v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-08-31 19:06:48    
একটি পুরাতন নগর--লি য়ে

cri
    মধ্য চীনের হুনান প্রদেশের পশ্চিমাঞ্চল একটি দেখার মতো জায়গা। সেখানে অনেক ছোট-বড় পাহাড় আছে। এ সব পাহাড়ের ভীতরে লুকিয়ে আছে অজস্র নদনদী এবং বৈচিত্রময় নীতিরীতিসম্পন্ন পুরাতন নগর। লি য়ে নামে একটি পুরাতন নগর এদের অন্যতম।  

    লি য়ে পুরাতন নগর হুনান প্রদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। এই জায়গা হল ঠুচিয়া জাতির জন্মস্থান। ঠুচিয়া জাতির আঞ্চলিক ভাষায় ' লি য়ে 'মানে ভূমি চাষ করা। ২০০২ সালে এই ছোট নগরের মাটি থেকে ৩৬ হাজার অধিক ছিং রাজবংশের সংরক্ষিত ফাইল উদ্ধার করা হল। এসব দলিলপত্র খৃষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দী অথার্ত ছিং রাজবংশ আমলের সরকারের সংরক্ষিতদলিলপত্র। এসব দলিলপত্র আসলে বাঁশের তৈরী। এখানে উল্লেখ্য যে প্রচীরকাল বিশেষ করে চীনের ছিং রাজবংশে তখনকালীণ সরকারের দলিলপত্র বাঁশে লিপিবদ্ধ করা হয়। ছিং রাজবংশের এ সব দলিলপত্র মাটি থেকে উদ্ধার করা হওয়ার পর পরবর্তীকালের মানুষের চীনের ছিং রাজবংশের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করার জন্যে অধিক তথ্য যুগিয়ে দিয়েছে। তা ছাড়া, তখন থেকে লি য়ে পুরাতন নগর বিশ্বকে আকর্ষণ করে এসেছে। গাইড তিয়েনচিন আমাদের বলেছেন, এ সব দলিলপত্র থেকে বুঝা যায় যে, ১০ থেকে ৫০ হাজার বছর আগে এখানে মানুষ জীবনযাপন করতেন। যখন মাটি থেকে উদ্ধার করা হয় তখন ছিং রাজবংশের এ সব দলিলপত্রের রং কাল। কিন্তু পরিষ্কার হওয়ার পর বাঁশে যে সব শব্দ খোদাই করা হয় সে সব শব্দপড়তে না পারা সত্ত্বেও ষ্পষ্পভাবে দেখা যায় ।

    লি য়ে পুরাতন নগরে বতর্মানে যে সব সড়ক অক্ষতভাবে সংরক্ষিত রয়েছে সে সব সড়কের মোট দৈর্ঘ্য হল ২৫০০ মিটার। এসব সড়কে ৫০০টিও বেশী বাড়ীঘর নির্মিত হয়েছে। এসব বাড়ীঘরের ইতিহাস ছয় থেকে সাত শো বছরের। এ সব স্থাপত্যে ঠুচিয়া জাতির ঐতিহ্যিক কাঠের স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত হয়। লি য়ে পুরাতন নগরের পর্যটন বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা জনাব পং ডা সিয়েন বলেছেন, এখানে প্রত্যেক সড়কের স্ববৈশিষ্ট্য আর গল্প আছে। তিনি বলেছেন উয়েসিও নামক একটি সড়কের কথা ধরা যাক। ছিং রাজবংশ সময়কালে চীনের চিয়াংসি প্রদেশ থেকে অনেক ব্যবসায়ীএখানে ব্যবসা করতে আসতেন। তখন তাদের পক্ষে কোন থাকার জায়গা ছিল। সুতরাং এ সব ব্যবসায়ী এই সড়কে বসবাস করতেন। ব্যবসা সরগরম হয়ে উঠার সঙ্গে সঙ্গে এখানকার বাসিন্দার সংখ্যা আপনাআপনিও বাড়ে। আস্তে আস্তে এখানে একটি সড়কের রুপ ধরে। এই সড়কের বাসিন্দার প্রধানত চিয়াংসি থেকে এসেছেন। সুতরাং স্থানীয় লোকেরা এই সড়ককে চিয়াংসি সড়ক বলে ডাকেন।

