v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-09-06 14:06:26    
চীনের উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থা

cri

 **চীনে মোট কতটি বিশ্ববিদ্যালয় আছে? ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কত? বিদেশী ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কত? চীনে পড়াশুনা যদি করতে চাই, তাহলে চীনের কোন কলেজে ভর্তি হতে হবে? চীনের কলেজে ভর্তি হতে হলে কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে ?

 প্রশ্নকর্তাঃ বাংলাদেশের জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ীর ব্রাইট লাইফ ওয়ার্ল্ড রেডিও ফ্যান ক্লাবের সভাপতি মোঃ সুরুজ্জামান তরফদার, রাজশাহী জেলার দুর্গাপুরের পুরান তাহিরপুর গ্রামের লেকচারারস্ রেডিও লিসেনার্স ক্লাব এন্ড লাইব্রেরীর পরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলাম থান্দার, চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলার নাচোল বাজারের রেডিও সাথী ইন্টারন্যাশনাল ক্লাবের মোঃ মনিরুল ইসলাম মুন , চাঁদপুর জেলার মতলব রোডের ধনপর্দ্দি গ্রামের মোঃ নাসির খান, ঝিনাইদহ জেলার হরিপুরের সোনার বাংলা রেডিও ক্লাবের পরিচালক এ এইচ এম গোলাম রসুল এবং মোঃ রেজীও পারভেজ "রহিম", বগুড়া জেলার আদমদীঘির সারাক ইন্টারন্যাশনাল রেডিও লিসনার্স ক্লাবের প্রেসিডেন্ট এম আব্দুর রাজ্জাক

 উঃ বর্তমানে চীনে প্রায় ৩০০০ এরও বেশী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। এর মধ্যে ১৩০০ এরও বেশী হচ্ছে সাধারণ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ১২০০ এরও বেশি হচ্ছে বেসরকারী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাকীগুলো হচ্ছে প্রধানত: প্রাপ্তবয়স্কদের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। চীনের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষা অর্নাস ডিগ্রি, ব্যাচেলার্স ডিগ্রি, মাস্টারস ডিগ্রি ও ডক্টরেট ডিগ্রি এই কয়েকটি স্তরে বিভক্ত।

 বর্তমানে চীনের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পয়েন্ট ব্যবস্থা চালু আছে। সাধারণ অর্নাস ডিগ্রির শিক্ষা মেয়াদ তিন বছর। ব্যাচেলার্স ডিগ্রির শিক্ষা মেয়াদ চার বছর। মাস্টারস ডিগ্রি ও ডক্টরেট ডিগ্রির শিক্ষা মেয়াদ আরো দুই থেকে তিন বছর।

 চীনে নাম করা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছে ছিংহুয়াং বিশ্ববিদ্যালয়, পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয়, ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়, নানচিং বিশ্ববিদ্যালয়, চেনচিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাংহাই পরিবহণ বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি।

 গত কয়েক বছরে চীনের সরকারী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রছাত্রী ভর্তির সংখ্যা বিরাট মাত্রায় বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে চীনের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা ১৯৯৮ সালের তুলনায় কয়েকগুণ বেড়ে দু'কোটি হয়েছে। চীনের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি-হার দশ শতাংশেরও কম থেকে বেড়ে সতেরো শতাংশ হয়েছে।

 সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের অর্থনীতির দ্রুত বিকাশ ও আন্তর্জাতিক অবস্থানের ক্ষেত্র দিন দিন বৃদ্ধির ফলে ক্রমেই আরো বেশি বিদেশী যুবকযুবতী চীনে অধ্যয়ন করতে আসছেন। বর্তমানে চীনে বিদেশী ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা ৭৭ হাজার। এর মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি হচ্ছে নিজের খরচে চীনে অধ্যয়ন করতে আসা বিদেশী ছাত্রছাত্রী। তারা প্রধানত: দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভিয়েত্নাম, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, জার্মানি, রাশিয়া, নেপাল, ফ্রান্স, অষ্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া ইত্যাদি ১৭০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চল থেকে এসেছেন।

