সম্প্রতিচীনের ৩০ কোটিরও বেশি ছেলেমেয়ে সম্পর্কিত " অল্পবয়স্কদের রক্ষা আইনের" খসড়া প্রথমবারের মতো চীনের বিধান সংস্থা--জাতীয় গণ কংগ্রেসের স্ট্যান্ডিং কমিটির কাছে দাখিল করা হয়েছে । ১৪ বছর কার্যকর থাকার পর এই আইন প্রথমবার সংশোধন করা হলো। সংশোধিত খসড়া আইনে অল্পবয়স্কদের রক্ষাক্ষেত্রে সরকারের অর্থবিনিয়োগ, স্কুলের নিরাপত্তা , সামাজিক অংশ এবং আইনগত সাহায্যের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে । এতে আন্তর্জাতিক আইনগত দলিলে নির্ধারিত " শিশুদের স্বার্থ পুরোভাগে রাখতে হবে " ও " শিশুদের স্বার্থকে সর্বাধিকভাবে রক্ষা"--এর মৌলিক নীতি প্রতিফলিত হয়েছে এবং শিশুদের শিক্ষাদান সম্পর্কে চীনাদের কিছু ঐতিহ্যিক ধারণা ও পদ্ধতি পরিবর্তিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে ।
১৯৯২ সালে চালু হওয়া " অল্পবয়স্কদের রক্ষা আইন"কে অল্পবয়স্কদের রক্ষাক্ষেত্রের ক্ষুদ্র সংবিধান বলে আখ্যায়িত করা হয় । কিন্তু চীনের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ ক্ষেত্রেএকের পর এক সমস্যা দেখা দিয়েছে । তাই বর্তমান আইনের ভিত্তিতে খসড়া আইনটিতে প্রায় ৬০টি নতুন ধারা সংযোজন করা হয়েছে । এ সম্পর্কেচীনের জাতীয় গণ কংগ্রেসের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক আইন কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান চু মিংশান বলেছেন, আইন পালনকারীদের দায়িত্বের অস্পষ্টতা, অল্পবয়স্কদের রক্ষা ব্যবস্থার অপরিপূর্ণতা , অভিভাবকদের দায়িত্বহীনতা বা ভুল দায়িত্ব পালন , স্কুলের নিরাপত্তা, গৃহহীন শিশু, ভিক্ষুকশিশু, মাবিহীন শিশু সহ অসহায় অল্পবয়স্কদের সাহায্যদান , অল্পবয়স্কদের বড় হওয়ার সামাজিক পরিবেশ উন্নত করা , অল্পবয়স্কদের আইন লংঘন বা অপরাধসাধন প্রতিরোধ করা প্রভৃতি সমস্যা সবই খসড়া আইনের মাধ্যমে সমাধান করা সাপেক্ষ । এর মধ্যে স্কুলের নিরাপত্তা সমস্যা সবচেয়ে বেশি অভিভাবকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ।
আইনটি সংশোধন করার ফলে শিক্ষাদানক্ষেত্রেচীনাদের ঐতিহ্যিকধারণা ও পদ্ধতি পরিবর্তন হবে । যেমন ছেলেমেয়েদের পারিবারিক জীবন ও সামাজিক জীবনে যোগদানের অধিকার থাকবে এবং তাদের জীবনে প্রভাবফেলবে এমন সব বিষয় সম্পর্কে নিজের মতামত প্রকাশের অধিকার থাকবে ।
সংশোধিত খসড়া আইনে নির্ধারিত হয়েছে যে , বিশেষ কারণ না থাকায় ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে লেখাপড়ার সময়সীমা বাড়াতে হবে না । অল্পবয়স্কদের ঘুম, বিনোদন , ব্যায়াম ও শরীরচর্চার সময় নিশ্চিত করতে হবে ।
তাছাড়া চীনের অনেক অঞ্চল বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলেরছেলেমেয়েদের শিক্ষাদানের উপর বেশি গুরুত্ব দেয়া হয় নি । এক পরিসংখ্যানে জানা যায় , চীনের ১৫ কোটি কৃষক মজুর হিসেবে শহরে যান । তাদের মধ্যে ৬০ শতাংশ লোক সন্তানকে গ্রামে রেখে যান । এ কারণে সংশোধিত খসড়া আইনে নির্ধারিত হয়েছে যে , যে বাবা-মা বাইরে উপার্জন করার কারণে নিজের দায়িত্ব পালন করতে পারেন না তাদেরকে আইন অনুযায়ী অন্যসামর্থ্যপূর্ণ কোন বয়স্ক ব্যক্তিকে দায়িত্ব পালন করার অনুরোধ জানাতে হবে ।
চীন " জাতিসংঘ শিশু অধিকার চুক্তি" সহ আন্তর্জাতিক আইনগত দলিল স্বাক্ষর করেছে । বিধান সংস্থা বলেছে , সংশোধিত খসড়া আইনে উক্ত আন্তর্জাতিক আইনগত দলিলের মৌলিক নীতি প্রতিফলিত হয়েছে ।
মিঃ চু মিংশান বলেছেন , খসড়া আইন অনুযায়ী অল্পবয়স্কদের রক্ষার কাজকে জাতীয় অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়নের কার্যক্রমেঅন্তর্ভূক্ত করতে হবে , গৃহহীন শিশুদের উদ্ধার ও রক্ষা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে । দুষ্ট অল্পবয়স্কদের শিক্ষাদানের কাজ জোরদার ও উন্নত করতে হবে । ব্যবসায়ী নেট-কফির ব্যবস্থাপনা জোরদার করে সবুজ নেট-কফি প্রতিষ্ঠা করতে হবে ।
এর মধ্যে নেট-কফি ও নেটওয়ার্ক সম্পর্কে নিয়ম বেশি আকর্ষণীয় । খসড়া আইনে অল্পবয়স্কদের অশ্লীল ও সহিংস নেট-তথ্য ব্যবহারকেনিষিদ্ধ করা হয়েছে । নেট-কফি ও বারে অল্পবয়স্কদের প্রবেশও নিষিদ্ধ করা হয়েছে ।
|