ভাবনা এনে দিয়েছে ।

    তৃতীয়ত যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে জোরপুর্বক মার্কিন ধরণের গণতন্ত্র কায়েমের চেষ্টা করছে এবং তাকে দৃষ্টান্ত হিসেবে গ্রহণ করে মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোতে জনপ্রিয় করে তোলার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে । ফলে মধ্যপ্রাচ্যে দাংগাহাংগামা ও বিশৃংখলা দেখা দিয়েছে । বর্তমানে ইরাকে সহিংস ঘটনা অহরহ ঘটছে , সামাজিক শৃখলা অশান্ত অবস্থায় রয়েছে এবং পুনর্নির্মাণের কাজ মন্থর গতিতে চলছে । বিশ্লেষকরা বলেছেন , যুক্তরাষ্ট্র ইরাককে মধ্যপ্রাচ্যের গণতান্ত্রিক সংস্কারের একটি নিদর্শন হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে । তবে ইরাকে গণতন্ত্রের ভিত্তির অভাব রয়েছে । নির্বাচনের মাধ্যমে উদ্ভূত সরকার শিয়া ,কুর্দি ও সুন্নি সম্প্রদায়ের ভিত্তিতে গঠিত হয়েছে বলে রাজনৈতিক স্বার্থের কলহের ফলে ইরাকে সহিংস তত্পরতা তীব্র আকার ধারণ করেছে । যুক্তরাষ্ট্র কেবল সংক্ষিপ্তভাবে ইরাকে গণতন্ত্রের প্রণালীর প্রচলন করেছে । বাস্তবে যুক্তরাষ্ট্র ইরাককে গৃহ যুদ্ধের প্রান্তে ঠেলে দিয়েছে । মধ্যপ্রাচ্য দেশগুলোর চোখে এমন অবাস্তব গণতান্ত্রিক সংস্কার শুধু তাদের জন্যে বিপর্যয় এনে দেবে ।

    সংগে সংগে আরব বিশ্লষকরা বলেছেন , ইরাকে কয়েক লাখ মার্কিন সেনার উপস্থিতি ইরাক ও মধ্যপ্র্রাচ্যের পরিস্থিতির উন্নতি না ঘটার এক গুরুত্বপূণ উপাদান হয়ে দাঁড়িয়েছে ।