v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-09-15 09:17:48    
চীনে নতুন গ্রামাঞ্চল নির্মাণের উদ্যোগ

cri
    ৫০ বছর বয়সের ইয়াং সোইয়ে সিয়ান ও তার স্ত্রী লিউ ছিয়াং মেই হেইলুংচিয়াং প্রদেশের মোহো জেলার পেইচি গ্রামে বসবাস করেন । এই গ্রাম হেইলুংচিয়াং প্রদেশের তাসিংআন পর্বতের উত্তর দিকে অবস্থিত চীনের মূল ভুখন্ডের সবচেয়ে উত্তর দিকের গ্রাম । গ্রামটি রাশিয়ার আমুর অংগরাজ্যের ইগনায়েনইনো গ্রামের সংগে একটি নদীর দ্বারা বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে । গ্রামে ৬১৭টি পরিবার ও ১ হাজার ৩৩৬জন লোক আছে ।

    ইয়াং পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৬জন । তাদের ৭ একর জমি আছে । জমিতে তারা গম , আলু ,সোয়াবিন , বাধাকপি ও পেয়াজের চাষ করেন । তাছাড়া তারা ৪০টিরও বেশি মুরগী পালন করেন ।

    জমি চাষ করা ছাড়াও ইয়াং পরিবার শীতকালে হেইলুংচিয়াং নদীতে মাছ ধরেন এবং একটি মুদির দোকান খুলেছে । দোকানের ব্যবসা বেশ ভালো । গত কয়েক বছরে তারা দেখতে পেয়েছেন, অনেক পর্যটক মোহোতে ভ্রমণ করতে এসেছেন । ইয়াং সুইয়ে সিয়ান তার স্ত্রীর সংগে পরামর্শ করার পর তার পরিবারের চারটি ঘরকে খালি করে পারিবারিক মোটেল খুলেছেন । তাদের মোটেলে দশ বারোজনের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে ।

    লিউ ছিয়াং মেই বলেছেন , আমি শুনেছি , এখানে মোটর গাড়ির দৌঁড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে । সে সময় নিশ্চয় অনেক অতিথি আমাদের মোটেলে এসে থাকবেন । তাই ডিমগুলো আমি এক কিলোও বিক্রি করি নি ।

    রংবেরংয়ের ডজন খানেক জীপ এবং বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষা ও বিদেশী ভাষা বলা পর্যটকরা উত্তর মেরুতে অবস্থিত পেইচি গ্রামকে সরগরম করে তুলেছে । পর্যটনের ব্যস্ততম সময় ইয়াং সুইয়ে সিয়ানের মোটেলে অতিথিদের অভাব নেই । অনেকে তাদের মোটেলে থাকার জায়গা পান না । পেইচি গ্রামে তাদের মত আরো দশ বারো পরিবার এই রকম মোটেল খুলেছেন ।

    লিউ ছিয়াং মেই একটি সাদা রংয়ের কুকুর পালন করছেন । তিনি রোজ ভোরে ও সন্ধ্যায় দুবার কুকুরটি নিয়ে বেড়াতে যান । তিনি ব্যাখ্যা করে বলেছেন , কুকুর পালনের লক্ষ্য হচ্ছে নিজের শরীর চর্চা করা । কেন না , আমাদের এখানে চিকিত্সার ব্যবস্থা তেমন সুবিধাজনক নয় । গ্রামের ক্লিনিকে মাত্র ছোটখাটো অসুখ সারানো যায় । বড় অসুখ হলে দূরবর্তী হাসপাতালে যেতে হবে ।

    ইয়াং সুইয়ে সিয়ানের ছোট মেয়ে ইয়াং চিং চিং চীনের আইন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেছেন । তিনি এখন বাড়িতে দেশের একক আইন পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্যে প্রস্তুতি নিচ্ছেন ।

    ইয়াং সুইয়ে সিয়ান বলেছেন , আমার প্রত্যাশিত নতুন গ্রামে হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যালয় থাকা উচিত ।