    ইতিহাসে লি য়ে নগরকে ' ছোট নানচিন' ডাকতো । এখানকার প্রত্যেক সড়ক থেকে বন্দর পযর্ন্তএকটি সোজাসুজি রাস্তা আছে। সড়কের দু'পাশে কেবল ছোট-বড় দোকানপাটের সারি। অধিকাংশ দোকানপাট কাঠের তৈরী। দরজা আর জানালাগুলোতে নানা ধরনের সুক্ষ্ম ছবি খোদাই করা হয়। কয়েকটি অট্রালিকার পর পর আগুণ প্রতিরোধেরএকটি উচু দেয়াল আছে। মাডাম পাং হুয়ে ফান একজন পযর্টক। তিনি ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন। তিনি আবেগের সঙ্গে সংবাদদাতাকে বললেন, এখানে আসলে মানুষ আপনাআপনি বিশেষভাবে এক ধরনের পরিবেশ অনুভব করতে পারেন। মনে হয় মানুষ রাতারাতি অতীতে ফিরে গেছেন। কারণ এই সড়কের সব কিছু অতীতের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন।

    এ সব পুরাতন সড়ক পার হওয়ার পর য়োসিয়ে নামক একটি নদী লোকেদের নজরে পড়ে। য়োসিয়ে নদীর আরেকটা নাম হল বেই নদী। নদীর জলসীমা প্রশান্ত। নদীর দু' পারের উচু উচু পাহাড় দাড়িয়ে আছে। এই শান্ত নদীতে মাঝেমাঝে জেলে নৌকা দেখা যায়। চীনের হুপেই থেকে আসা পযর্টক মিস উয়ে সিও মিন বলেছেন, এখানে নৌকাবিহার সত্যই একটি মজার ব্যাপার। তিনি বলেছেন, নৌকাবিহারের অনুভতি বিশিষ্ট। আমি সন্ধার পর নৌকা বাইচ করতে গিয়েছি। তখন চাঁদ আকাশে উঠেছে। নদীর দু'পারের পাহাড়ে পুরাতন বাড়ীঘরগুলো স্পষ্টভাবে দেখা যায়। তা ছাড়া, নদীর তীরে লোকেদের হাঁটাহাঁটি দেখতে পাওয়া যায়। য়োসিয়ে নদীর পানি স্বচ্ছ। দেখতে খুব ভাল লাগে।

    লিয়ে পুরাতন নগর পরিদর্শন করতে গেলে ওখানকার স্থানীয় খাবার না খেয়ে একটি বিরাট দু:খ হবে। এই নগরের অনেক খাবার সারা চিয়াংসি প্রদেশে বিখ্যাত। বিশেষ করে এখানকার চালের তৈরী পিঠা খুব নাম-করা, খেতেও খুব সুস্বাদু। যারা লিয়ে নগর পরির্দশন করতে আসেন তারা সাধারণত এ সব স্থানীয় খাবার আসাদন করতে পছন্দ করেন। চীনের ছনছিন থেকে আসা পযর্টক মিস জেন বলেছেন, চিয়াংসি প্রদেশের পশ্চিমাংশের এই পুরাতন নগর আমার মনে গভীর ছাপ রেখেছে। এখানকার স্থানীয় খাবার বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বিভিন্ন জায়গার স্থানীয় খাবার আসাদন করা আমার শখ। সুতরাং যেখানে ভ্রমণ করি আমি অবশ্যই সেখানকার স্থানীয় খাবার আসাদন করি।