 চীনে বিদেশী ছাত্রছাত্রীরা প্রধানত: চীনাভাষা, চীনের সংস্কৃতি, চীনের ইতিহাস, চীনা চিকিত্সা ও চীনা ভেষজ ওষুধ , চীনের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ইত্যাদি বিষয়ে শিখছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আইন, অর্থনীতি, হিসাব এবং বিজ্ঞান ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদি বিষয় শিখতেও বিদেশী ছাত্রছাত্রীরা চীনে আসছেন।

 একটি অসম্পূর্ণ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নয়া চীনের জন্ম থেকে এ পর্যন্ত চীনে অধ্যয়ন করতে আসা বিদেশী ছাত্রছাত্রীদের মোট সংখ্যা ৬ লক্ষ ৩০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তারা এসেছেন বিশ্বের ১৭০টি দেশ ও অঞ্চল থেকে। তারা তাদের যার যার দেশের গঠন ও উন্নয়নের জন্য এবং চীনের সঙ্গে সেই সব দেশের আদানপ্রদান ও সহযোগিতাকে ত্বরান্বিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।

 চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হলে আনুষংগিক শিক্ষাগত যোগ্যতা ও নির্দিষ্টহান ভাষার মান থাকা দরকার। বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দাবি অনুসারে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীণ হতে হয়। ছাত্রছাত্রীরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে চীনের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। ভর্তি হলে খুব সহজেই চীনে আসার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা। বর্তমানে চীনের ৩০০টিরও বেশী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিদেশী ছাত্রছাত্রীদের গ্রহণ করে।

 চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের বেতন খুবই কম। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন বিষয় অনুসারে বেতনও আলাদা। বর্তমানে সাধারণত: বার্ষিক বেতন বিশ হাজার ইউয়ান রেনমিপির মতো।

 চীন তার উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদেশী ছাত্রছাত্রীদের আকর্ষণের উপর খুবই গুরুত্ব দেয় এবং এটিকে শিক্ষার আন্তর্জাতিক মর্যাদা উন্নত করা ও বিশ্বের প্রথম শ্রেণীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার একটি উপায় বলে গণ্য করে। আরো বেশি বিদেশী ছাত্রছাত্রীদের, বিশেষ করে স্নাতকোত্তর ছাত্রছাত্রীদের আকর্ষণের জন্য চীন অব্যাহতভাবে চীনে বিদেশী ছাত্রছাত্রীদের অধ্যয়ন করতে আসার পরিবেশ উন্নত করার ধারাবাহিক ব্যবস্থা নিতে থাকবে।

 অনেক বিদেশী ছাত্রছাত্রীর চীন আসার উদ্দেশ্য হান ভাষা শেখা। বর্তমানে চীনে বিদেশী ছাত্রছাত্রীদের ৬০ শতাংশেরও বেশি হানভাষা শিখছেন। চীনে হানভাষা শেখানোর ব্যবস্থা খুবই নমনীয়। যেমন রয়েছে কয়েক মাস ও কয়েক সপ্তাহের স্বল্পকালীণ কোর্স, তেমনি রয়েছে চার বছরের বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাচেলার্স ডিগ্রির শিক্ষা। চীন বিদেশী ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিভিন্ন ধরণের খুবই যর্থাথ হানভাষার পাঠ্যপুস্তক তৈরী করেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন মাত্রা অনুসারে ইংরেজী ও হানভাষা এই দুটি ভাষায় অথবা শুধু হানভাষায় পড়ায়।

 চীন ১৯৯২ সাল থেকে হানভাষার " টোফোল" বলে পরিচিত হানভাষার মান পরীক্ষা চালু করে। পরীক্ষার্থীদের হানভাষার মান যাচাইয়ের জন্যে পরীক্ষাটি বহু পর্যায়ের রয়েছে। বর্তমানে শুধু চীনে নয়, বিশ্বের ২৮টি দেশ ও অঞ্চলেও এই পরীক্ষার কয়েক ডজন পরীক্ষা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।