v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-08-28 19:32:42    
ইরান-মার্কিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা তীব্র হয়ে উঠছে

cri
    জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ১৬৯৬ নং প্রস্তাবে ইরানকে ৩১ আগস্টের আগে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করার অনুরোধ করা হয়েছে । এই সময়সীমা ঘনিয়ে আসায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে বিরোধ দিন দিন তীব্র হয়ে উঠছে ।

    ২৬ আগস্ট ইরানের একটি হেভি ওয়াটার প্রক্রিয়াকরণ কারখানা চালু হয়েছে । এর পর ২৭ আগস্ট অনুষ্ঠিত সামরিক মহড়ায় ইরানের নৌ বাহিনী আবারও সাফল্যের সঙ্গে যুদ্ধ জাহাজ বিধ্বংসী একটি দূরপাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে । যুক্তরাষ্ট্র বলেছে যে , যদি ৩১ আগস্ট আগে ইরান ইউরেনিয়ামের সমৃদ্ধকরণ বন্ধ না করে , তাহলে যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে তার ওপর শাস্তি আরোপ করার পথ অন্বেষণ করবে । এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে ইরানের ওপর শাস্তি প্রয়োগের জন্য যুক্তরাষ্ট্র একটি ' স্বাধীন জোট' গঠন করবে ।

    খবরে প্রকাশ , বর্তমানে নতুন চালু হওয়া ইরানের হেভি ওয়াটার প্রক্রিয়াকরণ কারখানায় বছরে ১৬ টন হেভি ওয়াটার উত্পন্ন করা যাবে । এতে আগের উত্পাদন পরিমাণের চেয়ে দ্বিগুণ হয়েছে । ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমেদি নেজাদ এই কারখানা চালু উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বলেছেন , ইরানী জনগণ বল প্রয়োগ করে নিজেদের পরমাণু প্রযুক্তি উন্নয়নের অধিকার রক্ষা করবে ।

    যেহেতু হেভি ওয়াটার রি-এক্টরের ব্যবহৃত জ্বালানী থেকে প্লুটোনিয়াম পাওয়া যাবে , সেহেতু এটা ইরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরীতে আরেক ধাপ অগ্রগতি পথ হয়ে দাঁড়াবে বলে পাশ্চাত্ত্য দেশগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করছে । কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদের ১৬৯৬ নং প্রস্তাবে ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের সঙ্গে সম্পর্কিত যাবতীয় তত্পরতা সাময়িকভাবে মুলতবী রাখার অনুরোধ করা হয়েছে । হেভি ওয়াটার প্রক্রিয়াকরণ কারখানা বা রি-এক্টর নির্মাণ কাজ বন্ধ করার অনুরোধ হয় নি। তা ছাড়া ইরান ৩১ আগস্টের প্রাক্কালেই হেভি ওয়াটার প্রক্রিয়াকরণ কারখানা চালু হওয়ার কথা ঘোষণা করেছে । সুতরাং ইরান যেমন কৌশলগতভাবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ সংক্রান্ত স্পর্শকাতর সমস্যা এড়িয়েছে , তেমনি তাতে পরমাণু গবেষণায় ইরানের দৃঢ়সংকল্পও তুলে ধরা হয়েছে । ইউরোপের সংবাদ মাধ্যমের মতে এটা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর একটি প্ররোচনা ।

    লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে , ইরান হেভি ওয়াটার প্রক্রিয়াকরণ কারখানার ব্যাপারে ব্যাপকভাবে প্রচার করার পাশাপাশি এখনো শান্তিপূর্ণ উপায়ে পরমাণু প্রযুক্তি ব্যবহার ও আলোচনার মাধ্যমে পরমাণু সমস্যা সমাধানের পতাকা ঊর্ধ্বে তুলে ধরছে । যাতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমবেদনা ও সর্মথন পাওয়া যায় এবং নিরাপত্তা পরিষদের ভেতরে নানা রকম বিরোধ কাজে লাগানো যায় ।

    এর সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে আগামী পদক্ষেপ গ্রহণের কার্যক্রম প্রণয়ন করছে । সর্বপ্রথমে যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা পরিষদের 'চরমপত্রের' সময়সীমা শেষ হওয়ার পর ইরানের উপর শাস্তি প্রয়োগ সংক্রান্ত একটি খসড়া প্রস্তাব দাখিল করবে । ২৬ আগস্ট মার্কিন 'লস এঞ্জেলেস' পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে , মার্কিন কর্মকর্তারা লক্ষ্য করেছেন যে , নিরাপত্তা পরিষদে ইরানের ওপর শাস্তি আরোপের জন্য যথাশীঘ্র একটি নতুন প্রস্তাব গৃহিত হওয়া খুব কঠিন। সুতরাং যুক্তরাষ্ট্র প্রয়োজন হলে ইরানের ওপর শাস্তি প্রয়োগের জন্য একটি 'স্বাধীন জোট' গঠনের কথা বিবেচনা করছে এবং এই জোটে যোগ দেয়ার জন্য ই ইউ ও জাপানকে উত্সাহ দিচ্ছে । যুক্তরাষ্ট্র মনে করে যে , যেহেতু ইরানের বৈদেশিক বাণিজ্যে পশ্চিমা মুদ্রা ব্যবহার করা হচ্ছে , সেহেতু তার ওপর যুক্তরাষ্ট্র , ই ইউ আর জাপান শাস্তি আরোপ করলেই কেবল ইরানের অর্থনীতি গুরুতরভাবে ভেঙ্গে পড়বে । যুক্তরাষ্ট্র ইরানের অস্ত্র বাণিজ্য নিয়ন্ত্রনের জন্য এই সব মিত্ররাষ্ট্রকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করছে ।

    ইরান ২৭ আগস্ট ঘোষণা করেছে যে , ইরানের সঙ্গে পরমাণু সমস্যা ও মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিব কফি আনান ২রা সেপ্টেম্বর ইরান সফর করবেন । যেহেতু নিরাপত্তা পরিষদ শুধু ইরানের পরমাণু সমস্যা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার মহাসচিবের সর্বশেষ রিপোর্ট শুনার পরই আগামী সিদ্ধান্ত নেবে , সেহেতু আনানের এবারকার ইরান সফরের আগে ও পরে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যেকার বিরোধ যে কিভাবে চলবে , তা বিশ্ব জনমতকে আকর্ষণ করছে ।