v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-09-14 15:21:44    
ইরান কি ইরাকে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা পুনপ্রতিষ্ঠায় সহায়তা করতে পারে

cri
    ইরাকের প্রধানমন্ত্রী নুরি আল মালিকি গত বুধবার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর ইরানে তাঁর প্রথম সরকারী সফর শেষ করেছেন । জানা গেছে , ইরান সফরের সময় তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ ও সর্বোচ্চ নেতা সেইদ আলী খামেনেই সহ ইরানী নেতাদের কাছ থেকে ইরাক পুনর্নির্মাণে সমর্থন এবং ইরাকে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা পুনপ্রতিষ্ঠায় সব রকম সাহায্য দানের প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন । এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই যে , ইরান কি ইরাকে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা পুনপ্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সহায়তা করতে পারবে ?

    জনমত মনে করে যে , ইরান সত্যিকারভাবে তার প্রতিশ্রুতি পালন করতে পারলে তা নিসন্দেহে ইরাকে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা পুনপ্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে । প্রথমত ইরানে ও ইরাকে শিয়াপন্থী মুসলমানদের সংখ্যা বেশি । বর্তমানে শিয়াপন্থী পার্টি ইরাকে ক্ষমতাসীন রয়েছে । এক সময় তারা সাদ্দাম সরকারের দমন-নির্যাতনের শিকার হয়েছিল । সে সময় ইরান তাদের সমর্থন দিয়েছিল । সুতরাং ইরাকের পরিস্থিতিতে ইরান বিশেষ প্রভাব বিস্তার করতে পারে । অন্য দিকে ইরান ও ইরাকের মধ্যে রয়েছে দেড় হাজারেরও বেশি কিলোমিটারের সীমান্ত । ইরান সরকারের সাহায্য পেলে সীমান্ত দিয়ে ইরাকে সশস্ত্র ব্যক্তি, অস্ত্র ও টাকার প্রবেশ রোধ করা যাবে ।

   তবে জনমত মনে করে যে, ইরান তার প্রতিশ্রুতি পালন করতে পারবে কি না , কেউ ঠিক বলতে পারে না । ইরান খুব সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের দাঁড় করানো মধ্যপ্রচ্যের গণতন্ত্রের নমুনা - ইরাককে যুক্তরাষ্ট্রের সংগে দর কষাকষির এক খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করবে । যদি যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু সমস্যার কারণে ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় , তাহলে ইরান যুক্তরাষ্ট্রকে ইরাকে নিশ্চিন্তভাবে থাকতে দেবে না । ইরান সবসময় আশা করে এসেছে যে, বিদেশী বাহিনী ইরাক থেকে সরে যাবে ।

    তাছাড়া কিছু সংখ্যক আরব বিশ্লেষক বলেছেন , নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ইরান ইরাকের সংগে সহযোগিতা চালানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও ইরাকে স্থিতিশীলতা ও শৃংখলা পুনপ্রতিষ্ঠার নিশ্চয়তা বিধান করা যাবে না । কেন না ইরাকের সহিংস তত্পরতা যে প্রশমিত হচ্ছে না তার পেছনে অন্য কারণ রয়েছে ।

    বর্তমানে ইরাকের সহিংস তত্পরতা মোটামুটি দুই ভাগে বিভক্ত । একটি হচ্ছে মার্কিন বাহিনীর জবরদখলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তত্পরতা । সুন্নিপন্থী মার্কিন-বিরোধী জংগীরা ও আল কায়দার চালানো সহিংস তত্পরতা নিরীহ মানুসের প্রাণহানি ঘটালেও তার লক্ষ্য খুবই স্পষ্ট । তা হচ্ছে মার্কিন বাহিনীকে সম্পুর্ণভাবে ইরাক থেকে তাড়িয়ে দেয়া । ইরাকের কয়েকটি পার্টি বলপ্রয়োগের বিপক্ষে থাকলেও তারা মনে করে যে, ইরাকের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে মার্কিন হস্তক্ষেপ হচ্ছে ইরাকের অশান্ত পরিস্থিতির মূল কারণ । তাই বলা যায় , মার্কিন বাহিনী সরে না গেলে ইরাকে চিরকাল অশান্তি থাকবে ।

    ইরাকে বিদ্যমান অন্য সহিংস তত্পরতা সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্বের কারণে সংঘটিত হচ্ছে । পুনর্নির্মাণের প্রক্রিয়ায় ইরাকের শিয়া , সুন্নি ও কুর্দি- এই তিনটি প্রধান সম্প্রদায়ের কলহ অনবরত হচ্ছে । জাতীয় সংসদে এই তিনটি সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক পার্টিগুলো সশস্ত্র সংগঠন ও গণ মিলিশিয়া দলের সংগে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত রয়েছে । রাজনৈতিক স্বার্থের ক্ষেত্রে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা সরাসরি নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর প্রভাব ফেলেছে । গত সপ্তাহে শিয়াপন্থী ক্ষমতাসীন ইরাক সংহতি জোটের নেতা আজিজ আল হাকিম আনুষ্ঠানিকভাবে সংসদের কাছে দেয়া এক প্রস্তাবে দক্ষিণ ইরাকে শিয়া সম্প্রদায় অধ্যুষিত অঞ্চলে ফেডারেশন ব্যবস্থা চালু করার দাবি জানিয়েছেন যাতে স্বৈর শাসনের পুনপ্রতিষ্ঠা হতে না পারে । সংসদে এই প্রস্তাব নিয়ে তুমুল তর্ক বিতর্ক হয় । শেষ পর্যন্ত এই প্রস্তাবের ওপর আলোচনা আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মুলতবী রাখা হয়েছে । ইরানের সাহায্য পেলেও এমন জটিল দ্বন্দ্ব সমাধান করা যাবে না ।