ইউরোপ ও এশিয়ার চারটি দেশ সফরের জন্য চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও ৯ সেপ্টেম্বর পেইচিং ত্যাগ করবেন । সফরকালে প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও ফিনল্যান্ডের রাজধানীতে নবম চীন -ইউরোপ শীর্ষ সম্মেলন ও ষষ্ঠ এশিয়া ও ইউরোপ শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেবেন এবং ফিনল্যান্ড , বৃটেন ও জার্মানী সফর করবেন । এশিয়ায় প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনে অংশ নেবেন এবং তাজিকিস্তান সফর করবেন ।
চীন -ইউরোপ শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও মেধা- স্বত্ব ও বাণিজ্য বিরোধ সম্বন্ধে চীনের অবস্থান ব্যাখ্যা করবেন। এশিয়া - ইউরোপ শীর্ষ সম্মেলনে তিনি চীন ও ইউরোপের সহযোগিতা বাড়ানো সম্বন্ধে নতুন প্রস্তাব পেশ করবেন । এ দুটি শীর্ষ সম্মেলন সম্বন্ধে চীনে ই ইউর রাষ্ট্রদূত সারগে আবো বলেছেন , এশিয়া- ইউরোপ শীর্ষ সম্মেলন দুটি মহাদেশের মধ্যে অভিন্ন স্বার্থ জড়িত সমস্যা নিয়ে আলোচনার একটি ফোরাম । এই শীর্ষসম্মেলনে প্রায় ৪০জন শীর্ষ নেতা অংশ নেবেন । চীন -ইউরোপ শীর্ষ সম্মেলনে চীন ও ই ইউর সম্পর্ক পর্যালোচনা করা হবে এবং সহযোগিতার নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে ।
চীন- ইউরোপ শীর্ষ সম্মেলনে শক্তিসম্পদের নিরাপত্তা , আবহাওয়ার পরিবর্তন , মানবাধিকার , বাণিজ্য ও অর্থনীতি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে । এই সম্মেলনে শক্তি সম্পদের নিরাপত্তার ওপর বাস্তব অগ্রগতি হবে । তা ছাড়া বর্তমান শীর্ষ সম্মেলনের একটি প্রধান বিষয় হল চীন- ইউরোপ সহযোগিতার নতুন কাঠামো সংক্রান্তচুক্তি নিয়ে মতবিনিময় করা । এই চুক্তি ২১ বছর আগে স্বাক্ষরিত সহযোগিতা চুক্তির স্থলাভিষিক্ত হবে ।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে , গত দু বছর ধরে ই ইউ চীনের প্রথম বাণিজ্য অংশীদার হয়েছে । গত বছর চীন ও ই ইউর মধ্যে বাণিজ্য পরিমান ছিল ২ শ' বিলিয়ন মার্কিন ডলার , এটা ২০০৪ সালের চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি । দু পক্ষের আদান-প্রদান দ্রুত বাড়ছে । গত বছর দশ লাখ চীনা নাগরিক ইউরোপ সফর করেছেন আর ই ইউর দেশগুলোর ৩০ লাখ নাগরিক চীন সফর করেছেন । গত কয়েক বছরে চীন ও ই ইউর মধ্যে রোগ প্রতিরোধ , শক্তি , আবহাওয়া পরিবর্তন ইত্যাদি বিশ্বব্যাপী সমস্যায় সহযোগিতা বেড়েছে । চীন ও ই ইউর মধ্যে সার্বিক অংশীদারী সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ।
চীন ও ইউরোপের সম্পর্ক সুষ্ঠুভাবে বিকশিত হচ্ছে । তবে চীনের প্রতি অস্ত্রবিক্রি সম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞা ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে দু' পক্ষের মতবিরোধ আছে । চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইউরোপ বিভাগের প্রধান লি রুই ইয়ু বলেছেন , চীন যে অস্ত্রবিক্রি সম্বন্ধে ই ইউর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার দাবী জানিয়েছে , তা' চীনের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বৈষম্য দূর করার জন্য, অস্ত্র আমদানি বাড়ানোর জন্য নয় । ই ইউ পক্ষ একাধিকবার এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে ।
বর্তমানে চীন ও ইউরোপের সম্পর্ক ভালো । চীনের আন্তর্জাতিক সমস্যার ওপর বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন , এ বছরের প্রথম ছয় মাসে চীন ও ইউরোপের বাণিজ্য পরিমান ১২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে । দু' পক্ষের বাণিজ্য বিরোধ সমস্যা শীর্ষ সম্মেলনে আলোচনা করা হবে ।
প্রধানমন্ত্রী ওয়োন চিয়া পাও তাজিকিস্তানে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনে অংশ নেবেন । এই সম্মেলনে একটি যুক্ত বিবৃতি প্রকাশিত হবে , গত বছরের অক্টোবর মাসে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থারমস্কো প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনের পর অর্থনীতি ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে সহযোগিতার সারসংকলন করা হবে এবং পরবর্তীকালে অর্থনীতি , যানবাহন , শক্তি , টেলিযোগাযোগ , শিক্ষা ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে সহযোগিতা পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে ।
|