    এবার অন্য একটি গ্রামের কাহিনী শুনুন ।

    গত বিশ বছরে চিন ছিয়াও গ্রামের বিরাট পরিবর্তন ঘটেছে । ১৯৮২ সালে গ্রামে বিদ্যুত ব্যবহার শুরু হয় । ১৯৮৪ সালের জাতীয় দিবস উপলক্ষে একজন গ্রামবাসী সেই গ্রামের প্রথম সাদা-কালো টেলিভিশন সেট কিনেছেন । ১৯৯৬ সালে এই গ্রামের প্রথম টেলিফোন বসানো হয় । ২০০৪ সালে এই গ্রামে সিমেন্ট দিয়ে তৈরি প্রথম রাস্তা নির্মিত হয় । গ্রামবাসীরা এখন স্টাফ বাসে করে দূরবর্তী জেলা শহরে যেতে পারছেন । ২০০৬ সাল থেকে কৃষকদের আর কৃষি কর দিতে হয় না ।

    চিন ছিয়াও গ্রাম হচ্ছে ই মেং পর্বতের পুরনো বিপ্লবী ঘাঁটি এলাকা - শান তুং প্রদেশের ই নান জেলার একটি সাধারণ গ্রাম । গ্রামবাসীরা যুগ যুগ ধরে জমিচাষ করে আসছেন । সম্প্রতি আমাদের সংবাদদাতা এই গ্রাম সফর করেছেন । চিন ছিয়াও গ্রামের পার্টি সম্পাদক চাং খুন শানের বয়স ৪৪ বছর । তিনি ও তার গ্রামবাসীরা টেলিভিশনের খবর থেকে জানতে পেরেছেন , সরকার নতুন সমাজতান্ত্রিক গ্রামাঞ্চল নির্মাণের কাজ জোরদার করার বিষয়টি উত্থাপন করেছে । তিনি বলেছেন , আমরা সবাই আশা করছি যে, সরকারের নীতি আমাদের গ্রামের জন্যে আরো বিরাট পরিবর্তন এনে দেবে ।

    তিনি আরো বলেছেন , গত কয়েক বছরে আমাদের গ্রামে বহু পরিবর্তন ঘটেছে । কৃষকদের জীবনযাত্রার মান উন্নত থেকে উন্নততর হচ্ছে । অবশ্য কিছু নতুন সমস্যাও দেখা দিয়েছে ।

    চিন ছিয়াও গ্রামের লোকসংখ্যা ৮ শ'রও বেশি । ১৯৯২ সাল থেকে কোনো কোনো গ্রামবাসী টাকা উপার্জনের জন্যে শহরে যাচ্ছেন । এখন এই গ্রামের প্রায় ২ শ যুবক-যুবতী বাইরে গেছেন । কেমন করে বৃদ্ধদের জীবন নিশ্চিত করা যায় এবং কি করে ছেলেমেয়েদের ভালো শিক্ষা দেয়া যায় , তা এই গ্রামের সামনে এক বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে ।

    শুধু জমিচাষ করে আর বেশি টাকা উপার্জন করা যাবে না বলে বহ তরুণ কৃষক শহরে কাজ করতে গেছেন । চীনের গ্রামাঞ্চলের সমস্যা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ, গণ রাজনৈতিক পরামর্শ পরিষদের জাতীয় কমিটির সদস্য লিন ই ফু বলেছেন , যদেও সরকার কৃষকদের কৃষি কর মওকুফ করার মাধ্যমে তাদের বোঝা বহুলাংশে কমিয়ে দিয়েছে , তবুও এই পদক্ষেপ কেবল কৃষকদের কাছ থেকে কম আদায় করছে , সরকারের কৃষকদের আরো বেশি দেয়া উচিত । কৃষকদের সত্যিকার উপার্জন বাড়ানোর জন্যে সরকারকে আরো নানা ধরণের সুবিধাজনক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে ।