v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-08-25 19:09:49    
জাপানের  সুবিধাজনক পাবলিক পরিবহন ব্যবস্থা(ছবি)

cri

 জাপান একটি লম্বা আকৃতির সংকীর্ণ দ্বীপ দেশ। ১২.৭ কোটি লোক ৩ লাখ ৭৮ হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তনের স্থল ভূভাগে বসবাস করেন। অথচ এর মধ্যে ৮০ শতাংশ লোক শহরাঞ্চলে থাকেন। ফলে জাপানের জনসংখ্যার ঘনত্ব খুব বেশী। কিন্তু জাপানে তেমন একটা ট্র্যাফিক জ্যাম দেখা যায় না। এর মূল কারণ হচ্ছে বহু বছর ধরে জাপান শহরাঞ্চলের পাবলিক পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নের উপর গুরুত্ব আরোপ করে আসছে। আজকের অনুষ্ঠানে আমাদের বেতার সংবাদদাতা ওয়াং ঈং ঈং আপনাদের জাপানের সুবিধাজনক পাবলিক পরিবহন ব্যবস্থা দেখতে নিয়ে যাবেন।

 "শ্রোতাবন্ধুরা, এখন আমি টোকিওর বৃহত্তম সিনজুকু স্টেশনে আছি। এই স্টেশনটি ১৮৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে ১১টি পাবলিক বাস লাইন আর ৩৩টি প্ল্যাটফর্ম আছে। এটা হচ্ছে জাপানের বৃহত্তম স্টেশন। জানা গেছে, প্রতিদিন এখান থেকে যাতায়াতকারী যাত্রীর সংখ্যা ৩৪ লাখ ৭০ হাজার। এই চিত্র কেবল জাপানের নয়, বরং তা সারা বিশ্বের গড়পড়তা সবচেয়ে ব্যস্তত্তম স্টেশনও বটে। কিন্তু যাত্রীদের সংখ্যা বেশি হলেও এখানকার সকল কিছু পরিচালনার কাজ অতি শুশৃঙ্খলভাবে চলছে। "

 ভূ-সম্পদ ও পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সার্বিক নীতি ব্যুরোর পরিবহন পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তা কাসানো দায় এই সংবাদদাতাকে টোকিও এর পাবলিক পরিবহনের মৌলিক অবস্থা সম্পর্কে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ২০০৬ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত টোকিওতে নতুন প্রধান লাইন ছাড়া সড়কপথে এবং ভূগর্ভে আরো ১০১টি ট্রামলাইন আছে। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে শহুরে বৈদ্যুতিক রেলপথ আর পাতাল রেল। শহুরে বৈদ্যুতিক রেলপথের মধ্যে অন্তভূক্ত রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত রেলপথ আর ব্যক্তিমালিকানাধীন রেলপথ। রাষ্ট্রায়ত্ত রেলপথের রয়েছে ১৭টি লাইন। ১৩টি ব্যক্তিমালিকানাধীন কোম্পানি ৩৩টি রেলপথ লাইন পরিচালনা করে। টোকিও-এর পাতাল রেলের দৈর্ঘ্য ৩৩২.৬ কিলোমিটার। তিনটি কোম্পানি পাতাল রেল পরিচালনা করে। তাছাড়া আরো রয়েছে চুম্বকচালিত অর্থাত্ ম্যাগনেট রেলপথ , স্থল বৈদ্যুতিক গাড়ি, পাবলিক বাস এবং ট্যাক্সি ইত্যাদি। টোকিও-এর গোটা পরিবহন ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতি বছর প্রায় ১৫.৮৫ বিলিয়ান লোক যাতায়াত করে।

 কাসানো দায় বলেছেন, জাপানের অধিকাংশ ট্রামলাইন রাষ্ট্রায়ত্ত। কিছু কিছু ব্যক্তিমালিকানাধীন হলেও তারা সরকারের কাছ থেকে ভর্তুকি পায়। ফলে জাপানের ট্রামলাইন পরিবহন ব্যবস্থা লাভজনক। তিনি বলেছেন, "জাপানের বিভিন্ন কোম্পানি স্বাধীনভাবে রেলপথ চালু করে। এমন কি রাষ্ট্রায়ত্ত রেলপথও বেসরকারী হয়েছে। কিন্তু বলা যায়, সকল কোম্পানিই লাভজনক। পৃথিবীতে এমন অবস্থা খুবই কম। "

 টোকিও-এর ট্রামলাইন পরিবহন কেন এতো উন্নত ? রেলপথ ব্যুরোর রেলপথ পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তা সাওয়াই টোশি বলেছেন, "টোকিও এর ট্রামলাইন পরিবহন ১৯৫৫ সালের পর থেকে বিকশিত হয়েছে। তখন থেকেই জাপান শিল্পের দ্রুত উন্নয়নের যুগে প্রবেশ করেছে। শহরায়ন দ্রুত উন্নত হয়েছে। বিপুল পরিমান স্থানীয় লোক শহরে চলে এসেছেন। তাদের যাতায়াতের চাহিদা মেটানোর জন্য ট্রামলাইন পরিবহন উন্নয়নকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। এর ভিত্তিতে আরো সুবিধাজনকভাবে ট্রামলাইন রেলপথ ব্যবহারের জন্য যাত্রীরা আরো কিছু নির্দিষ্ট দাবি জানিয়েছেন । যেমন রেলগাড়ি পরিবর্তনের সুষ্ঠু-সুবিধা ও টিকিট ব্যাপকভাবে চালু করা দরকার ইত্যাদি। এর ফলে জাপানের বর্তমান বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। বিভিন্ন কোম্পানির লাইন পরিবর্তনের জন্য একই স্টেশনে করা যায়। এটা যাত্রীদের জন্য খুব সুবিধাজনক হয়েছে।"

 কিন্তু জাপানে উন্নত মানের পাবলিক ট্রামলাইন পরিবহন কেবল বড় বড় শহরে আছে। অন্য জায়গায় পাবলিক বাসের চলাচলের হার অপেক্ষাকৃত বেশী। গোটা জাপানের পাবলিক পরিবহন পিছিয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দিয়েছে। জাপানের সার্বিক নীতি ব্যুরোর পরিবহন পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তা সাকামোটো জুনিছিরো মনে করেন, পাবলিক পরিবহন উন্নয়ন অত্যন্ত জরুরী হয়ে পরেছে।

 গত বছরের মার্চ মাসে জাপানের ভূ-সম্পদ পরিবহন মন্ত্রণালয় "গণ পরিবহন প্রয়োগ ত্বরান্বিত সমিতি" প্রতিষ্ঠা করেছে, যাতে গণ পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা যায়।