v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-08-31 18:51:49    
আনানের লেবানন ও ইস্রাইল সফর ফলহীন

cri

 জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনান সম্প্রতি পরপর লেবানন আর ইস্রাইল সফর করেছেন। তিনি লেবাননের হিজবুল্লাহ ও ইস্রাইলের মধ্যে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়েছেন। কিন্তু লেবানন ও ইস্রাইলের বিরোধ জটিল। আনানের লেবানন ও ইস্রাইল সফরে কোন সাফল্য অর্জিত হয় নি।

 লেবানন সীমান্ত পার হয়ে হিজবুল্লাহ ইস্রাইলী বাহিনীর ফাঁড়ি আক্রমণ করে দু'জন ইস্রাইলী সৈন্যকে অপহরণ করেছে বলে এবারের লেবানন-ইস্রাইল সংঘর্ষ ঘটেছে। ইস্রাইল অপহরণকৃত সৈন্যদের উদ্ধার করার ওজুহাতে লেবাননের ওপর টানা ত্রিশ দিনের সামরিক হামলা চালিয়েছে। কিন্তু অপহরণকৃত সৈন্যদের উদ্ধার করতে পারে নি। ফলে যুদ্ধবন্দী সমস্যা লেবানন ও ইস্রাইলের সম্পর্কের ক্ষেত্রে বড় বাধায় পরিণত হয়েছে। ২৯ আগস্ট আনান ইস্রাইলে পৌঁছানোর পর প্রথমে অপহরণকৃত সৈন্যদের আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং বলেছেন যে, লেবাননের হিজবুল্লাহকে বিনা শর্তে ইস্রাইলী সৈন্যদের মুক্তি দিতে হবে। তবে আনান ইস্রাইল ত্যাগ করার পর পরই হিজবুল্লাহর সদস্য , লেবাননের পানি ও বিদ্যুত্ মন্ত্রী মোহাম্মদ ফনেইশ বলেছেন, হিজবুল্লাহ বিনা শর্তে অপহরণকৃত ইস্রাইলী সৈন্যদের মুক্তি দিবে না। লেবানন ও ইস্রাইলের সঙ্গে যুদ্ধবন্দী বিনিময় করা হচ্ছে ইস্রাইলী দু'সেনার মুক্তি পাওয়ার এক মাত্র উপায়। তিনি বলেছেন, হিজবুল্লাহর দু'জন ইস্রাইলী সৈন্যকে গ্রেফতার করার উদ্দেশ্য হচ্ছে পরোক্ষ আলোচনার মাধ্যমে লেবানন ও ইস্রাইলের যুদ্ধবন্দী বিনিময় বাস্তবায়ন করা।

 লেবাননের ওপর ইস্রাইলের অবরোধ অবসান করার তাগিদ দেয়া হচ্ছে আনানের এবারের লেবানন ও ইস্রাইর সফরের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য। লেবানন সফরকালে আনান লেবাননের নেতৃবৃন্দকে বলেছেন, লেবানন ও ইস্রাইলের যুদ্ধবিরতির পর অব্যাহতভাবে লেবাননের বিরুদ্ধে ইস্রাইলের সামরিক অবরোধ হচ্ছে একটি লজ্জার ব্যাপার। তবে আনানের আহ্বানের প্রতি ইস্রাইলী নেতাদের প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত শীতল। আনানের সঙ্গে সাক্ষাত্ করার পর ইস্রাইলী প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট বলেছেন, কেবল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের লেবানন ও ইস্রাইল সংঘর্ষ সংক্রান্ত ১৭০১ নং সিদ্ধান্ত কার্যকর করার পর লেবাননের বিরুদ্ধে নৌ এবং আকাশ অবরোধ বন্ধ করা যায়। ইস্রাইল লেবাননকে অবরোধ করার ওজুহাত হচ্ছে হিজবুল্লাহকে বিদেশ থেকে অস্ত্র পাওয়ায় বাধা দেয়া। ইস্রাইল প্রস্তাব করেছে , জাতিসংঘের অস্থায়ী বাহিনী কেবল লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে মোতায়েন করলে হবে না, বরং লেবানন আর সিরিয়ার সীমান্ত এলাকায় মোতায়ন করা দরকার। যাতে হিজবুল্লাহর অস্ত্র পরিবহণের পথ বন্ধ করা যায়। ইস্রাইলের প্রস্তাব নিঃসন্দেহে আনানকে একটি জটিল সমস্যায় ফেলেছে। কারণ লেবানন আর সিরিয়ার মধ্যে কোন সংঘর্ষ নেই। এই দু'দেশের সীমান্ত এলাকায় জাতিসংঘের অস্থায়ী বাহিনী মোতায়েন করার যথার্থ ওজুহাত নেই। ফলে লেবানন আর সিরিয়া উভয়েই রাজি হবে না।

 আনান আশা করেন, অল্প দিনের মধ্যে ইস্রাইল লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে সরে যাবে। কিন্তু ইস্রাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আমির পেরেজ বলেছেন, কেবল জাতিসংঘের উপযুক্ত সংখ্যক অস্থায়ী বাহিনী সে অঞ্চলে প্রবেশের পর ইস্রাইল নিজেদের প্রত্যাহার করতে পারে। কিন্তু উপযুক্ত সংখ্যক এর আসল অর্থ কি, পেরেজ স্পষ্টভাবে বলেন নি।

 লেবানন ও ইস্রাইল সফরকালে আনান সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের উদ্দেশ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে লেবানন ও ইস্রাইলের স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু আরব দেশগুলো আর ইস্রাইলের সংঘর্ষের পটভূমিতে লেবানন ও ইস্রাইলের শান্তি বাস্তবায়ন সহজ কথা নয়। ইস্রাইলের প্রধানমন্ত্রী ওলমার্ট ৩০ আগস্ট বলেছেন, তিনি আশা করেন, জাতিসংঘের যুদ্ধবিরতি চুক্তি ইস্রাইল লেবাননের মধ্যে নতুন সম্পর্ক স্থাপনের জন্য ভিত্তি স্থাপন করবে। তিনি প্রয়োজনীয় সময় পর্যন্ত লেবানন সরকারের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ করা ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন। কিন্তু লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সিনিওরা বলেন, আরব দেশগুলোর শান্তি প্রস্থাব অনুযায়ী আরব দেশগুলো ইস্রাইলের সঙ্গে সার্বিক ও ন্যায়সংগত শান্তি বাস্তবায়নের আগে লেবানন ইস্রাইলের সঙ্গে কোন শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করবে না। লেবানন হবে ইস্রাইলের সঙ্গে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করা শেষ আরব দেশ।

 জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের লেবানন ও ইস্রাইলের সংঘর্ষ সংক্রান্ত ১৭০১ নং সিদ্ধন্ত লেবানন ও ইস্রাইলের যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন ছাড়াও দু'দেমের মধ্যে আরো বহু সমস্যা রয়েছে। এসব মৌলিক সমস্যা এখনো অমীমাংসিত রয়েছে।